নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ৩১ অগাস্ট, ২০১৮
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা রায়ের পর নাটকীয় মেরুকরণ হচ্ছে বিএনপিতে। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই মামলায় যদি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা তারেক জিয়াকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেবেন। কারান্তরীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্বে থাকবেন, তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। নতুন নেতৃত্ব জামাতকে বাদ দিয়ে যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের সঙ্গে নির্বাচনী মোর্চা গঠন করবে। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এরকম চিন্তাভাবনার কথা স্বীকার করেছেন।
একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক জিয়ার দণ্ড চান। তাঁরা তারেক জিয়াকে সরিয়ে দেয়ার পথ খুঁজছেন। ঐ মামলার রায়ে তারেক জিয়া দণ্ডিত হলে, বিএনপি নেতারা সেই পথ খুঁজে পাবেন। বিএনপি নেতারাই বলছেন, তারেকের অত্যাচারে তাঁরা অতিষ্ট। তারেক জিয়া এখনও তাঁর হাওয়া ভবনের সঙ্গী সাথী অপুদের নিয়েই আছেন। একজন বিএনপির সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘যাদের কারণে বিএনপির আজকে এই পরিণতি, তারেক সাহেব সেই তাদের পরামর্শেই চলছেন। উনি একটুও বদলাননি।’ তাঁর মতে ‘আমরা আশা করেছিলাম তিনি মায়ের গ্রেপ্তারের পর সিনিয়র নেতাদের কথা শুনবেন, তা হয়নি। বরং আমরা তাকে পরামর্শ দিতে গিয়ে অপমানিত হয়েছি। বিএনপির একজন আইনজীবী বললেন,‘ তারেক জিয়া তার মায়ের মুক্তি চান কিনা সে নিয়ে আমাদের গুরুতর সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বেগম জিয়ার মামলার তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মীর হেলালসহ তিনজন জুনিয়র আইনজীবীকে। আইন পেশায় যাদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা কোনটাই নাই।’
ঐ আইনজীবী বলেন,‘ দলের সিনিয়র আইনজীবীদের তারেক নির্দেশ দিয়েছেন যে ঐ তিনজনের নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম জিয়ার মামলাগুলোকে পরিচালিত করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য একজন সদস্য বলেছেন,‘লন্ডনে বসে তারেক জিয়া মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন। কে যোগ্য, কে অযোগ্য, কে জনপ্রিয় এসব বিবেচনা না করে, যার কাছ থেকে বেশি অর্থ পাচ্ছেন, তাকেই মনোনয়ন দিচ্ছেন।’ ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়েও বিএনপির সিনিয়র নেতারা ক্ষুদ্ধ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির নেতারা সুযোগ খুঁজছেন। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার মামলার রায় তাদের জন্য সেই সুযোগ। বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘রায় দিতে দেরি হচ্ছে কেন?’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিএনপি তার গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা বিলুপ্ত করে যে সংশোধনী কমিশনে দিয়েছে, তা কমিশন এখনও গ্রহণ করেনি। একটি সূত্র বলছে, ২১ আগস্ট রায়ের পর নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তখনই বিএনপিতে দ্রুত মেরুকরণ ঘটবে। ঐ সূত্রমতে, ঐ রায়ের জন্যই বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিএনপির ঐক্য থমকে আছে। যুক্তফ্রন্ট এবং ড. কামাল হোসেন দুজনই তারেক জিয়ার ব্যাপারে নিজেদের অস্বস্তির কথা বিএনপির নেতাদের বলেছেন। তারেকমুক্ত বিএনপির সঙ্গেই তাঁরা ঐক্যে আগ্রহী। এমন একটি বিএনপির ব্যাপারে আগ্রহ আছে ভারতেরও।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।