নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বিএনপির ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কৌশল কী? রাজনৈতিক অঙ্গনে এ এক মূল্যবান প্রশ্ন। যদিও প্রধানমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনার কোনো উদ্যোগ আওয়ামী লীগ নেবে না।’ তিনি এটাও স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘নির্বাচনে আনতে কাউকে অনুরোধ করা হবে না।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।’ প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই মন্তব্যের ব্যাপারে বিএনপিও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিএনপি বলেছে, আওয়ামী লীগ চায় না বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসুক। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আবার ২০১৪ সালের মতো একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। এজন্য তারা বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়।’ কিন্তু আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন চায় না। বরং বিএনপিকে নিয়েই নির্বাচন করতে চায়।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে একাধিক কূটনীতিক, সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে এবং সব দল তাতে অংশগ্রহণ করবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগ একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছে, গত একমাসে বিএনপিকে দু’টি জনসভা করতে দেওয়া হলো। অথচ, এর আগে পাঁচ বছরে তারা ঢাকায় মাত্র একটি জনসভা করার অনুমতি পেয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে এবং তারা যেন নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়, সেজন্যই এখন বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। একদিকে বিএনপিকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে বিএনপির তৃণমূল এবং মধ্যস্তরের নেতাদের ধরপাকড়ের হার বেড়েছে। গত একমাসে হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ বেশ কিছু তরুণ বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এরা সবাই কট্টরপন্থী। নির্বাচন বিরোধী শক্তিকে দুর্বল করা এবং আন্দোলনের শক্তি দমাতেই এই নতুন ধরপাকড় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। একটু অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো এখন স্থবির হয়ে আছে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মামলার অগ্রগতি নেই। আবার বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকারের দৃশ্যমান তৎপরতা রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া যেন নির্বাচন থেকে দূরে থাকেন, সে ব্যাপারে আইনগত ভাবে যা যা করা দরকার সবই সরকার করছে। অন্যদিকে বর্তমান বিএনপি নেতারা যেন নির্বাচনের আগে অযোগ্য না হন সে চেষ্টাও লক্ষণীয়। আওয়ামী লীগ বেগম জিয়ার ব্যাপারে যতটা আক্রমণাত্মক, অন্যান্য নেতাদের ব্যাপারে ততটাই উদার।
বিএনপির ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনাগুলো বিশ্লেষণ করলে, এরকম ধারণা করা যায় যে, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে চাইছে। কিন্তু ঐ নির্বাচনে যেন বেগম জিয়ার কোনো ভূমিকা না থাকে, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে চাইছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।