নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০৪ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া গতকাল বুধবার রাতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে ফোন করেছিলেন। মিনিটি পাঁচেকের সেই ফোনালাপে ড. কামালের হাতে বিএনপির দায়িত্ব তুলে দেন তারেক জিয়া, ড. কামালকে বিএনপির নেতা হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি। এরপরই ড. কামাল হোসেন শর্তহীনভাবে বিএনপির সঙ্গে ঐক্যে রাজি হন। ড. কামালকে বিএনপির নেতা নির্বাচিত হতে দেখে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একাত্তরের পুরোনো বন্ধুরা আবার মিলিত হচ্ছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী একটি দল বিএনপি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম হত্যাকারী। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর মাত্র তিন মাসের মাথায় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান পুরোপুরি পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করতে শুরু করেন। বাংলাদেশের মাটি থেকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে দেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালান তিনি। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যাবার আগ পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীতে একের পর এক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কূটনীতিকের মর্যাদা দিয়ে পুরস্কৃত করা, ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সামরিক অধ্যাদেশ জারি করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক প্রণীত দালাল আইন বাতিল করার মতো অপকর্ম করেছেন জিয়াউর রহমান। এমনকি একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করা জামায়াতে ইসলামী ও তাদের নেতা গোলাম আযমকে বাংলাদেশে পুনরায় রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে বিএনপিই। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া দলের দায়িত্ব নেওয়ার পরও বিএনপির পাকিস্তানপন্থী মনোভাবে একেবারেই বদলায়নি। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সেনা ছাউনিতে জন্ম নেওয়া বিএনপি আজও বাংলাদেশকে ছায়া পাকিস্তান বানানোর এজেন্ডা নিয়েই কাজ করে চলেছে। এই দলটি এখনও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসের টাকায় পরিচালিত হয়। আইএসের টাকায় বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে তাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টা সম্পর্কে সচেতন নাগরিকরা ওয়াকিবহাল রয়েছেন।
ড. কামাল হোসেনও বিএনপির মতো একই চিন্তাধারার মানুষ। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। রাজনীতি অঙ্গনে প্রবেশ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ড. কামালকে বঙ্গবন্ধু প্রথমে আইন মন্ত্রণালয় ও পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অথচ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী না হয়ে লন্ডনে শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে গিয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এবং বঙ্গবন্ধুর জন্য যদি তাঁর দরদ থাকতো তাহলে এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি গা ঢাকা দিতে পারতেন না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সময়ও ড. কামাল হোসেনের কর্মকাণ্ড ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে ড. কামাল হোসেন হঠাৎ করে বিদেশে চলে যান। যেন তিনি জানতেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়টি ঘটতে যাচ্ছে। এমনকি হত্যাকাণ্ডের পরও তাঁর কর্মকাণ্ড ছিল সন্দেহ জাগানিয়া। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর মধ্যস্থতায় বঙ্গবন্ধুর বেঁচে যাওয়া দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। তখন শেখ রেহানা তাঁকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বিষয়ে অন্তত একটি বিবৃতি দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিতি পাওয়া ড. কামাল হোসেন সেই সময়টাতে কোনো ধরনের বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিশ্বাসী কোনো মানুষের পক্ষে এমন কাজ করা কখনোই সম্ভব হতো না।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করা ড. কামাল হোসেন এবার নিযুক্ত হলের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী দল বিএনপির নেতা নিযুক্ত হলেন। এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছেন, নিজের আসল দলের নেতৃত্ব পেলেন ড. কামাল।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।