নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮
সম্প্রতি একটি বেসকারি টেলিভিশন টকশোতে নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে অশালীন মন্তব্য করে চরম বিতর্কিত হয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। নারী সাংবাদিককে কটুক্তি করার কারণে দেশজুড়ে সোমালোচনার ঝড় বইছে। দেশজুড়ে একাধিক মানহানির মামলাও করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের কটূক্তির ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি নানা সময়ে, বিভিন্ন বিষয়ে কটুক্তি করে সমালোচিত ও বিতর্কিত হয়েছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মইনুল বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসকে কে উদ্দেশ্য করে বলেছিল, ‘মির্জা আব্বাস কিসের রাজনীতিবিদ? সে তো একজন বাস ড্রাইভার। একজন বাস ড্রাইভারও যদি বাংলাদেশে রাজনীতিবিদ হয়, তাহলে সেই রাজনীতির কি অবস্থা হয় আপনারাই বোঝেন।’ এছাড়াও ঐ সময়ে মইনুল হোসেন বিএনপির বর্তমান সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘রুহুল কবির রিজভী কে? এরাতো হলো পলিটিক্যাল ক্লাউন। এদের বিষয়ে আমি আর কি বলবো।’
ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আছে ১৯৭৪ সালে বাসন্তি নামে একজন পাগল মহিলাকে জাল পরিয়ে ইত্তেফাক পত্রিকায় একটি ছবি প্রকাশ করা হয়। এই ছবির মধ্যে দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা হয়। পঁচাত্তরের ঘাতকদের প্রোপাগান্ডা হিসেবে এই ছবিটি ব্যবহৃত হয়েছিল। এই বাসন্তিকে জাল পরানোর পরিকল্পনাটি ছিল মইনুল হোসেনের।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসেও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন দুটি টেলিভিশনের টকশোতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানা রকম আপত্তিকর মন্তব্য করেন। ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারীতে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার/পৌরসভা নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে মইনুল হোসেনের জাতির পিতাকে নিয়ে কটুক্তি করার বিষয়ে নেতারা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের বিতর্কিত ভূমিকা ছিলেন বলেও নানা সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধমে জানা যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভুমিকার কারণে ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মইনুল হোসেনকে মনোনয়ন দিতে চাননি বঙ্গবন্ধু। পরে তার (মানিক মিয়ার স্ত্রী) মায়ের অনুরোধে বঙ্গবন্ধু তাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ১৯৭৪ সালে বাকশাল হওয়ার প্রতিবাদে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খুনি খন্দকার মোশতাক রাজনৈতিক দল খোলেন। মইনুল হোসেন সেই খুনিদের রাজনৈতিক দলের সদস্যও হয়েছিলেন।
বাংলাদেশের যতগুলো অশুভ রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়, প্রতিটি পরিবর্তনে ব্যারিস্টার মইনুলের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক বিষয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলা, অন্যকে ছোট করা এবং নোংরা কথা বলার জন্য ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বরাবরই কুখ্যাত।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে অশালীন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই মানহানির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে এবার নানা সময়ে করা বিতর্কিত মন্তব্যের কারনে আরও মামলা হতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।