নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে এখন বিএনপিতেই গৃহদাহ চলছে। নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, স্থায়ী কমিটি সহ কোন ফোরামে আলোচনা না করেই এই ঐক্যফ্রন্টে যাবার সিদ্ধান্ত কে নিলো? গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্নপ্রকাশ করে ‘জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট’। ড. কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে সদ্য গড়ে ওঠা এই জোটের আত্নপ্রকাশে বিএনপির তিননেতা উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। আত্মপ্রকাশের সময় অনুপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। সংবাদ সন্মেলনে ড. কামাল হোসেন ৫বার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরনের কথা বলেছেন। বিএনপি কি তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরনের দায়িত্ব তুলে নিলো? এটা কি আওয়ামী লীগের ‘বি’ টিম হলো? বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে একেবারে অন্ধকারে। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘২০ দল রেখে আবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কেন বুঝলাম না।’ তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় আমাদের বলা হয়েছিল, ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক বি চৌধুরীসহ সরকারের বাইরের সকল দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য হবে। এখন দেখছি, এই ঐক্যে কিছু মতলববাজ, যাঁদের নিজের ভোট নেই।
বিএনপির ঘাড়ে সাওয়ার হয়ে এরা মন্ত্রী এমপি হওয়ার খোয়াব দেখছে। এদের নিয়ে বিএনপির কি লাভ? স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্য বলেছেন, ‘ওয়ান ইলেভেনে যে লোকটি বিএনপির নেতাদের নিয়ে অশালীন এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, তাকেও দেখি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে।’ তিনি বলেন, আমরা কি এতই দেউলিয়া হয়ে গেলাম।’ গতকাল রাতেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গতরাতেই তিনি বিএনপি মহাসচিবকে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি করি। অন্য কাউকে আমার অন্তত নেতা বানানোর চেষ্টা করবো না।’ গয়েশ্বর বলেছেন, ‘বিএনপির অবস্থা কি এতোই খারাপ হলো যে কিছু উদ্বাস্তুর সঙ্গে জোট করতে হবে?’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, যে তিন নেতা জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের ব্যাপারে আগ্রহী, তাঁরা নির্বাচনের ব্যাপারেও অতি উৎসাহী। যেকোন পরিস্থিতিতে এরা নির্বাচনে যেতে চায়। যেহেতু বিএনপির মধ্যে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোন নির্বাচন নয়, সে কারণেই তারা তড়িঘড়ি করে এই ঐক্য ফ্রন্ট গঠন করেছেন। বিএনপির অনেকেই মনে করছেন, এখন ঐক্য ফ্রন্টের মাধ্যমে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বিএনপিকে খাওয়ানোর চেষ্টা করা হবে। বিএনপির অন্য একটি সূত্র বলছে, ‘কথা ছিলো অক্টোবর মাস থেকে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি সর্বাত্মক আন্দোলনে যাবে। আন্দোলনের বদলে এরকম ঐক্য কেন এই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলে। যদিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবী করেছেন বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার মতামত নিয়েই এরকম ঐক্যে যোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপির বেশীর ভাগ নেতাই বলছেন, স্থায়ী কমিটি এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির অনুমোদন ছাড়া এরকম ঐক্যে যোগদান অবৈধ। এ নিয়ে বিএনপির গৃহবিবাদ ক্রমশ: প্রকাশ্য হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।