নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ অক্টোবর, ২০১৮
নির্বাচনে যেতে বিএনপি সাত দফা শর্ত দিয়েছে। প্রতিদিন বিএনপির কোনো না কোনো নেতা বলছেন, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু ভেতরের খবর হলো, বিএনপি অন্তত ১০০ আসনের গ্যারান্টি চায় সরকারের কাছে। এমন গ্যারান্টি পেলেই তাঁরা নির্বাচনে যেতে রাজি। মুখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি করছেন বিএনপি নেতারা। বলছেন, জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে কিন্তু ভেতরে বিএনপিই চায় একটি পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচন। যে নির্বাচন থেকে তাঁরা শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। বিএনপির অনেক নেতাই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে এনিয়ে দেন দরবার করছেন।
শুধু সরকার নয়, কূটনীতিকদের কাছেও বিএনপি আগাম আসনের গ্যারান্টি চাইছে। বিএনপির আশঙ্কা, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে অবাধ, সুস্থ ভোট হবে না। সরকার যেভাবে চাইবে নির্বাচনও তেমনি হবে। সম্প্রতি ইউরোপের একটি কূটনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির একজন নেতা দাবী করেছেন, কোন আসনে কে জিতবে, তা ঠিক করবে সরকার, জনগণ নয়। যদিও ভোটের এই মেকানিজম কীভাবে সম্ভব, এমন প্রশ্নের জবাব ওই নেতা দিতে পারেননি। তবে, বিএনপির প্রায় সব নেতাই বলেছেন, আগামী নির্বাচন আসলে হবে সিলেকশন। সরকার যেভাবে চাইবে সেভাবেই জয় পরাজয় নির্ধারিত হবে।
একজন বিএনপি নেতা বলেছিলেন, এবার নির্বাচন ফলাফল হবে ‘টেবিল মেড’। তবে তা এমন সূক্ষ্মভাবে করা হবে যে, সাধারণ মানুষ মনে করবে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। ওই নেতা খুলনা এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে বলেন ‘ঐ নির্বাচন ছিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ড্রেস রিহারসেল। আপাত: দৃষ্টিতে ঐ নির্বাচনে কোনো সহিংসতা হয়নি। বাইরে থেকে ভোট হয়েছে উৎসবমুখর। কিন্তু ভেতরে ভেতরে নির্বাচন হয়েছে শাসক দলের ইচ্ছা অনুযায়ী।’ কিন্তু কি কারচুপি হয়েছে, কোথায় কারচুপি হয়েছে সে ব্যাপারে বিএনপি নেতারা কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারছেন না। মার্কিন দূতাবাসও খুলনা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রমাণের অভাবে এ নিয়ে আর প্রশ্ন তোলেননি। তবুও বিএনপি মনে করছে, আগামী নির্বাচনের ছক সাজানো হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, এরকম সন্দেহের পরও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। ঐ নির্বাচনে অন্তত ১০০ আসনে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হবে এমন গ্যারান্টি চায়। অবশ্য আওয়ামী লীগের তরফ থেকে এসব গ্যারান্টি দেওয়া সম্ভব নয় বলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যাদের সঙ্গে বিএনপি নেতারা যোগাযোগ করেছেন, তাঁরাই বলেছেন, ‘নির্বাচন হবে জনগণের ভোটে। এতে আগাম আসন বণ্টন অসম্ভব। কিন্তু কে শোনে কার কথা, যে ১০০ আসনে বিএনপি জয়ী হতে চায়, তার তালিকাও তৈরি হয়ে গেছে। এই তালিকা নিয়েই বিএনপি প্রভাবশালীদের সঙ্গে কথা বলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর এরকম নির্বাচনে যেতে সবচেয়ে আগ্রহী হলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আর ড. খন্দকার মোশাররফ। যে ১০০ আসনে বিএনপি গ্যারান্টি চেয়েছে তাতে এই তিন নেতার আসনও রয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।