নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করলেন বিএনপির মহাসচিব। তারেক জিয়া বৈঠকে না যাবার নির্দেশ দিলে, বৈঠকে যোগ দেননি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদসহ আরও দুজন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সকালেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বাতিল করতে বলেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এই ঘটনায় বিএনপিতে তারেক পন্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গতকাল শনিবার রাতে তারেক জিয়া বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানতে চান যে, সরকার অবৈধ নির্বাচনের আগে আগে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করা কতটা যৌক্তিক। তাছাড়া তারেক জিয়া বলেন, ‘তাঁর হাতে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) তো ক্ষমতা নেই, ওখানে কি হবে? এটা তো বিএনপির দুর্বলতাই প্রকাশ করবে।’ অবশ্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা তারেক জিয়ার এই বক্তব্য মেনে নেননি। পাল্টা যুক্তি দেখান যে, বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এই সরকার আরও দেড় মাস ক্ষমতায় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। বেগম জিয়ার চিকিৎসাই এখানে বড় প্রশ্ন।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারেক মির্জা ফখরুলের এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তারেক মির্জা ফখরুলকে বলেন, ‘আমার মা যদি ৭ মাস এভাবে থাকতে পারে, তাহলে আরও দুমাস থাকতে পারবে।’ তারেক বলেছেন, ‘আমি আমার মাকে হাসপাতালে দেখতে চাই না, মুক্ত দেখতে চাই। যদি ওনার মুক্তির জন্য কিছু করতে পারেন, করেন, না হলে এসব আলোচনায় যেয়ে লাভ নেই।’ কিন্তু বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি ম্যাডামের মুক্তি চাই, সুচিকিৎসাও চাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমি সুচিকিৎসার দাবি নিয়েই যাচ্ছি।’ সূত্রমতে, বিএনপি মহাসচিবকে বোঝাতে না পেরে তারেক জিয়া তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের ওই বৈঠকে যোগদানে নিরুৎসাহিত করেন। তৃণমূলে এবং তরুণদের মধ্যে তারেক জিয়ার অবস্থান অত্যন্ত শক্ত হলেও সিনিয়র নেতাদের মধ্যে তাঁর অবস্থান নড়বড়ে। তাঁর ডাকে সারা দিয়ে মাত্র তিনজন বৈঠকে যোগ দেননি। তবে, বিএনপির তরুণ এবং তৃণমূলের নেতারা বলছেন, যখন আমরা বলছি সর্বাত্মক আন্দোলনের কথা তখন আমাদের নেতারা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঢাকা মহানগরীর একজন তরুণ নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে আত্মঘাতী হিসেবে দেখছেন। তাঁর মতে, এটি কর্মীদের ভুলবার্তা দেবে। এর ফলে কর্মীরা আন্দোলনের উৎসাহ হারাবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও বিএনপি মহাসচিবের এই বৈঠককে হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন। দলের কর্মীদের তিনি বলেছেন, ‘এভাবে বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। তাঁরা যদি সুচিকিৎসাই দিতো, তাহলে তো এভাবে ম্যাডামকে বন্দী করে রাখতো না।’ রিজভী কর্মীদের বলেছেন, ‘আমাদের সিনিয়র নেতারা যদি সত্যি বেগম জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে অবশ্যই তাঁদের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিৎ।’
বিএনপির অনেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গোপন সম্পর্কেরও কথা বলছেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।