নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০২ পিএম, ০৩ অক্টোবর, ২০১৮
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে আগামী ১০ অক্টোবর। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াসহ একাধিক নেতার এই রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হবার আশঙ্কা থাকায় রায়ের আগেই ঢাকায় ৯ ও ১০ অক্টোবর একটি বড় ধরনের শো ডাউন করতে চাইছে দলটি। কিন্তু রাজপথে শো ডাউন কখনোই বিএনপির একার সামর্থ্যে কুলিয়ে ওঠে না। সেজন্য তাদের জামাতের সাহায্য ও সমর্থনের প্রয়োজন হয়। তাই শো ডাউনের পরিকল্পনা সফল করতে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জামাতের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির নেতারা। বৈঠকে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের আগে ঢাকা অচল করতে জামাতের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপির এই প্রস্তাবে আগ্রহ দেখায়নি জামাত। শো ডাউনে সাহায্য করার প্রস্তাবে বিএনপিকে না করে দিয়েছে তারা।
এই বিষয়ে জামাতের বক্তব্য হচ্ছে, যখন একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের বিচার হয় তখন বিএনপিকে পাশে পায়নি দলটি। জামাতের শীর্ষ নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মতিউর রহমান নিজামী প্রমুখের বিচারের সময় বিএনপি কোনো বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। এমনকি জামাতের ডাকা হরতালেও তখন সমর্থন জানায়নি বিএনপি। তাই এখন তারেক জিয়ার বিচারের সময় বিএনপিকে সহায়তা করতে নারাজ জামায়াতে ইসলামী। জামাতের বিপদের সময় বিএনপি তাদের সাহায্য করেনি বলেই এখন দলটি বিএনপির বিপদে সাহায্য করতে রাজি নয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
বিএনপি-জামাতের পুরনো হিসাব-নিকাশ বিএনপিকে সহায়তায় জামাতের অনিচ্ছার পেছনে একটি বড় কারণ হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা জামাতের ‘না’ এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সাম্প্রতিক সময়ে জামাত নিয়ে বিএনপির গৃহীত অবস্থানকে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছুদিন আগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠন করেছে গণফোরাম, যুক্তফ্রণ্টসহ বেশ কয়েকটি দল। সেই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয় কিন্তু তাদের সামনে শর্ত রাখা হয় দলটি যেন জামাতকে ত্যাগ করে। এই শর্তানুসারে গত রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে রাখা হয়নি জামাতকে। এর আগে মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বানে অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশও জামাতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এসব ঘটনায় জামাত বুঝতে পেরেছে, সুবিধা আদায়ের জন্য তাদেরকে যে কোনো সময় ত্যাগ করতে পারে বিএনপি। তাই বিএনপিকে সাহায্য করার প্রস্তাবে না করে দিয়েছে জামাত।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি আয়োজিত পল্টনের জনসভা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় বিএনপির অন্যান্য জনসভার তুলনায় কম লোক হয়েছে। জামাতকে বাদ দিয়ে কর্মসূচি দেওয়ায় বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে লোকের উপস্থিতি কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ দীর্ঘদিনের মিত্র জামাতের নেতাকর্মীরা বিএনপির অন্যতম শক্তি হিসেবে বিবেচিত। এমন অবস্থায় জামাতের সহযোগিতা ছাড়া আগামী ৯ ও ১০ অক্টোবর বিএনপির ঢাকা অচলের যে পরিকল্পনা রয়েছে তা কতটুকু সফল হবে এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে দেশের রাজনৈতিক মহল।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।