নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি প্রচেষ্টা ছিল লক্ষণীয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে একসঙ্গে আনার প্রচেষ্টা ছিল সবার মধ্যে। দুই নেত্রীকে বৈঠকের টেবিলে একসঙ্গে বসানোর চেষ্টা করেছেন অনেকেই। তৎকালীন প্রভাবশালী সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ দুই নেত্রীর বৈঠক আয়োজনে অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর মতো অনেক উদ্যোক্তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার পরও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের মধ্যে মাত্র তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়কার নেতৃবৃন্দরা বলেন, দুই নেত্রীই একসঙ্গে বৈঠকে অনাগ্রহী ছিলেন। এরপরও জাতির বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা দুই নেত্রীর মধ্যে তিনটি বৈঠক হয়। প্রথম বৈঠকটি হয় রাজধানীর মহাখালীতে। দুই নেত্রীর মধ্যেকার দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় রাজধানীর গুলশানে। আর সংসদীয় গণতন্ত্র সংক্রান্ত সংশোধনী পাশ হওয়ার সময় তৃতীয় ও শেষ বৈঠক হয় দুই নেত্রীর।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়ই দুই নেত্রীর একসঙ্গে বসার অনাগ্রহের কথা রাজনীতির অঙ্গনের মানুষরা তো জানেই, সাধারণ মানুষেরও অজানা ছিল না। ওই সময় অনেক কথাই প্রচলিত হয়, ‘দুজই নেত্রী তো, নারীতে নারীতে বৈঠক কি আর হয়, নারীরা এক হতে পারে না, নারীদের মধ্যে ঝগড়া বেশি- এমন অনেক নারীবিদ্বেষী মন্তব্য প্রায়শই শোনা যেত।
বর্তমান পরিবর্তিত সমাজ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পুরুষ রাজনীতিবিদদের মধ্যেও বিরোধ কিন্তু কম না। অনেক প্রবীণ পুরুষ রাজনীতিবিদের মধ্যে বিরোধ আজ প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বর্তমান সময়ের আলোচিত দুই ব্যক্তিত্ব ড. কামাল হোসেন ও বি. চৌধুরীর দিকেই আঙ্গুল তাক করেন অনেকে। বিশ্লেষকরা বলেন, নারীদের মধ্যেকার বিরোধের চেয়েও প্রকট পুরুষের। নারীদের বিরোধ বোঝা সহজ। মুখের ওপর না বলে দিয়ে বিরোধের প্রকাশ করে দেয়। কিন্তু পুরুষরা মুখে বলে এক আর করে আরেক। ড. কামাল ও বি. চৌধুরীর মধ্যেকার বিরোধেও যে এমনটাই দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন তাঁর বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি খালেদা জিয়ার স্বামী সাবেক সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। আর বঙ্গবন্ধুর রক্তের ওপর দিয়ে গঠিত দল বিএনপি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে আদর্শগত দিক থেকে ফারাক বিস্তর। আওয়ামী লীগ তাই শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার-দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্পষ্ট। এরপরও শুধু জাতির বৃহত্তর স্বার্থে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু ড. কামাল হোসেন ও বি. চৌধুরীর মধ্যে এমন কোনো বিরোধ নেই। তারপরও কেন একজন আরেক জনের কাছে এতটা অসহ্যের। বিশ্লেষকদের মতে, দুই প্রবীণের মধ্যেকার বিরোধের পুরোটাই কে বড়, কে নেতা, কে ঐক্যের নেতৃত্ব দেবে তাই নিয়ে।
গত বছরের শেষদিকে দেশব্যাপী রোল ফেলে দিয়ে বি. চৌধুরী গঠন করলেন যুক্তফ্রন্টে। যেখানে যাওয়ার কথা ছিল গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। দীর্ঘ আট মাস সেই জোটে ‘তিনি নেই’ বলেই জানিয়ে আসছিলেন থাকেন ড. কামাল। অবশেষে দেশে নির্বাচনের রব উঠতেই ড. কামাল হোসেন আবার বি. চৌধুরীর সঙ্গে বসে ঘোষণা দিলেন রাজনৈতিক ঐক্যের। কিন্তু এ যেন নতুন করে দুজনের আবার বিরোধের শুরু। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠনের শুরুতে বি. চৌধুরীর বাসায় হাজির হন ড. কামাল। ওই সময় বলেন, তিনি সাদা কাগজে লিখে দেন আমি স্বাক্ষর করতেও প্রস্তুত। কিন্তু এরপর আবার অনেক দিন নিরুদ্দেশ ড. কামাল হোসেন। বোঝাই যাচ্ছিল অন্যের নেতৃত্ব যেতে ড. কামাল শুচিবায়ু। এরপর হঠাৎ করেই কামাল হোসেনের বাড়িতে হাজির বি. চৌধুরী। ড. কামালকে বললেন, আপনিই ঐক্যের নেতা। অমনি উদ্যোগী হয়ে পড়লেন ড. কামাল। কিছুদিন না যেতে যেতেই নেতৃত্ব নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠলেন বি. চৌধুরীও। জোটে দল ভেড়ানোর জন্য নানা শর্ত দিলেন। বি. চৌধুরীর এমন শর্ত প্রদানকে যেন নিজের নেতৃত্বের ওপর খবরদারি হিসেবেই নিলেন ড. কামাল। মুখ ভার তাঁর। ড. কামালের এমন মনোভাবে হতাশ হলেন বি. চৌধুরী। তিনি যেন হঠাৎ করেই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন। সবখানেই ড. কামাল আর যুক্তফ্রন্টের অন্যান্যরা উপস্থিত। কোথাও নেই যুক্তফ্রন্টের মূল নেতা বি. চৌধুরী। জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন হলো যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায়। অথচ বি. চৌধুরী অর্ধেক রাস্তা এসেও সেদিন ফিরে গেলেন। যোগ দিলেন না সংবাদ সম্মেলনে। আবার ড. কামালের বাসায় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের বৈঠক হলো কিন্তু অনুপস্থিত বি. চৌধুরী। বিএনপি ঐক্য প্রক্রিয়া যোগ দেওয়ার কথা জানাল। তখনও নেই ঐক্যের অন্যতম নেতা বি. চৌধুরী। বিএনপিকে নিয়ে মহানগর নাট্যমঞ্চে জনসভা আয়োজন হল। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে নাগরিক সভায় বিএনপি ও যুক্তফ্রন্ট নেতাদের অনুরোধে যেন যেন ঢেঁকি গিললেন বি. চৌধুরী। অবশ্য সভা শুরুতে দেড় ঘণ্টা পর সেখানে যান বি. চৌধুরী। এর পরপরই জাতীয় ঐক্যের নেতৃত্বের সুতোটা আবার যেন বি. চৌধুরীর দিকে যেতে থাকে। বি. চৌধুরীও একের পর এক শর্ত দিয়েছেন বিএনপির ঐক্যে যোগদান নিয়ে। বি. চৌধুরীর এমন হস্তক্ষেপকে যেন খবরদারি হিসেবেই নিলেন ড. কামাল। মঙ্গলবার বিকেলে ড. কামালের বাড়িতে ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ড. কামালের বাসায় গিয়ে বৈঠকে অস্বীকৃতি জানান বি. চৌধুরী। পরে ওই বৈঠক আর হয়নি। অবশ্য ওই রাতেই বৈঠক বসে বি. চৌধুরীর বাড়িতে। তখন অসুস্থতার কথা বলে সেই বৈঠকে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন ড. কামাল। দুই নেতার দ্বৈরথের সর্বশেষ অবস্থা হলো বি. চৌধুরী দেশে। কিন্তু অসুস্থতার জন্য ড. কামাল চলে গেছেন সিঙ্গাপুর।
ঐক্য নিয়ে বিরোধের দুই নেতার বিরোধের বিষয়টি কৌতুহলউদ্দীপক বলেই মানছেন বিশ্লেষকরা। অবশ্য তাঁদের মধ্যে মিলও যে অনেক। দুজনই মূল ধারা থেকে ছিটকে পড়া রাজনীতিবিদ। আর মূল ধারা থেকে ছিটকে পড়ে দুজনই রাজনীতি অব্যাহত রাখলেও অর্জনের খাতা এখনো শূন্য।
এতদিন যাঁরা বলতেন দুই নেত্রীর জন্য রাজনীতিতে যত সমস্যা, ড. কামাল-বি. চৌধুরী নিয়ে এখন তারা নতুন করে শঙ্কা দেখতেই পারেন। কারণ দুই পুরুষের নেতৃত্ব যে কত ভয়াবহ হতে পারে ড. কামাল-বি. চৌধুরীর এরই মধ্যে দেশবাসীকে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।