নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই নানা হিসেব নিকেশ, উৎকণ্ঠা ডানা মেলছে। বিএনপি কি নির্বাচনে যাবে? যুক্তফ্রন্ট ভোটের মাঠে কি প্রভাব ফেলবে? আওয়ামী লীগ সামনের কঠিন সময়ে কীভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখবে? রাজনীতির অঙ্গনে এসব প্রশ্ন ঘুরছে। বাংলাদেশে কি সব দলের অংশগ্রহণে ডিসেম্বরে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন হবে নাকি আন্দোলন, সন্ত্রাসে দগ্ধ হবে দেশ? রাজনীতির গতি প্রকৃতি নিয়ে এসব আলোচনার প্রায় সবটুকুই অনুমাননির্ভর। তবে সবাই একটি বিষয়ে একমত, রাজনীতির এই অনিশ্চয়তার খেলায় প্রধান খেলোয়াড় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচন এবং সংকট সমাধানের অনেক কিছুই নির্ভর করছে তাঁর উপর। সবচেয়ে বড় কথা, রাজনৈতিক চিন্তা, দূরদর্শিতায় তিনি এগিয়ে সবার চেয়ে। বিরোধী দলের বৈঠকগুলোতে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন শেখ হাসিনার প্ল্যান কি?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই গত এক দশকে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। তাঁর পিছনেই ছুটছে সব দলের রাজনীতিবিদরা। তিনি একটা করে ইস্যু ছুড়ে দিচ্ছেন, সেটা নিয়ে রাজনীতিতে হৈ চৈ চলছে। আবার নতুন ইস্যু সামনে আনছেন। রাজনীতিতে তিনি এতই কৌশলী যে, সবাই তাঁর দিকেই তাকিয়ে। বিএনপি যখন সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দিলো, যুক্তফ্রন্ট আর গণফোরামের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে বেগম জিয়ার আরেকটি মামলার বিচার শুরু হলো। ঘটনায় বিএনপির নেতারা এতটাই অবাক হয়ে গিয়েছিল যে, তাঁরা কি বলবে সেটিও বুঝে উঠতে পারেনি।
বিএনপির একজন নেতাই কাল বলছিলেন, ‘এখন আমরা কি করবো, কোনদিক সামলাবো। একদিকে বিএনপিকে জনসভা করতে দিলো, অন্যদিকে নতুন করে ধরপাকড় শুরু হয়েছে।’ ঐ নেতাই প্রশ্ন করলেন, ‘শেখ হাসিনা আসলে কোন পথে এগুচ্ছেন?’
ইভিএম নিয়ে যখন সব রাজনৈতিক দল কোমর কষে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, তখন শেখ হাসিনা তাতে জল ঢেলে দিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন, ‘ইভিএম নিয়ে এত তাড়াহুড়ো করা ঠিক হবে না।’ ব্যস শেষ। বামপন্থী এক নেতা বলেছিলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম শেখ হাসিনার ইঙ্গিতেই বোধ হয় ইভিএম চালুর পাঁয়তারা চলছে। পরে দেখলাম তিনি তো আমাদের সুরেই কথা বলছেন।’
শুধু অন্যদল কেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছেও শেখ হাসিনা এক দুর্বোধ্য ধাঁধাঁ। কান পাতলেই আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের ফিঁস ফাঁস আওয়াজ শোনা যায়, ‘নেত্রীর প্ল্যান কি? ইলেকশন কীভাবে হবে?’
২০১৪’র নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ম্যাজিকের নাম। ঐ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছিলেন, ‘নির্বাচন তো এবার দুইটা করতে হবে। তাই, এই নির্বাচনটায় খরচ করতে চাই না।’ তাঁকে প্রধানমন্ত্রী ভৎর্সনা করে বলেছিলেন, ‘এটাই আসল নির্বাচন। এই সংসদ ৫ বছরই থাকবে।’ শেখ হাসিনা কথা শুনে সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক পাতি নেতাও হেসেছিলেন। ঐ সময় একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া আর খুব কম মানুষই বিশ্বাস করেছিলেন যে, বর্তমান সংসদ ৫ বছর চলবে। মেয়াদ পূর্তি করবে। এবার শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচন ঠিক সময়ই হবে। বিএনপিও নির্বাচনে আসবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতবে। কিন্তু জয় এত সহজ হবে না।’
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা কেউই জানেন না, শেখ হাসিনার পরিকল্পনা কি? আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা প্রথমত: তাঁর পুরো প্ল্যান সবার সঙ্গে আলোচনা করেন না। একজন ততটুকুই জানেন, যতটুকু তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত: শেখ হাসিনা একটি প্ল্যান নিয়ে চলেন না। তাঁর থাকে একাধিক প্ল্যান। কোন প্ল্যানে তিনি এগুবেন, সেটার উপরই নির্ভর করছে আগামী রাজনীতির ভবিষ্যৎ।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।