নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলো আজ। যেখানে নেই জাতীয় ঐক্যের অন্যতম নেতা এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী। নেই বিকল্পধারার অপর দুই নেতা মাহী বি. চৌধুরী ও মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান। অথচ জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রথম ও প্রধান উদ্যোক্তাই ছিলেন বি. চৌধুরী। এমনকি বি. চৌধুরীর বাসায়ই ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনেকবারই নেই নেই দাবি করে অবশেষে গঠনের প্রায় বছরখানেক পর ঐক্যে আসেন ড. কামাল হোসেন। অথচ সেই ড. কামাল হোসেনই বি. চৌধুরীকে বাদ দিয়ে কেন গঠন করলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট?
বি. চৌধুরীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠনের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অনুসন্ধান করে পাঁচটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন:
১. জাতীয় ঐক্যের নেতৃত্ব নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধ দেখা দেয়। বি. চৌধুরী ও ড. কামালের মধ্যে ঐক্যের নেতা কে হবেন তা নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছিল শুরু থেকেই। ড. কামাল যদি ৭২ এর সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন এবং আইনজীবী হিসেবেও দেশে বিদেশে নামডাক আছে তাঁর। এরপরও তাঁর রাজনৈতিক অর্জন যৎসামান্যই। অপরদিকে বি. চৌধুরী একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি। তাই নেতৃত্বের কথা বললে বি. চৌধুরীর গ্রহণযোগ্যতাই বেশি ছিল। কিন্তু তা কোনোভাবেই মানতে পারছিলেন না ড. কামাল। বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতৃত্বের এই দ্বন্দ্ব থেকেই নিজের হাতে গড়া ঐক্য থেকে বাদ পড়লেন বি. চৌধুরী।
২. ঐক্য প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই যুদ্ধাপরাধী, জামাত, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে স্বাধীনতা বিরোধীদের ব্যাপারে বিকল্পধারার অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এরা কেউ যেন ঐক্য প্রক্রিয়ায় না থাকতে পারে সে ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন ও সোচ্চার ছিল বিকল্পধারা। কিন্তু পরে ঐক্যে যোগ দেওয়া বিএনপির এ বিষয়ে ঘোর আপত্তি ছিল। এজন্যই বিএনপি ড. কামাল হোসেনকে সামনে এনে তাদের স্পর্শকাতর বিষয়টি আড়ালে করেছে।
৩. ঐক্য প্রক্রিয়ায় মাহী বি. চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে বরাবরই ক্ষুব্ধ ছিল বিএনপি। আর বিএনপির ব্যাপারে মাহী বি. চৌধুরীর অবস্থানও ছিল খুব স্পষ্ট। বিএনপি নেতাদের ধারণা ছিল ঐক্য প্রক্রিয়ায় যদি বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরী থাকে তাহলে যেকোনো সময় তাঁরা এটি ভেঙ্গে অন্য দিকে নিয়ে যেতে পারে। এমনকি ঐক্য প্রক্রিয়াকে সরকারমুখীও করতে পারেন তাঁরা-এমন আশঙ্কা ছিল ছিল বিএনপি নেতাদের। এই কারণে বি. চৌধুরী, মাহী বি. চৌধুরী সর্বোপরি বিকল্পধারাকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে আসছিল বিএনপি, যা অবশেষে বাস্তবায়িত হলো।
৪. বিএনপি সঙ্গে বি. চৌধুরীর পুরোনো বিরোধ ও আবেগ তো ছিলই। প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বি. চৌধুরীকে টেনে নামিয়েছিল বিএনপি। ঐক্য প্রক্রিয়ায় আসার পর বি. চৌধুরীর বাসায় গিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা। বিষয়টির জন্য তাঁরা ক্ষমাও চেয়েছিলেন। কিন্তু দেখা গেল বিএনপি-বি. চৌধুরী বিরোধ এখনো কাটেনি। আবেগের কারণেই বি. চৌধুরী সবসময় ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠকগুলোতে বিএনপির সমালোচনা করতেন। বিকল্পধারাকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সৃষ্টির এটাও একটি বড় কারণ।
৫. জাতীয় ঐক্য আসলেও ২০ দল থেকে জামাতকে না ছাড়ার দৃঢ় অবস্থানে ছিল বিএনপি। বিএনপি কখনোই চায়নি জামাতকে ছাড়তে। আসলে বিএনপি দুটো সংসারই করতে চেয়েছিল একটি ২০ দলীয় জোটের অপরটি জাতীয় ঐক্যের। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরী। সেজন্যই কৌশলে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হলো। এখন জামাতকে নিয়ে ঐক্যে প্রশ্ন তোলার আর কেউ রইলো না।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।