নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১২ অক্টোবর, ২০১৮
প্রায় দুমাস ধরে যুক্তফ্রন্ট, ঐক্যপ্রক্রিয়া এবং বিএনপির ঐক্য প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু এই ঐক্য উদ্যোগ বারবার হোঁচট খাচ্ছে। নেতারা দু’মাস ধরেই বলছেন, শিগগীরই ঐক্য হবে। কিন্তু নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত ঐক্য পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারছে না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নানা শর্ত, পারস্পরিক অবিশ্বাস এবং সন্দেহে ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোগ থমকে যাচ্ছে। ঐক্য প্রচেষ্টার অন্যতম উদ্যোক্তা ড: জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক হবার পর নতুন সমস্যা তৈরী হচ্ছে।’ তবে তিনি মনে করেন, ‘বৃহত্তর ঐক্য করতে গেলে এরকম ঘটনা হতেই পারে।’
ঐক্য প্রচেষ্টার একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুলত: ৭টি কারণে ঐক্য প্রচেষ্টা চূড়ান্ত রূপ নিতে পারছে না। এই ৭টি কারণ হলো:
১. বিএনপি জামাত সম্পর্ক: যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু থেকেই বিএনপিকে জামাত ত্যাগের শর্ত দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি জামাতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট অবস্থান জানায় নি। বিএনপি জামাতকে নিয়ে ২০ দল রেখে আবার বৃহত্তর ঐক্যে যোগ দিতে চাইছে। এটা অনেকেই মানতে রাজী না।
২. তারেকের নেতৃত্ব: প্রকাশ্যে না বললেও, তারেক জিয়ার ব্যাপারে অস্বস্তির কথা বলছেন যুক্তফ্রন্ট এবং জাতয়ি ঐক্যের অনেক নেতাই। বিশেষ করে, ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলা রায়ের পর বিএনপিতে তারেকের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হত্যার দায়ে দণ্ডিত একজন ব্যক্তি যদি একটি দলের নেতৃত্বে থাকেন, তাহলে তার সঙ্গে ঐক্য কিভাবে সম্ভব? এই প্রশ্ন উঠেছে।
৩. মাহির ভূমিকা: বৃহত্তর ঐক্যের পথে একটি বড় বাধা বলেই মনে করছেন নেতারা। এমনকি যুক্তপ্রন্টের অনেক নেতাও মনে করছেন, মাহির সঙ্গে সরকারের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। মাহি’র ব্যাপারে বিএনপি প্রকাশ্যে আপত্তি জানিয়েছে।
৪. ড. কামালের রহস্যময় ভূমিকা: ড. কামালকেই বৃহত্তর ঐক্যের নেতা মনে করা হয়। কিন্তু ড. কামালের আচরণ ‘রাজনৈতিক নয়’ এমনটাই মনে করেন যুক্তফ্রন্টের অনেক নেতা। তিনি সিঙ্গাপুরে গেছেন, কাউকে না বলে। এমনকি, গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকে বাতিল করেছেন কাউকে না বলে। তাঁর এ সিদ্ধান্তকে অনেকে ‘স্বৈরাচারী’ এবং ‘একনায়কতান্ত্রিক’ বলছে।
৫. নির্বাচন না আন্দোলন: এই প্রশ্নটিও বৃহত্তর ঐক্য প্রচেষ্টায় মীমাংসিত নয়। ঐক্যের অনেকেই বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে চায়। অনেকে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার হটাতে চায়। ঐক্য প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত রূপ নিতে না পারার এটিও একটি বড় কারণ।
৬. আসন ভাগাভাগি: আসন ভাগাভাগি ঐক্য প্রক্রিয়ার অনৈক্যের একটি বড় কারণ। যুক্তফ্রন্ট বিএনপিকে ১৫০টি আসন ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। নির্বাচনে জিতলে দু’বছর যুক্তফ্রন্ট দেশ চালাবে, এমন প্রস্তাবও দিয়েছে। যা বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
৭. বিএনপিতে মতবিরোধ: ঐক্যের প্রধান ভরসা বিএনপিই। তাদেরই নিজস্ব সমর্থক, কর্মী এবং ভোট ব্যাংক রয়েছে। কিন্তু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস এরা কেউই বৃহত্তর ঐক্যের পক্ষে নন।
এই সব শর্ত এবং মতবিরোধ কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর ঐক্য হয় কিনা, সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।