নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৯ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে গত মঙ্গলবার নিউইয়র্ক গেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী নির্বাচন ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিরোস্লাভ জেনকার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
বিএনপি মহাসচিবের জাতিসংঘের বৈঠকে অংশ নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে খোদ দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। দলের অনেক শীর্ষ নেতাই জানতেন না যে, মির্জা ফখরুল জাতিসংঘের আমন্ত্রণে নিউইয়র্ক যাবেন।
জাতিসংঘের তিনটি শর্ত মেনে নেওয়ার কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
প্রথমত, জাতিসংঘের গ্লোবাল ম্যান্ডেট অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সংস্থাটি হস্তক্ষেপ করে না। তাই জাতিসংঘের প্রথম শর্ত হচ্ছে, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকে বিএনপি নির্বাচন করতে হবে। এই প্রস্তাবে রাজি হলেই নির্বাচনের জাতিসংঘ নির্বাচনে সব দলের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির সমতা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবে। কিন্তু নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ইত্যাদি সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরের বিষয় নিয়ে জাতিসংঘ কথা বলবে না।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি যে কর্মসূচিই পালন করুক না কেন তা হতে হবে শান্তিপূর্ণ। অহিংস-শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চা বলতে নিয়ম মেনে সভা-সমাবেশ ইত্যাদি বোঝায়। কিন্তু ২০১৪ এর মতো গাড়ি পোড়ানো, বোমা হামলার মতো ঘটনা ঘটাবে না সে বিষয়ে বিএনপিকে কথা দিতে হবে।
তৃতীয়ত, আইনের নিজস্ব গতি রোধ করে বিএনপি এমন কোনো কার্যকলাপ করতে পারবে না। যেমন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জিয়া এতিমখানা মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন, মামলা চলছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার মুক্তির মতো বিষয়গুলোতে অর্থাৎ আইনকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কোনো বিষয়ে জাতিসংঘকে অনুরোধ করতে পারবে না বিএনপি।
জানা গেছে, তিনটি শর্ত মেনেই মির্জা ফখরুল জাতিসংঘের বৈঠকে যেতে রাজি হন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বিএনপি মহাসচিব যে তিনটি শর্ত মানলেন তা বিএনপির নীতিগত অবস্থানের বিরোধী। কারণ বিএনপি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দলটি নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু জাতিসংঘের শর্ত মানলে বিএনপি এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো কথা বলতে পারবে না। তাই বলা যায়, বিএনপির নিজস্ব ম্যান্ডেট ভঙ্গ করে এই বৈঠকে গেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই নিয়ে বিএনপিতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নিয়ম হচ্ছে, জাতিসংঘের বৈঠকে অংশ নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ক্ষেত্রে স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করতে হয়। কিন্তু মির্জা ফখরুল এই বৈঠকের বিষয়ে কোনো ধরনের আলোচনা করেননি। এই নিয়েও বিএনপিতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সব মিলিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে ফখরুলের বৈঠকটিকে মনে করা হচ্ছে আই ওয়াশ। একে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু এই বৈঠক থেকে আদৌ কোনো ফলাফল আসবে কী না তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।