নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার লেখা ‘অ্যা ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসবে আগামীকাল রোববার। এর আগে অ্যামাজনের কিন্ডল প্লাটফর্মে বইটির ভূমিকা প্রকাশিত হয়েছিল। সিনহার দেশত্যাগ ও পদত্যাগ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা সংবলিত বইটি ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় তুলেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। একদিকে দাবি উঠেছে এই দুর্নীতির অভিযোগে সিনহার বিরুদ্ধে বিচার-তদন্ত করার, আবার আরেকদিকে প্রশ্ন উঠছে এতদিন কেন সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগুলোকে আমলে নেওয়া হয়নি। সাবেক বিচারপতি সিনহার বিষয়ে সরকার অনেকগুলো ভুল করেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
১। সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নির্বাচিত করাই ছিল প্রথম ভুল। প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের আগেই তাঁকে নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল। এরপরও কিছু মানুষের প্রভাবে প্রধান বিচারপতি বনে যান সিনহা।
২। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর জানা গেল সিনহার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আঁতাত রয়েছে। সিনহা নিজেও একথা স্বীকার করেছেন। আপিল ডিভিশনের কোর্টে দাঁড়িয়ে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বুক ফুলিয়ে বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজাকার ছিলেন। সিনহার ঠিকুজি যাচাই না করেই তাঁকে প্রধান বিচারপতির মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া এবং তাঁর স্বাধীনতা বিরোধী অতীত ইতিহাস জানার পরও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া ছিল সরকারের দ্বিতীয় ভুল।
৩। কয়েক বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে লন্ডনে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি লক্ষ্য করেন, সিনহার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা লন্ডনে তাঁকে অর্থকড়ি দিচ্ছেন। মীর কাসেমের ছেলের কাছ থেকে সাবেক বিচারপতি সিনহার অর্থ নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু এমন অভিযোগের পরও সতর্ক হয়নি সরকার। বরং যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার শুনানির সময় আপিল ডিভিশন থেকে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সরিয়ে দেন এস কে সিনহা। এছাড়া যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের আপিল শুনানিকালে মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা প্রসিকিউশানের কঠোর সমালোচনা করেন, তিরস্কার করেন অ্যাটর্নি জেনারেলকে। সরকারের দুজন মন্ত্রী এর প্রতিবাদ করলে মন্ত্রীদের জরিমানা দণ্ডও দিয়েছিলেন সিনহা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় অভিযুক্তদের প্রতি সিনহার মনোভাব অনেক কিছুই পরিষ্কার করে দেয়। কিন্তু এত কিছুর পরও সিনহাকে নিয়ে সতর্ক হয়নি সরকার।
৪। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের যে রায় দিয়েছিল, সেই রায় ফাঁস হয়ে যায়। তখনই সরকারের উচিত ছিল সিনহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে তাঁকে বাদ দেওয়াও উচিত ছিল সরকারের। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করেনি।
৫। এই বছরের শুরুতে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাংক হিসাবে জমা পড়া চার কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া যায়। তখনো সিনহার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।
৬। ২০১৭ সালে এস কে সিনহার মাধ্যমে সরকার পতনের জন্য জুডিশিয়াল ক্যু করার ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায়। সে সময় এস কে সিনহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ দেশের বিচারপতিদের ডেকে ৫টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেছিলেন। এরপর সিনহা দেশত্যাগ করে চলে গেলেন, পদত্যাগপত্র দিলেন কিন্তু সাবেক এই বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনো তদন্তই করা হলো না। দেশের সাংবিধানিক অভিভাবক ও দেশের প্রধান ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ করার পর এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল ডিভিশনের বিচারকগণ সিনহার সঙ্গে এক বেঞ্চে বসতে অস্বীকৃতি জানানোর পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব ছিল এই অভিযোগগুলো দ্রুত তদন্ত করা। কিন্তু এই পদক্ষেপগুলো সময়মতো নেয়নি সরকার। দুদক গত এক বছরে কোনো তদন্তই করেনি সিনহার বিরুদ্ধে।
সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিষয়ে একের পর এক ভুল করে গেছে সরকার। সরকারের উচিত ছিল অনেক আগেই সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর তদন্ত করে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা, এবং এক্ষেত্রে তিনি দেশে না বিদেশে আছেন তা বিবেচনায় না নেওয়া। তাহলে আজকে বই লিখে দেশ ও সরকারের ভাবমূর্তি হুমকির মুখে ফেলা সিনহার পক্ষে সম্ভব হতো না। এস কে সিনহার ব্যাপারে সরকারের করা ভুলগুলোর ফলে সিনহার বইটি এখন আন্তর্জাতিক বাজারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি সরকার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করে তাহলে মনে করা হবে সরকার প্রতিহিংশাবশত তদন্ত করছে। আর এভাবে সিনহার দুর্নীতির বিষয়টি আড়াল হয়ে যাবে। অথচ সাবেক এই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত ছিল অনেক আগেই। প্রধান বিচারপতি নিশ্চয়ই সবকিছুর উর্ধ্বে নয়। সময়মতো সিনহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক
লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল আজ শুক্রবার।
১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল আজকের এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষক লীগের ৫২ বছর পূর্তি
উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু কৃষক নেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে
কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় ব্যারিস্টার বাদল রশিদকে
সভাপতি ও আব্দুর রউফকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক
লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম
স্মৃতিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ
সমীর চন্দ দলের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
এসময় তিনি বলেছেন, দেশের কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষার
জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক
লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কৃষক লীগ কৃষকদের সংগঠিত করা, তাদের দাবি আদায়
এবং দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।
আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টায় সংগঠনটির ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
উপলক্ষে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা এবং দলীয়
পতাকা উত্তোলন। এছাড়াও সকাল ৭টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ধানমন্ডির ৩২ পর্যন্ত শোভাযাত্রা।
সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ
হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর কর্মসূচি রয়েছে।
এদিন বিকাল ৩টায় কৃষি ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করবেন কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।
কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।