নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৫ অগাস্ট, ২০১৮
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আছে মাত্র ৪ মাস। অক্টোবরের শেষ নাগাদ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে তফসিল। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা দুই মেয়াদ পূর্ণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের জন্য আগামী ৪ মাস অত্যন্ত কঠিন সময়। আওয়ামী লীগ এই ১২০ দিন সময় কীভবে এবং কতটা রাজনৈতিক দক্ষতায় পার করে সেটি দেখার বিষয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে অনেকগুলো বড় বাধা পেরুতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ঈদের দিন নেতাকর্মীদের বলেছেন, ‘এখানে শ্লোগান না দিয়ে এলাকায় যেতে, জনগণের সঙ্গে কথা বলতে।’ ঈদের আনন্দের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সামনে কঠিন সময় আসছে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে আওয়ামী লীগকে অন্তত ৫ টি বড় বাঁধা পেরুতে হবে।
আওয়ামী লীগের এই পাঁচ বাধাগুলো হলো এরকম:
এক. শিক্ষার্থী এবং তরুণ ভোটারদের ক্ষোভ প্রশমন। গত কয়েক মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছে। আগামী ৪ মাসে এই শিক্ষার্থী এবং তরুণদের আবার রাজপথে নামানোর চেষ্টা হতে পারে। তাদের সরকারের মুখোমুখি করার নীল নকশা হবে। শিক্ষার্থী ও তরুণদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখা এবং সরকারের প্রতিপক্ষ না করা আওয়ামী লীগের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ।
দুই. বর্তমান প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দৃশ্যত সরকারের পক্ষে। কিন্তু এদের মধ্যেও অনেকে আওয়ামী লীগ বিরোধী। অনেকেই আওয়ামী লীগ সেজে ঘাপটি মেরে অপেক্ষায় আছে। অক্টোবরের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এদের অনেকের চেহারা পাল্টেও যাবে। যেমন গিয়েছিল ২০০১ সালে। এটিও আওয়ামী লীগের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা হবে।
তিন. আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধীদলগুলো বিশেষ করে বিএনপির অংশগ্রহণ আওয়ামী লীগের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করে সেক্ষেত্রে তা আওয়ামী লীগকে এক কঠিন লড়াইয়ের সামনে নেবে। আবার যদি বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে না পারার অভিযোগে অভিযুক্ত হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০১৪’র মতে, আরেকটি নির্বাচন কি দেশে এবং বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে?
চার. আওয়ামী লীগের দশ বছরের শাসনামলে দলটি ক্রমশ: বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে। ১৪ দলের নাম সর্বস্ব রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়া আওয়ামী লীগের মিত্র নেই। মুক্ত চিন্তার মানুষের সঙ্গেও আওয়ামী লীগের দূরত্ব হয়েছে। জাতীয় পার্টি, এই আছে, এই নেই। এরশাদ আস্থাভাজন বন্ধু নন। রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ এত মিত্রহীন কবে ছিল?
পাঁচ. দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই দুর্বলতার প্রধান কারণ কোন্দল এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ। এই সংগঠন কঠিন পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করবে সে প্রশ্ন আওয়ামী লীগ নেতাদেরই।
এই পাঁচ বাধা কাটিয়ে তবেই আওয়ামী লীগের তৃতীয়বারে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন পূরণ হবে। আওয়ামী লীগ কি তা পারবে?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।