নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ অগাস্ট, ২০১৮
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কি বিএনপি থেকে সরে যাচ্ছেন? আজ সংবাদ সম্মেলনের পর থেকেই বিএনপির নেতৃত্বের মধ্যে এনিয়ে চাপা গুঞ্জন এবং কানাঘুষা চলছে। এর মধ্যে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার খসড়া তালিকায় তাঁর নাম থাকায় এই গুঞ্জনকে আরও উস্কে দিয়েছে।
মহাসচিব পদ থেকে মির্জা ফখরুলের সরে যাওয়ার বিষয়টি চাউর হয় দুপুর থেকে। সকালে মির্জা ফখরুল নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আসেন সংবাদ সম্মেলন করতে। গত শনিবার তিনি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। বেগম জিয়া তাঁকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সংবাদ সম্মেলন করার নির্দেশ দেন। দলের প্রধান দ্বারা নির্দেশিত হয়ে বিএনপি মহাসচিব একটি লিখিত বক্তব্য তৈরি করেন। রোববার রাতে তারেক জিয়া এই লিখিত বক্তব্যটি তাঁকে ই-মেইলে পাঠাতে বলেন। তারেক মির্জা ফখরুল প্রণীত ঐ লিখিত বক্তব্যে বেশ কিছু আক্রমণাত্মক কথা যুক্ত করেন। এমনকি ঐ গ্রেনেড হামলার ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়। এছাড়াও ঐ সংশোধনীতে বলা হয়, ২১ আগস্টের জনসভাটি প্রথমে মুক্তাঙ্গনে করার কথা ছিল, পরে তা বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সরিয়ে আনা হয়। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে জনসভাস্থল বদল নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। সকালে বিএনপি মহাসচিব তারেক জিয়া সংশোধিত লিখিত বক্তব্যটি পান। কিন্তু ঐ সব ‘আপত্তিকর’, ‘অশোভন’ এবং ‘আক্রমণাত্মক’ বক্তব্য তিনি গ্রহণ করেননি। ঢাকা-লন্ডন সময়ের পার্থক্যের কারণে মির্জা ফখরুল আর তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলেননি। তবে তিনি তারেক জিয়া সংশোধিত বক্তব্যটি না পড়ে তাঁর তৈরি করা বক্তব্যটি সাংবাদিকদের সামনে পাঠ করেন। লন্ডনে এই খবর যেতে সময় নেয়নি। দুপুর নাগাদ লন্ডন থেকে ফোন আসে বিএনপি মহাসচিবের কাছে। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। টেলিফোন করেই তারেক মির্জা ফখরুলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শুরু করেন। এমনকি নোংরা ভাষায় গালাগালিও করেন। মির্জা ফখরুল তাঁকে শুধু বলেন, ‘আপনার ভাষা আর আমার ভাষা এক নয়। আমাদের শিক্ষাও এক নয়। আমি রাজনীতি করি, কারও সার্ভেন্ট না।’ একথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। তখনই তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন তাঁকে শান্ত করেন। বিএনপির ঐ স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা ফখরুলকে আশ্বস্ত করেন যে, বিষয়টি নিয়ে তিনি তারেকের সঙ্গে কথা বলবেন। অবশ্য এর আগে থেকে যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের অতিরিক্ত মাখামাখিতে তারেক পন্থীরা ক্ষুব্ধ। বিএনপিতে তারেক পন্থীদের একটি বড় অংশের ধারণা, মির্জা ফখরুল জাতীয় ঐক্যে যেতে চান। তারেক জিয়ার বাঁধার কারণে তিনি পুরো বিএনপিকে নিয়ে যেতে পারছেন না জন্য, এই নাটক সাজিয়েছেন।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বায়ক কমিটির খসড়া করা হয়েছে, তাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছে। তবে বিএনপি মহাসচিবের ঘনিষ্ঠ একজন জানিয়েছেন, মির্জা ফখরুল শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যে যাবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়, তবে কোনো মানসন্মান সম্পন্ন বিবেকবান মানুষের জন্য তারেকের সঙ্গে রাজনীতি করা অসম্ভব।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।