ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন প্রশ্নে বিভক্ত বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে বিএনপির সিদ্ধান্ত দলগতভাবে গৃহীত হবে নাকি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৃহীত হবে তা নিয়ে দলটিতে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের প্রশ্নে বিএনপি ভেঙে পড়তে বলেও আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হবার পর থেকেই বিএনপির কিছু নেতার রহস্যময় নীরবতা বজায় রেখেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান এবং তরুণদের মধ্যে মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অস্বাভাবিক নীরবতা অবলম্বন করছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এমন আচরণে বিএনপির মধ্যেই বিভিন্ন প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে নিয়মিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির মিটিং হত। স্থায়ী কমিটির মিটিং এর মাধ্যমেই বিএনপির কর্মপন্থা ও কৌশল বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করা হতো। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে, কার মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে? এসব নিয়ে বিএনপির মধ্যেই নানা রকম কথা হচ্ছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির তিন প্রভাবশালী নেতা দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদই বর্তমানে বিএনপির সকল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এই তিনজনের সিদ্ধান্তেই বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছে।

এতদিন ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে বিএনপির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক জিয়ার যোগাযোগের যোগসূত্র ছিলেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তাঁকেও গতকাল আইসিটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে তারেকের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ নেই। ফলে কোনো কর্মসূচির ব্যাপারেও তারেক বিএনপিকে কোনো নির্দেশ দিতে পারছে না। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়া বিএনপিতে তারেকের সঙ্গে অন্যান্য যেসব নেতা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তাঁদের মধ্যে হাবীবুন্নবী খান সোহেলের মতো নেতারাও একে একে গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এছাড়া একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে দূরে সরে আছেন চৌধুরী আব্দুল আউয়াল মিন্টু। যার ফলে তারেক জিয়ার সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ শিথিল হয়ে গেছে। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে তারেকেরও এখন তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

এছাড়া খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন থাকায় তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ শিথিল হয়ে গেছে বিএনপির। এমন অবস্থায় বিএনপি চালাচ্ছেন তিন নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিন নেতা এককভাবেই। ফলে সরকার যখন নির্বাচনের মহাসড়কের দিকে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে তখন বিএনপির মধ্যেই নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্রমশ ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপির তিন নেতা যখন আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তখন তৃণমূল ও মধ্যস্তরের নেতারা প্রকাশ করছেন ক্ষোভ এবং হতাশা।

বিএনপির মধ্যস্তরের নেতা ও তৃণমূলের কর্মীরা মনে করছেন নির্বাচন চলে আসলেও আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে না পারা বিএনপির এক ধরনের ব্যর্থতা এবং আন্দোলনের ব্যাপারে তিন নেতার কোনো উৎসাহ নেই। বিএনপির এই নেতাকর্মীরা ধারণা করছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির একটি অংশকে সরিয়ে এই তিন নেতা নির্বাচনে যাবেন। এই নিয়ে অসন্তুষ্ট তাঁরা।

বিভিন্ন কার্যকলাপে পরিষ্কার হয়েছে, বিএনপির তিন নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ স্পষ্টতই গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে যাওয়ার একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছেন। আবার বিএনপিরই একটি অংশ নির্বাচনে যেতে অনিচ্ছুক। তাই যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে তখনই নির্বাচনের যাওয়া না যাওয়া নিয়ে বিএনপি ভাঙ্গন অনিবার্য বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট কী সিদ্ধান্ত নিল না নিল সেটা বিএনপির দেখার বিষয় না। দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্ববাধয়ায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া বিএনপি কোনো ভাবেই নির্বাচনে যাবে না বলে জানান তিনি। গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়েই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।

কিন্তু বিএনপির বর্তমান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী তিন নেতার অন্যতম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, নির্দলীয় স্রকারের অধীনে নির্বাচন চাই। কিন্তু আমাদেরকে বাস্তবতা বুঝতে হবে। আমরা এখন একটা ঐক্যফ্রন্টে আছি আর ফ্রন্ট থেকে সাত দফা দাবি দেওয়া হয়েছে। সাত দফার ভিত্তিতেই আমরা আন্দোলন করছি। আর আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জোটগত ভাবেই হবে।’ এ সময় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে, কী করবেন, মওদুদকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বিষয়টি দেখা যাবে।

একটি সূত্র বলছে, গতকাল গণফোরামের কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নির্বাচন, নির্বাচনী কৌশল, নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হয় এবং কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। সভা সূত্রে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের সভায় নির্বাচনী কৌশল, আসন বন্টন প্রস্তাবনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাসদের আ স ন আব্দুর রবকে। আর নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকার পরিচালনার ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির।

সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনমুখী মনোভাব নিয়েই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এগুচ্ছে। কিন্তু বিএনপির একটি অংশ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়া নির্বাচনে যেতে ইচ্ছুক নয়। এই উদ্দেশ্যে এখন আলাদাভাবে বৈঠক করছেন মির্জা আব্বাসসহ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বিএনপির সঙ্গে জড়িত দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিতে বিদ্রোহের আশঙ্কা অমূলক নয় ধারণা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের প্রশ্নে বিএনপি ভেঙে যায় কী না সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন