নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
কারাগারে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন বেগম খালেদা জিয়া। উত্তেজিত হয়ে কারা কর্মকর্তা এবং কারারক্ষীদের গালাগালিও করলেন। হুমকি দিলেন ‘তোমাদের সবাইকে দেখে নেবো। জেলের ভাত খাওয়াবো।’ আজ সকালে নাজিমউদ্দিন রোডে পুরাতন কারাগারে এই ঘটনা ঘটে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এখানেই কারাবন্দী হিসেবে আছেন বেগম জিয়া।
আজ সকালে কারাগারের ডেপুটি জেলার এবং আরও কয়েকজন জেল কর্মকর্তা বেগম জিয়ার কাছে যান। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার হাজিরার তারিখ ছিল। সম্প্রতি সরকার এক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এই মামলার স্থান নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে নিয়ে আসেন। জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামি বেগম খালেদা জিয়া। এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হওয়ার পর বেগম জিয়া বেগম জিয়া আর এই মামলায় হাজির হচ্ছেন না। সাত মাস হলো মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ। বেগম জিয়া যেহেতু আদালতে আসতে রাজি নন, তাঁর অসুস্থতা এসব বিবেচনায় এনে আইন মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে আদালতের স্থান পরিবর্তন করে। প্রথমদিন আদালত বসলে বেগম জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে আনা হয়। এসময় বেগম জিয়া জানিয়ে দেন ‘যা খুশি রায় দিন, আমি আর আদালতে আসবো না।’ ঐদিন বেগম জিয়ার আইনজীবীরা বিচারকাজে অংশগ্রহণ না করায় আদালত মুলতবি করা হয়। এরপর বেগম জিয়ার আইনজীবীরা নাজিমউদ্দিন রোডে কারাগার স্থানান্তর বিষয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ করেন। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। গতকাল বুধবার ড. আখতারুজ্জামানের বিশেষ আদালত আবার নাজিমউদ্দিন রোডে বসলে, বেগম জিয়া সেখানে যাননি। কারাগারের কর্মকর্তারা তাঁকে আদালতে যেতে বললে তিনি জানান যে, তিনি কোর্টে যাবেন না। অথচ আদালত বসানো হয়েছে বেগম জিয়া যেখানে কারাবাস করছেন তাঁর কাছেই। কারা কর্তৃপক্ষকে গতকাল বুধবার অবশ্য বেগম জিয়া জানিয়েছিলেন যে, তিনি সুস্থবোধ করছেন না।
আজ বৃহস্পতিবার কারাগারের চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, তিনি সুস্থ আছেন। এরপর ডেপুটি জেলার তাঁকে কোর্টে নেওয়ার জন্য হুইল চেয়ার নিয়ে আসেন। তখন বেগম জিয়া উত্তেজিত হয়ে যান।
কারাগারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘জেল কোড অনুযায়ী আমরা জোর করে উনাকে আদালতে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু উনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা সেটা করিনি।’ ঐ কর্মকর্তা বলেন, ‘কোর্ট থেকে উনাকে হাজির করার নির্দেশনা এসেছে। এটা প্রডাকশন ওয়ারেন্ট। অক্ষম এবং অসুস্থতা ছাড়া এই নির্দেশ অমান্য করা আদালত অবমাননার শামিল।’ তিনি বলেন, ‘তারপরও উনি আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলার বিচার কাজ শেষ পর্যায়ে। এই মামলায় দণ্ডিত হলে বেগম জিয়ার মুক্তির শেষ আশাটুকুও নষ্ট হয়ে যাবে। এই বিবেচনা থেকেই বেগম জিয়ার অসুস্থতার কথা বলা হচ্ছে। বেগম জিয়া নিজেও আদালত এড়াতে চাইছেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।