নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮
বাইরে সমালোচনা শুরু করলেও ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার যোগাযোগের খবর পাওয়া গেছে। প্রাক্তন আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্তত তিন জন নেতা কথা বলেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্য প্রক্রিয়ায় বিএনপি যুক্ত না করার অনুরোধ করেছে। যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং বামফ্রন্ট মিলে একটি নির্বাচনী প্ল্যাটফর্ম গঠন হলে তা নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা ড. কামাল হোসেনকে বুঝিয়েছেন। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠককারীদের একজন বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে ড. কামাল হোসেনের অভিমান রয়েছে। আমি তাঁর ভুল ভাঙ্গাতে গিয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রচেষ্টাকে আমরা ইতিবাচক ভাবে দেখছি। কিন্তু বিএনপির মতো একটি দল যাঁরা বঙ্গবন্ধু এবং জাতির পিতায় বিশ্বাস করে না, তাঁদের সঙ্গে ঐক্য করার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি।’ ড. কামাল হোসেনও আমাকে বলেছেন, ‘এই বয়সে এসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জলাঞ্জলি দেবেন না।’
যে মুহূর্তে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্যের ঘোষণাপত্র এবং আনুষ্ঠানিক যাত্রা চূড়ান্ত হয়েছে, সেই সময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের যোগাযোগ রাজনৈতিক মেরুকরণে চমক সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন, ‘শেষ পর্যন্ত এই ঐক্য থাকবে না। ড. কামাল হোসেনকে বিএনপি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।’
আওয়ামী লীগ, ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বিএনপি থেকে আলাদা রাখার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলেছেন, ‘যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া মিলে যদি জোটবদ্ধ নির্বাচন করে, তাহলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনেকটাই নিশ্চিত হতে পারে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগ এই ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বিএনপিকে আলাদা করতে চায়। আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটতে পারে। সেক্ষেত্রে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন ৫ জানুয়ারির মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন না হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া দুটি জোটের সঙ্গেই আওয়ামী লীগ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘আজ যদি বিএনপিকে নিয়ে নতুন নামে এই জোট আত্মপ্রকাশ করে, তবুও আমরা ড. কামাল এবং বি. চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবো।’ আওয়ামী লীগ মনে করে, শেষ পর্যন্ত এই জোটে মত পার্থক্য হতে বাধ্য। কারণ আসন ভাগাভাগি এবং আদর্শিক কিছু ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত ঐক্য টিকে থাকা অসম্ভব। অবশ্য যুক্তফ্রন্ট এবং ঐক্য প্রক্রিয়ার একাধিক নেতা বলেছেন, ‘এই দুটি জোটে দু‘পক্ষেরই লোক আছে। এক পক্ষ আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছে। তাঁরাই ‘স্বাধীনতা বিরোধী’ ইস্যু সামনে আনছে। অন্যপক্ষ বিএনপির হয়ে কাজ করছে, যাঁরা নির্দলীয় সরকারের ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলকে এক করে নির্বাচন বর্জন করতে চায়। তবে, আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, ড. কামাল হোসেন আর অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী যদি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন, তাহলেই এই জোটের মৃত্যু হবে। তাই এই জোটের রূপরেখা বা ঘোষণা চূড়ান্ত হবার পরও আওয়ামী লীগ উদ্বিগ্ন নয়। বরং আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ‘অপেক্ষা করুন, দেখুন, চমক আসছে।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।