ইনসাইড পলিটিক্স

হাসপাতালে খালেদা জিয়া: কার লাভ, কার ক্ষতি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ০৬ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে আজ শনিবার। বিকেল ৩টার দিকে কড়া প্রহরায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরানো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের  (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই খালেদা জিয়া দাবি করে আসছিলেন তিনি অসুস্থ। এ কারণে হাসপাতালেও যেতে চাচ্ছিলেন তিনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার তাঁকে প্রথমে বিএসএমএমইউ এবং পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকেন। পরবর্তীতে খালেদার চিকিৎসার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে বিভিন্ন ঘটনার পর শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এর আগে তিন দফা চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন। কিন্তু বিশেষ কোনো শারীরিক সমস্যা পাওয়া যায়নি। খালেদা জিয়া যতটুকু অসুস্থ ছিলেন, বার্ধক্যে এরকম অসুস্থতা থাকেই। তারপরও তিনি হাসপাতালে, বিশেষ করে ইউনাইটেড হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, যেসব সুবিধার জন্য তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন সেই সুবিধাগুলো বিএসএমএমইউতে তিনি কতটুকু পাবেন। আরেকটি প্রশ্নও দেশের রাজনীতি অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে – খালেদা জিয়া কি অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন নাকি তাঁর হাসপাতালে যাওয়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ ছিল? কারণ যাই হোক, খালেদা জিয়া আজ থেকে হাসপাতালে থাকছেন।

হাসপাতালে যাওয়ায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির লাভ

পছন্দের হাসপাতাল ইউনাইটেডে যেতে না পারলেও বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়া কারাগারের চেয়ে ভালো অবস্থায় থাকবেন একথা নিশ্চিত। আর এটাই আসলে চাইছিল খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপি। হাসপাতালে গেলে আরও কিছু সুবিধা তিনি পাবেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

১। খালেদা জিয়া হাসপাতালের ভিআইপি ব্লকে থাকবেন। বিএসএমএমইউতে ভর্তি হওয়ার একটি বড় সুবিধা হলো, সেখান থেকে খালেদা জিয়া বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, যোগাযোগ করতে পারবেন। ওয়ান-ইলেভেনের মতো ঘটনাগুলোর সময় দেখা গেছে, কারাবন্দী রাজনৈতিক নেতারা বঙ্গবন্ধুতে ভর্তি থাকা অবস্থায় নিজ নিজ কর্মীদেরকে সহজেই বার্তা দিতে পেরেছেন। বিষয়টি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এছাড়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের চিকিৎসকদের বিরাট একটি অংশও বিএনপিপন্থী। তাই খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুতে থাকাকালীন দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে একাদশ নির্বাচনে যাওয়া, না যাওয়া বিএনপির একটি বড় ইস্যু। আগামী ১০ অক্টোবর আবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে যাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দণ্ডিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি খালেদা জিয়ার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের তুলনায় বিএসএমএমইউতে সহজতর হবে, তাই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খালেদা জিয়ার কারাগার থেকে মেডিকেলে যাওয়া তাঁর ও তাঁর দলের জন্য একটি বড় সুবিধা বলে গণ্য হবে। 

২। নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে যে পরিবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন সে পরিবেশে খালেদা জিয়া স্বচ্ছ্বন্দ্য ছিলেন না। আজীবন বিলাস-ব্যাসনে অভ্যস্ত খালেদা জিয়া। কিন্তু কারাগারে তাঁর কক্ষে এয়ার কন্ডিশনার ছিল না, তাঁকে চৌকিতে ঘুমাতে হতো। কিন্তু বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়া ভিআইপি কেবিনে থাকবেন। সেখানে সকল ভিআইপি সুবিধাই থাকবে। উন্নত পরিবেশে ফিরে আসাও খালেদা জিয়ার জন্য একটি বড় সুবিধা হতে যাচ্ছে।

৩। কারাগারে খালেদা জিয়াকে জেলের খাবারই খেতে হতো। বিশেষ কোনো খাবারের বন্দোবস্ত ছিল না তাঁর জন্য। কিন্তু তিনি যখন হাসপাতালে আসবেন চিকিৎসকদের অনুমতি সাপেক্ষে তাঁকে বাড়ির তৈরি খাবারও দেওয়া হতে পারে। এটি খালেদা জিয়ার জন্য একটি বড় লাভ।

৪। কারাগারে থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়া কারাগারের লোকজন ছাড়া কারও সঙ্গে সহজে দেখাসাক্ষাৎ করতে পারতেন না। মাসে দুদিন দর্শনার্থী ছাড়া কারও সঙ্গে দেখা করার সুযোগ ছিল না তাঁর। কিন্তু বিএসএমএমইউতে তাঁকে দুইজন পছন্দের চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে, দেওয়া হয়েছে পছন্দের টেকনিশিয়ান। তাই হাসপাতালে তিনি অনেকটাই মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারাও খালেদা জিয়া ও তাঁর দলের জন্য একটি বড় লাভ।

খালেদা জিয়া হাসপাতালে যাওয়ায় বিএনপির ক্ষতি, সরকারের লাভ

খালেদা জিয়া হাসপাতালে যাওয়ায় শুধু যে তাঁর ও তাঁর দল বিএনপিরই লাভ হয়েছে তাই নয়, এ ঘটনায় সরকারেরও কিছু লাভ হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

১। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া আওয়ামী লীগের একটি কৌশলগত বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। খালেদা জিয়া অনড় ছিলেন, তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া চিকিৎসা গ্রহণ করবেন না। আর সরকার অনড় ছিল, খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতাল বা অন্য কোনো বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হবে না। খালেদা জিয়া অস্বীকৃতি জানালেও গত চারমাস ধরে তাঁকে বারবার বিএসএমএমিউতেই ভর্তি হতে বলছে সরকার। শেষ পর্যন্ত সরকারের অবস্থানটিই খালেদা জিয়া মানতে বাধ্য হলেন। এতে আপোষহীন নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার যে পরিচিতি তা ঠুনকো হয়ে গেল।

২। খালেদা জিয়ার হাসপাতালে আসার মধ্য দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে লাভবান হবে সরকার। সরকারের কাছে খবর আছে খালেদা জিয়াই বিএনপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্বাচনমুখী। যে কোনো মূল্যে নির্বাচনে যেতে চান খালেদা জিয়া, এমনকি যদি তাঁর মুক্তি না হয় তবুও। সম্প্রতি খালেদা জিয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঈদের পরেরদিন একান্ত বৈঠক করেছেন। সেখানেও তিনি নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপির তারেক জিয়া প্রভাবিত তরুণ অংশটি নির্বাচনে যাওয়ার বিপক্ষে। দাবিদাওয়া অর্জিত না হলে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী নয় তাঁরা। এমন অবস্থায় খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন এবং দলকে নির্বাচনমুখী করতে ভূমিকা পালন করতে পারবেন। যেহেতু দলের মধ্যে তারেকের চেয়ে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বেশি তাই দলকে নির্বাচনমুখী করতে খালেদা জিয়ার বার্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার।

৩। বিএসএমএমইউতে বিএনপির বিভিন্ন নেতারা যখন গোপনে যোগাযোগ করবে তখন দলে কার কী অবস্থান তা সরকারের সামনে উন্মোচিত হয়ে যাবে। গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে প্রকৃতভাবে বিএনপিতে কে কোন ভূমিকা পালন করছে তা জানতে পারবে সরকার, যা সম্ভব হচ্ছে খালেদা জিয়ার হাসপাতালে যাওয়ার মাধ্যমেই।

৪। নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপি কিছু নূন্যতম অর্জন চাইছিল। খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করে আনা হয়েছে এবং হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে- একে বিএনপি নিজেদের অর্জন হিসেবে দেখাতে পারবে। এমন অর্জন দেখিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি যে সময়টায় কঠোর আন্দোলন করার চিন্তাভাবনা করছিল, তখন খালেদা জিয়া কারাগারের বাইরে আসায় দলটির মধ্যে নমনীয় ভাব চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে আসায় সরকার আন্তর্জাতিক মহলকে দেখাতে পারবে, খালেদা জিয়ার ওপর কোনো নির্যাতন-নিপীড়ন হচ্ছে না। এটাই হবে সরকারের সবচেয়ে বড় লাভ।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ   



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: ভোটে অংশ নেওয়ায় বিএনপির দুই নেতাকে শোকজ

প্রকাশ: ১০:৫২ এএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে।

বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।

গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।

দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।

তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও রিসিভ হয়নি।


উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি   শোকজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন