নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ অগাস্ট, ২০১৮
যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের ঐক্যের ডামাডোলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে বিএনপি। দুই দলের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি. এম. কাদেরের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অন্তত দু’টি বৈঠক হয়েছে। একটি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, তারেক জিয়ার আগ্রহ এবং নির্দেশেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জি. এম. কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটিকে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক নয় বলে মন্তব্য করেন। জি. এম. কাদেরের মতে, ‘এটা স্রেফ সামাজিক সৌজন্যতা। তবে তিনি বলেন, ’আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশে একটি গভীর সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের বিকল্প নেই।’ তবে বিএনপির কোনো নেতাই এই বৈঠকের ব্যাপারে জাতীয় পার্টির কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। একাধিক সূত্র বলছে, এই বৈঠকের ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সম্মতি রয়েছে। জানা গেছে, দু’পক্ষের মধ্যে আরও কথাবার্তা হবে।
একাধিক সূত্র বলছে, তারেক জিয়া যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের সঙ্গে জোটের ঐক্যে আগ্রহী নন। সুস্ঠু নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যেতে চান। ঢাকায় দুই নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারেক স্পষ্ট করেই বলেছেন, ভোটের বাজারে ওদের (ড. কামাল ও বি. চৌধুরী) কোনো মূল্য নেই। ঐ সূত্র মতে, এদের সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্যের চেয়ে তারেক ২০ দল এবং জাতীয় পার্টির ঐক্যে বেশি আগ্রহী।
বিএনপির একাধিক নেতার মতে, বিএনপি-জামাত-জাতীয় পার্টির ঐক্য হলে কারচুপি করেও আওয়ামী লীগ জিততে পারবে না। এজন্য বাইরে যুক্তফ্রন্টের ঐক্য প্রক্রিয়ায় আগ্রহ দেখালেও বিএনপির আগ্রহ জাপা’য়। বিএনপির একজন নেতা বলেন, ’জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের আদর্শিক মিল রয়েছে।’ ঐ নেতার মতে, শুধু জাতীয় পার্টি নয়, আমরা ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ ইসলাম পছন্দ দলগুলোকেও আমাদের ছাতায় আনতে চাই।’
এদিকে জাতীয় পার্টি সূত্রে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে, তাহলে জাপা আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাবে। তবে এরশাদ তাঁর সঙ্গেই ঐক্যে যেতে আগ্রহী যারা জাতীয় পার্টিকে এবার খুব বেশি আসনে ছাড় দেবে। অন্য একটি সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গেই শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে এবার খুব বেশি আসনে ছাড় দিতে রাজি নয়। এজন্যই নিজেদের দাম বাড়াতে জাপা বিএনপির দিকে ঝোঁকার কৌশল নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করবে কিনা সেটি নিশ্চিত না হলেও রাজনীতির এই নতুন মেরুকরণ ঐক্যের হিসেব নিকেশ পাল্টে দিয়েছে। তবে, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি.এম. কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন করে না। এনিয়ে কোনো আন্দোলনেও আমরা বিশ্বাসী নই। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলেই কেবল তাঁদের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি ভাবা হতে পারে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারও বলেছেন, ‘আমরা যদি নির্বাচনে যাই, তাহলে তো যেকোনো দলের সঙ্গেই নির্বাচনী সমঝোতা করতে পারি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশের নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান কিংস পার্টি ড. মঈন খান বিএনপি
মন্তব্য করুন
মো. সিদ্দিকুর রহমান আওয়ামী লীগ বিপ্লব বড়ুয়া সুজিত রায় নন্দী
মন্তব্য করুন
আবদুল আউয়াল মিন্টু তারেক জিয়া বিএনপি ২৮ অক্টোবর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা এই আবেদন এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন যে, সচিব তাকে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। এটি তিনি দেখছেন। আগামীকাল তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনমন্ত্রী এও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি খুব একটা সরে আসবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কি ধোঁকা দিয়েছে—এরকম একটি প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় এই প্রসঙ্গটি বারবার আনছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করে, বিএনপি যে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে তেজি ভাব এসেছিল, তার প্রধান কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং আগ্রহ। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কূটনীতিকরা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যে ভাষায় যে ভাবে কথা বলেছেন তাতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থির বিশ্বাস জন্মগ্রহণ করেছিল যে, তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এজেন্ডা। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা এই বক্তব্যটিকে তাদের কর্মীদের কাছে সঞ্চারিত করেছিল এবং কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিল।
টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ১৬ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। টানা ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করে একেক মেয়াদে একেক জনকে মন্ত্রী করেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন করে নেতাদের যেমন যোগ্যতা পরিমাপ করেন, ঠিক তেমনি তাদেরকে ক্ষমতাবান করেন।
নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে একশ কোটি টাকার বেশি উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করছেন। কাকে কাকে আটক করতে হবে এবং কারা কারা বিএনপিতে বড় ধরনের আন্দোলন করতে চায়, সরকারের জন্য বিপজ্জনক সেই নামের তালিকা সরবরাহ করেছেন। কাদেরকে বাইরে রাখলে কোন সমস্যা নেই সে নামও জানিয়েছেন সরকারি দলের লোকজনকে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেন বিএনপি কোনো বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য আশ্বাসও দিয়েছেন। তার এই আশ্বাসের কারণেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভর অবস্থায় নির্বাচন করেছে এবং বিএনপি যথারীতি নির্বাচন প্রতিরোধে কোন বড় ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।