নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২১ অগাস্ট, ২০১৮
সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তাঁর মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওপর কোনো কারণে ক্ষুব্ধ ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বারবার নালিশ দিচ্ছিলেন তিনি। বলছিলেন, ওই কর্মকর্তার নানা খারাপ গুণ আছে, তাঁকে কোনোভাবেই ওই মন্ত্রণালয়ে রাখা যায় না। এমন নানা অভিযোগ বারবারই প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিচ্ছিলেন মন্ত্রী। প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। দ্বিতীয়বার অভিযোগের দিনও প্রধানমন্ত্রী ওই মন্ত্রীকে কিছু বলেননি। তৃতীয় বার মন্ত্রী যখন ওই ব্যক্তি সম্পর্কে অভিযোগ করলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, মন্ত্রীর ধারণা ভুল ওই কর্মকর্তা খুবই সাদাসিধে জীবন যাপনে অভ্যস্ত, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সত্য নয়। জানা গেল, মন্ত্রীর অভিযোগ শুনেই প্রধানমন্ত্রী কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি ওই কর্মকর্তা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। জানতে পারেন ওই কর্মকর্তার প্রকৃত অবস্থা। সাদাসিধে জীবনযাপনের ওই কর্মকর্তার ব্যাপারে মন্ত্রীর অভিযোগ ভুল তা খোঁজ-খবরেই জানা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনই। মন্ত্রী ও অন্যান্যদের চেয়ে অনেক বেশি খোঁজ-খবর রাখেন। অনেক বিষয়েই তিনি খোঁজ রাখেন। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও কোটা সংস্কারে আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অনেকেরই ঈদের আগেই জামিনের মুক্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে বিষয়টি আরেকবার প্রমাণিত হলো।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় সংঘাত, ভাঙচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত ৫১টি মামলায় ৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে ৫২ জনই শিক্ষার্থী। এর আগে কোটা আন্দোলনের পর বিভিন্ন সময়ে আটক হয়েছিলেন কিছু শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরেই শিক্ষার্থীদের জামিন মঞ্জুরের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫২ শিক্ষার্থীর ৪৫ জনেরই জামিন হয়েছে। আর নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকালে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার ২২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জনেরই জামিন হয়েছে। একজনের জামিন হয়নি সুষ্ঠু ভাবে জামিন আবেদন না করায়। আদালত সূত্রে জানা গেছে কোটা আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাশেদসহ অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই জামিন হয়েছে। কয়েকজনের জামিন হয়নি সুষ্ঠুভাবে আবেদন না করায়। এমনকি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নওশাবা আহমেদেরও জামিন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
গত কয়েকদিন ধরেই কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফটকে দেখা যায় অভূতপূর্ব দৃশ্য। শিক্ষার্থীদের জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পরপরই তাঁদের কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কারাগার থেকে একে একে বেরিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। মা-বাবা স্বজনরা কারাগারের সামনে অপেক্ষমাণ। সন্তানকে ফিরে পেয়ে স্বজনদের চোখ অশ্রুসজল।
ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। যোগাযোগ করেছেন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে। পরে এ নিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যত অন্যায়ই করুক, মা-বাবার সঙ্গে ঈদটা যেন করতে পারে। মানবিক কারণেই তাঁদের যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশেরই বাস্তবায়ন দেখা গেল গত কয়েকদিনে।
গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর ঈদের আগে মুক্তির আশা ছিল না কোনো শিক্ষার্থীর। সেখানে প্রায় সব শিক্ষার্থীই মুক্ত। ঈদ করবে পরিবারের সঙ্গে। আর যারা এভাবে পরিবারের কাছে ফিরছে, তাঁদের জন্য এবারের ঈদটি আসলেই অন্যরকম। ঈদের আনন্দটাও তাঁদের জন্য অন্যবারের চেয়ে বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, গুজব ছড়িয়ে সংঘাত, ভাঙচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনায় শাস্তি অবশ্যই প্রয়োজন ছিল। তবে, ঈদের এই সময়ে শিক্ষার্থীদের পরিবারবিহীন কারাগারে থাকাও কারও কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় শিক্ষার্থীরা ঈদের সেই আনন্দ ফিরে পেলো। প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতা কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা যেন আবার সুন্দর জীবনে ফিরে আসে সেটাই সবার কাম্য।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।