নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
৯০’ এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের আদলে তিন জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিন জোট নূন্যতম ইস্যুতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করবে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ নাগাদ অভিন্ন কর্মসূচিতে আন্দোলন শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ চলছে। এরকম একটি রাজনৈতিক ঐক্যের ফর্মুলা নিয়ে কাজ করছে দেশের বিরোধী দলগুলো। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল ইতিমধ্যেই রয়েছে। সিপিবি, বাসদ ইত্যাদি দল নিয়ে রয়েছে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা। এখন যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরাম মিলে গঠন করছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি থেকে তিনটি জোটকে আলাদা অবস্থান থেকে অভিন্ন কর্মসূচিতে যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, নানা রকম শর্ত এবং প্রশ্নের উদ্ভব হবে না। এই তিন জোট ইভিএমকে কেন্দ্র করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এরশাদের পতনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ৮ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল এবং ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, জাসদ সমন্বয়ে ৫ দলীয় বাম জোট গঠিত হয়েছিল। ঐ সময় জামাত তিন জোটের কোনটিতে না থাকলেও তিন জোটের কর্মসূচি হুবহু অনুসরণ করেছিল। ৯০’ এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শেষ ভাগে তিন জোট ১৯ দফার একটি রূপরেখা প্রণয়ন করেছিল। ঐ রূপরেখায় বলা হয়েছিল, ক্ষমতায় যারাই যাক তাঁরা ঐ রূপরেখা অনুযায়ী কাজ করবে। কিন্তু বিএনপি ৯১’ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ঐ রূপরেখা অগ্রাহ্য করে।
এবার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একই ভাবে তিন জোট ঐক্যবদ্ধ হবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের আকাঙ্ক্ষা ছিল সব রাজনৈতিক দলকে সরকার বিরোধী এক মঞ্চে শামিল করা। কিন্তু বিএনপি জামাতকে বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে রাজি না। আবার বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা তাদের ভাষায় ‘সাম্রাজ্যবাদের দালালদের ক্রীড়ানক হতে রাজি নয়।’ এ রকম বাস্তবতায় শুধু নূন্যতম নির্বাচন ইস্যুতে আলাদা আলাদা প্ল্যাটফর্ম থেকে যুগপৎ আন্দোলন করার প্রস্তাব নিয়ে কথা চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো, একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে আমরা এক সঙ্গে আন্দোলন করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘এক মঞ্চ হলে ভালো হয়, তা না হলে যে যার অবস্থান থেকে আমরা অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন করতে পারি।’ বাম গণতান্ত্রিক মোর্চার নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আমরা ইতিমধ্যেই আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছি। এই ইস্যুতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করতে পারি। এ নিয়ে কথা বার্তা হচ্ছে।
যুক্তফ্রন্ট বিএনপিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে আগ্রহী। কিন্তু জামাতকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিকল্প ধারার আপত্তি রয়েছে। বিএনপিও নির্বাচনের হিসেব-নিকেশে জামাতকে বাদ দিতে রাজি নয়। বিএনপি নেতারা বৈঠক করে যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা ২০ দলকে ভাঙ্গতে রাজি নই। ২০ দল থাকবে, পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা বৃহত্তর একটি প্ল্যাটফর্ম করব।’
জানা গেছে, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে খুব শিগগিরই বাম ফ্রন্টের একটি বৈঠক হবার কথা আছে। বিএনপির সঙ্গেও ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জোটের বৈঠক হবার কথা রয়েছে। গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা স্পষ্ট হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় সপ্তাহে আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে জনগণের সামনে যেতে পারবো বলে আশা করছি।’
দেশের এই বিরোধী দলগুলো অক্টোবর-নভেম্বরে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে একটি বড় আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।