নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল। এরপর ২০০৮ সাল থেকে টানা দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ করতে যাচ্ছে। এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। যেমন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচার, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বিডিআর বিদ্রোহ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা-সেতুর কাজ, বিনা রক্তপাতে ভারতের সঙ্গে ৬৮ বছরের পুরোনো ছিটমহল বিনিময় চুক্তি, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধের পথে না গিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার সিদ্ধান্ত, গণজাগরণ মঞ্চ, হেফাজতে ইসলামের মতিঝিল তাণ্ডব, সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবেলা, মিয়ানমারের ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কোটা সংস্কার আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন উল্লেখযোগ্য।
এখন প্রশ্ন হলো এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কে পরামর্শ প্রদান করেন? প্রধানমন্ত্রী কার সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা করেন এইসব বিষয়ে? কারও কারও মতে, প্রধানমন্ত্রীকে হয়ত কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন, তবে তা পর্দার আড়াল থেকে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট সকলের কথা শুনে নিজেই সাহসী এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।
সরকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বা দল পরিচালনায় সবার কথাই শোনেন মনোযোগ দিয়ে। দলীয় বিষয়ে তৃণমূলের কথা শোনেন বেশি। তবে সার্বিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কারও ওপর তিনি নির্ভর করেন না।
সরকারের যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সেখানে মন্ত্রীরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের কথা শুনে ভালো-মন্দ বিচার করে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংশয় দেখা দিলে অন্য কোনো ব্যক্তির পরামর্শও নিতে পারেন।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে পরামর্শ ও আলোচনা করতেন প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, আবদুল হামিদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, তোফায়েল আহমেদ এবং প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ প্রবীণ আওয়ামী লীগের কিছু নেতার সঙ্গে।
এরপর ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা সংস্কারপন্থী তালিকায় নাম লেখান। যার ফলে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদের আওয়ামী লীগের প্রবীণ এইসব নেতাদের উপর আর ভরসা রাখতে পারেন নাই। এই পর্যায়ে শেখ হাসিনা আলোচনা ও পরামর্শের জন্যে নির্ভর করেন এইচ. টি. ইমাম, মতিয়া চৌধুরী, গওহর রিজভী ও তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীসহ আরও কিছু ব্যক্তির উপর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আলোচনা ও পরামর্শ করেন বলে জানা যায়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর এক বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘আমার পরিবার বলতে আমি ও আমার ছোট বোন রেহানা এবং আমাদের ৫ ছেলে-মেয়ে। এর বাইরে আমাদের কোনো পরিবার নেই।’ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও আলোচনা করেন ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে। তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে পরামর্শ নেন তাঁর একমাত্র পুত্র সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের। স্বাস্থ্য বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পরামর্শ নেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কয়েকজন উপদেষ্টা রয়েছেন। তবে তাঁদের প্রায় সবাই কাগজে-কলমেই শুধু উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। কোনো বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ করলেও সার্বিক বিষয়ে কারও ওপর ভরসা না করে, নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন