নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কি পিছিয়ে যাচ্ছে? ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বিতর্ক এবং ড. কামাল হোসেনের গতকালের একটি মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে এই প্রশ্ন বেশ জোরেসোরেই আলোচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অবশ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একটি মহল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তাদের ঐ স্বপ্নপূরণ হবে না।’ অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ নির্বাচন পেছানোকে ‘বাস্তব সম্মত’ এবং প্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নূন্যতম পরিবেশ দেশে নেই। আগামী তিনমাসের মধ্যে সেরকম একটি পরিস্থিতি সৃষ্টিও সম্ভব না। তাই নির্বাচন পেছানোর বিকল্প নেই।’ বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য মনে করেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্যতম শর্ত হলো, ‘বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ রেখে নির্বাচন হতে পারে না।’ তাঁর মতে, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্যও সময় প্রয়োজন। এজন্য নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মার্চে নেওয়া যেতে পারে।’ এর ফলে কোনো সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে না বলেও ব্যারিস্টার মওদুদ মনে করেন।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব এক অনুষ্ঠানে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘দেশে আগামী নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি এমন হচ্ছে যে, নির্বাচন নাও হতে পারে।’ ড. কামাল হোসেনের এই বক্তব্যের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। বাংলা ইনসাইডারের কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন একজন দালাল। দেশে অনির্বাচিত সরকার আনতে এই দালালরা ফতোয়া দেয়।’ তিনি বলেন, ‘এই কামাল হোসেনই ওয়ান ইলেভেনে অনির্বাচিত সরকারকে অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় রাখার ফতোয়া দিয়েছিলেন। এরা জনগণের শত্রু।’ বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বার বার গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রকারী ড. কামালের স্বপ্ন, এদেশের জনগণই রুখে দেবে।’
সংবিধানের ৭২(৩) অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ প্রথম বৈঠকের দিন থেকে পাঁচ বছর। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪ জাতীয় সংসদের প্রথম বৈঠক বসেছিল। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সংবিধানের ১২৩(৩)ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তবে, সংবিধানের ১২৩ (৩)খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ যদি মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে ভেঙ্গে যায় তাহলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হয়, তাহলে সংসদের মেয়াদ অবসানের অন্তত একদিন আগে হলেও সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। তবে যদি সংসদের মেয়াদ শেষ হয় আবার নতুন নির্বাচনও না হয়, সেক্ষেত্রে কি হবে, সে সম্পর্কে সংবিধানে কিছু নেই। আর ড. কামাল হোসেন এবং সুশীল সমাজের একটি অংশ এই অস্পষ্টতার সুযোগ নিতে চাইছে। তারা নির্বাচন পিছিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে। সংবিধানের ১২৩ (৩) (খ) অনুযায়ী পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হলে তা ২৭ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে। এরকম একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্যেই কাজ করছে দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ এবং একটি রাজনৈতিক মহল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।