নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৩ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
যতই নির্বাচন এগিয়ে আসছে, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য এবং সহিংস হয়ে উঠছে। এখন পর্যন্ত নিজ নিজ এলাকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৩৭ জন এমপিকে। বিভিন্ন ঘটনায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, দিনে দিনে এই তালিকা আরও বড় হবে।
অনিয়ম, দুর্নীতি এবং এলাকায় জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে দিনাজপুর-১ আসনের সাংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপালকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বীরগঞ্জ-কাহারোল আওয়ামী লীগ ঐক্য পরিষদ।
বরগুনা-১ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকেও অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাজনীতির অভিযোগ এনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
এছাড়া রাজশাহী- ৫ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারাকেও নিজে এলাকা পুঠিয়া-দুর্গাপুরের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, শুধু এই তিন এমপিই নয়, গতকাল সোমবার বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধেও ‘নির্যাতন-সন্ত্রাস-দুর্নীতি-মাদক প্রতিরোধ কমিটি’র ব্যানারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
এছাড়া বগুড়ার এক এমপিকেও বহিষ্কার করার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ কমিটি প্রস্তাব করেছে। রাজশাহীতেও এক এমপিকে বহিষ্কার করার দাবি উঠেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী আমেজের মধ্যেই এখন পর্যন্ত ৩৭টি জেলায় আওয়ামী লীগের এমপিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ওই এমপিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এছাড়া আরও ৬৫ টি নির্বাচনী এলাকা রয়েছে যেখানে বর্তমান এমপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কমিটির বিরোধ এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরোধ প্রকাশ্য। এসব ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে প্রায়ই বিভিন্ন গোলযোগে ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনী দ্বন্দ্ব, নির্বাচনী মনোনয়নের জন্য প্রতিযোগিতা তার কদর্যরূপ প্রকাশ করছে, আওয়ামী লীগের কয়েকজন রাজনীতিবিদের কার্যক্রমের মাধ্যমে। এর ফলে জনগণের সামনে প্রকাশিত হয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি।
দলীয় বিভক্তির এমন প্রদর্শনী আওয়ামী লীগকে উদ্বিগ্ন করেছে। নির্বাচনী বছরে এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় অবাঞ্ছিত হওয়ার খবরে উদ্বিগ্ন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিষয়টি সুরাহা করতে এবং এলাকায় কেন তাদের এই অবস্থা জানতে দিনাজপুরের এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, রাজশাহীর এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও বরগুনার এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ মোট ১৪ জনকে শোকজ করেছে দলটি।
এছাড়া সিলেট সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ হিসেবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল উঠে আসায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহউদ্দিন সিরাজ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন কামরানকেও নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
শোকজের নোটিশ প্রাপ্তদের তালিকায় আরও আছেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু, সিলেট নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দীন, রাজশাহী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক মামুন, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হামিদুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বীরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া জাকা, সিলেট মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন।
তবে এসব পদক্ষেপ নিয়েও তেমন কোনো ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।