নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৫ পিএম, ০৮ অক্টোবর, ২০১৮
দীর্ঘ আট মাস কারাবাসের পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গত শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়। মাত্র দুই রাত বিএসএমএমএইউতে কাটিয়েছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু দুদিন জেলখানার বাইরে থেকেই চাঙ্গা হয়ে গেছেন তিনি, ফিরে এসেছেন নিজের পুরনো মূর্তিতে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাড়ি গোপালগঞ্জে হওয়ায় ওই এলাকার মানুষের ওপর তীব্র ক্ষোভ খালেদা জিয়ার। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালেও তাঁর চিকিৎসা কার্যে নিয়োজিত কারও বাড়ি ওই এলাকায় নাকি তা জানতে চেয়ে খালেদা জিয়া জেরবার করে দিচ্ছেন সবার জীবন। সবাইকে নাকি তিনি জিজ্ঞেস করছেন ‘তুমি কি গোপালী?’ অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কারাবাসের দুঃসহ স্মৃতি পেছনে ফেলেছেন তিনি। বর্তমানে খালেদা জিয়ার হুংকারে হুংকারে প্রকম্পিত হাসপাতালের কম্পাউন্ড।
সাধারণত, হাসপাতালে নার্স-ডাক্তারদের ৮ ঘণ্টা ডিউটি থাকে। খালেদা জিয়া যেহেতু ভিআইপি রোগী এবং দুই বারের প্রধানমন্ত্রী তাই তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তাঁকে ফুলটাইম নার্স দেওয়া হয়েছে। এই ফুলটাইম নার্সরা চক্রাকারে দায়িত্ব পালন করেন, দিনে তিন বার তাঁদের ডিউটি বদলায়। সে হিসেবেই শনিবারের ডিউটিতে ছিলেন পারুল নামের এক নার্স। সেদিন পারুলকে দেখেই বেগম জিয়ার অনুসন্ধিৎসু মন মাথা চাঁড়া দিয়ে ওঠে। তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’ পারুল প্রথমে উত্তর দেননি। অনুসন্ধিৎসু বেগম জিয়া এবার ক্ষুব্ধ হলেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘অ্যাই, তুমি কি গোপালী নাকি?’ এবার পারুল উত্তর দিল। বলল, ‘জি না ম্যাডাম। আমার বাড়ি মাদারীপুর।’ খালেদা জিয়া আঁতকে উঠলেন। গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর বা ফরিদপুর এলাকার মানুষদের তিনি বিশ্বাস করেন না। ওই নার্সের কাছ থেকে সেবা নিতে তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। শেষ পর্যন্ত ওই নার্সের সঙ্গে আর দেখা করেননি খালেদা।
খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠরা জানেন, গোপালগঞ্জ ও এর আশেপাশের এলাকার মানুষের ব্যাপারে খালেদা জিয়ার আজীবনের ভয় রয়েছে। ওই সব এলাকার মধ্যে কারও বাড়ি জানলেই তিনি ক্ষুব্ধ হন। ধমকাধমকি করে বলেন, তুমি তো আমাকে মেরে ফেলবে। কারাবাসের ঝক্কিতে মাঝখানে বিষয়টি কমে গিয়েছিল। কিন্তু মুক্ত আলো-বাতাস গায়ে মেখে খালেদা জিয়া আবার তাঁর পুরনো ফর্মে ফিরে এসেছেন।
এছাড়া খাওয়া দাওয়া নিয়েও খালেদা জিয়ার বায়নাক্কায় অস্থির বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। কারাগার থেকে খালেদার জন্য যে খাবার এসেছে সে বিষয়ে তিনি তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। কারাবিধি অনুসারে কারাবন্দিদের জন্য থোক টাকা বরাদ্দ থাকে। সেই টাকা থেকে একজন কারাবন্দী যে কোনো জিনিস কিনতে পারেন। খালেদা জিয়া এখন বায়না ধরেছেন, ওই টাকা দিয়ে তাঁর জন্য হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ থেকে স্যান্ডউইচ, স্যুপসহ অন্যান্য খাবার এনে দিতে হবে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এমন আবদার পূরণে অসমর্থ। তাই এ বিষয়ে তাঁরা কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার কাছে খাওয়া-দাওয়ার তালিকা চেয়েও বিফল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারণ এখন পর্যন্ত কোনো তালিকা দেননি খালেদা জিয়া। তবে প্রয়োজনীয় কাজগুলো না করলেও সারাক্ষণই তিনি তর্জন-গর্জন করছেন, হম্বিতম্বি দেখাচ্ছেন তাঁর চিকিৎসা সেবায় দায়িত্বরতদের ওপর। কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হওয়া স্বত্ত্বেও ইতিমধ্যে হাসপাতালের কয়েকজনের চাকরিও খেয়ে ফেলেছেন তিনি। মানে বেশ কয়েকজনকে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘ক্ষমতায় গেলে তোমার চাকরি খাব।’
খালেদা জিয়ার মূল চিকিৎসা তো এখনো শুরুই হয়নি। এরই মধ্যে তাঁর তর্জন-গর্জনে তটস্থ হয়ে পড়েছে হাসপাতালের সবাই।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।