নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে শুরুতেই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তফ্রন্ট জাতীয় ঐক্যের নেতৃত্ব অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে দিতে চাইছে। যদিও বিকল্পধারার এই নেতা প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি জাতীয় ঐক্যের নেতৃত্ব নিতে চান না। অন্যদিকে গণফোরাম, সুশীল সমাজ এবং বিদেশি দূতাবাসগুলো চাইছে এই জোটের নেতৃত্ব ড. কামাল হোসেনকে দিতে। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরিক নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ড. কামালের নেতৃত্ব মেনে নেবেন না। এদিকে আকস্মিকভাবে বিএনপি মহাসচিবের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় অবিশ্বাস এবং অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তফ্রন্টের একজন নেতা জানিয়েছেন, কাল রাতেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, দু একদিনের মধ্যেই বৈঠক করতে চান। এর মধ্যে তিনি একবারও বলেননি যে, রাতেই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। গণফোরামের নেতারাও এই ঘটনায় অবাক হয়েছেন। গণফোরামের একজন নেতা বলেছেন, যাঁদের আপনি বিশ্বাসই করতে পারবেন না, তাঁদের সঙ্গে ঐক্য করবেন কীভাবে?
জাতীয় ঐক্য গঠনের আগেই প্রস্তাবিত জোটে নানা মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহি বি. চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের এজেন্ট বলেই মনে করা হচ্ছে। মাহির সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগাযোগের খবরও রাজনৈতিক পাড়ায় পাওয়া যায়। আবার যুক্তফ্রন্টের আরেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে যুক্তফ্রন্টে বিএনপির প্রতিনিধি মনে করা হয়। বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের ব্যাপারে তিনিই সবচেয়ে আগ্রহী। এমনকি জামাতকে নিয়েই তিনি ঐক্যে যেতে আগ্রহী। যুক্তফ্রন্টে বৈঠকে মান্না বেশ জোর দিয়েই বলেছেন, ‘বিএনপিকে আমাদের নিতেই হবে। না হলে আমরা কিছুই করতে পারব না।’ যুক্তফ্রন্টের আরেক শরিক আ. স. ম. আবদুর রব ঐক্য প্রক্রিয়ার অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ হয়ে গুটিয়ে নিয়েছেন। তবে যুক্তফ্রন্টের একাধিক নেতা বলছেন, নেতৃত্বের দৌড়ে পিছিয়ে পড়ে ঐক্যে অরুচি এসেছে রবের। আবার জাতীয় ঐক্যে আগ্রহী হলেও ছোট দলের বড় শর্তে বিএনপির নেতারাও প্রকাশ্যে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। গত মঙ্গলবার প্রেসক্লাবে ড. কামাল হোসেনের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে বিএনপি নেতারা উষ্মা প্রকাশ করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘উনি কথায় কথায় জামাত থাকলে আমি নেই জাতীয় কথা বলছেন কেন? কে বলেছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় জামাত থাকবে?’
জাতীয় ঐক্য এখনো শুরুই হয়নি এখনই এতে অবিশ্বাস, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব আর মান অভিমান শুরু হয়েছে। যাত্রার আগেই হোঁচট খাচ্ছে এই ঐক্য প্রক্রিয়া। বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, ‘উদ্যোক্তা দুই নেতার দাম্ভিকতায় অঙ্কুরেই বিনষ্ট হতে পারে এই ঐক্য প্রক্রিয়া।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।