নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৪ এএম, ১১ অক্টোবর, ২০১৮
১৪ বছর প্রতীক্ষার পর অবশেষ গতকাল বুধবার বাংলাদেশের ইতিহাসের বর্বরতম হামলা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে ফাঁসির আদেশ এবং আরও ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদাণ করা হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন গ্রেনেড হামলার মাস্টার মাইন্ড ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া।
তারেক জিয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে বিএনপি ঘরানার কিছু লোক ব্যাতীত সবাই হতাশ। কারণ ঘটনার মূল হোতা হিসেবে তারেকের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থ্যাৎ ফাঁসিই প্রত্যাশিত ছিল সবার। তবে তারেকের ফাঁসির আদেশ না হওয়াকে শাপে বর বলেই মনে করছেন অনেক আইনজ্ঞ ও কূটনীতিকরা। তাঁদের মতে, গতকালের রায়ে যদি তারেক জিয়ার ফাঁসির আদেশ হতো তাহলে যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব হয়ে পড়তো। কারণ যুক্তরাজ্যের হিউম্যান রাইটস চার্টার্ড অনুযায়ী, যদি দেশটিতে অবস্থানকারী কোনো বিদেশী নাগরিককে তাঁর নিজের দেশে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাহলে তাঁকে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ আর ওই দেশে ফেরত পাঠায় না। অর্থ্যাৎ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে তারেকের যদি মৃত্যুদণ্ড হতো তাহলে তাঁকে আর বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতো না যুক্তরাজ্য। এই প্রসঙ্গে মনে রাখা প্রয়োজন, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলো কঠোরভাবে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে। মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে ক্যাম্পেইনও পরিচালিত হয় দেশগুলোতে।
ব্রিটেনের আইনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যার ফলে তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে। ওয়ান-ইলেভেনের জঙ্গি হামলার পর যুক্তরাজ্য সরকার অ্যান্টি টেররিজম অ্যাক্ট প্রণয়ন করে। সেই আইন অনুযায়ী, কারও যদি জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকে এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে যদি কারো কোনো রকম যোগসূত্র থাকে তাহলে সে ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে বসবাসের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
আদালতের রায়ে প্রমাণিত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল একটি জঙ্গি হামলা। হরকাতুল জিহাদের মতো জঙ্গি সংগঠন সেই হামলায় জড়িত ছিল। জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা পাকিস্তানে বসে এই হামলার পরিকল্পনা করেছে তাও তদন্তে প্রমাণিত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি এই মামলার রায়ের আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, আদালতে জঙ্গিদের সঙ্গে তারেকের সম্পৃক্ততার দালিলিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, তারেক জিয়া যুক্তরাজ্যে থাকতে পারবেন না।
তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, অনতিবিলম্বে এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি ব্রিটিশ হাইকমিশনের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। তাহলেই তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই পর্যন্ত যুক্তরাজ্য প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে বলেও জানান তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, তরুণ ছেলেমেয়েরা সিরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়ে আইএসে যোগ দিচ্ছে। এরপর থেকেই যুক্তরাজ্যে জঙ্গিবাদ বিষয়ে আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এই কড়াকড়ির ফলে তারেক জিয়াকে যুক্তরাজ্য ছাড়তেই হবে বলে মনে করছেন কূটনীতকরা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।