নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
পদত্যাগের প্রায় বছরখানেক পর একটি বই লিখেছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল’, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামের বইটিতে তিনি দাবি করেছেন ‘সরকারের চাপে পদত্যাগ ও নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়েছেন’ এবং তিনি নিজেকে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক রায়’ঘোষণাকারী বলে দাবি করেছেন। সাউথ এশিয়ার মনিটর ডটকমে প্রকাশিত সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বই নিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার থেকে অ্যামাজনের কিন্ডলে প্লাটফর্মে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বইটি দেখা যাচ্ছে। তবে সেখানে শুধু বইটির প্রচ্ছদ ও শিরোনামই দেখা যায়। পুরো বইটি পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষুদ্র অংশেই সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দাবি করেন, ২০১৭ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের কারণে বর্তমান সরকার তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। ওই রায়ের মাধ্যমে তিনি বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে যাওয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন।
৬১০ পৃষ্ঠার বইয়ে ‘সূচনায়’ সুরেন্দ্র কুমার সিনহা লিখেছেন, ‘২০১৭ সালে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে একটি ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার পর বর্তমান সরকার আমাকে পদত্যাগে এবং নির্বাসনে যেতে বাধ্য করে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকদের সর্বসম্মত ওই রায়ে রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রবণতা নিয়ে আমি যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলাম, সেটি দেশের মানুষ ও সুশীল সমাজ ভালোভাবে গ্রহণ করে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ভালো গুরুত্ব পায়।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারক মিলে চূড়ান্ত রায় দেওয়ার পর সংসদের বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর দলের অন্যান্যরা আমাকে তিরস্কার করেন। আইনমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা আমার ওপর কলিমালেপন, অসদাচারণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে থাকেন। আমি আমার সরকারি বাসবভনে বন্দী ছিলাম। আইনজীবী এবং বিচারপতিরা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। মিডিয়াকে বলা হয়েছে আমি অসুস্থ এবং আমি চিকিৎসা ছুটি চেয়েছি। কয়েকজন মন্ত্রী বলেছেন আমি চিকিৎসা ছুটিতে বিদেশে যাব।’
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দাবি করেছেন, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭ আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার সময় আমি একটি বিবৃতি দিয়ে সবার কাছে পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম যে আমি অসুস্থ নই এবং চিরতরে দেশও ত্যাগ করছি না।’ বিচারপতি সিনহার দাবি, এরপর তার পরিবার ও স্বজনদের ভয়-ভীতি দেখানোয় তিনি বিদেশে থাকতেই পদত্যাগপত্র জমা দেন।
সাউথ এশিয়ার মনিটর তাদের প্রতিবেদনে জানায়, এমন সময় সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বইটি এলো এমন সময়ে যখন আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময় এবং বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলো বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।