নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮
বিএনপি নয়, বরং তারেক জিয়ার সঙ্গে একটি লিখিত চুক্তির ভিত্তিতেই ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠন করেছেন। যুক্তরাজ্যে তারেক জিয়ার ব্যক্তিগত আইনজীবী লর্ড কার্লাইলের মাধ্যমে এই চুক্তি হয় বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। লর্ড কার্লাইল তাঁর মক্কেল তারেক জিয়ার প্রতিনিধি এবং আইনজীবী হিসেবে ড. কামালের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র লর্ড কার্লাইল নন, বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং প্রয়াত কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমানের সঙ্গেও ড. কামাল হোসেনের কথা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তারেক জিয়ার অনুরোধেই ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বাদ দিয়েছেন।
ড. কামাল হোসেন গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘বিএনপি এবং ব্যক্তি তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর কোন যোগাযোগ নেই।’ ড. কামাল হোসেনের এই বক্তব্যের সূত্র ধরে বিএনপি এবং গণফোরামের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বক্তব্য ছিলো আইনী মারপ্যাঁচের কথা। সরাসরি তারেক জিয়ার সঙ্গে ফ্রন্ট গঠন নিয়ে তার কোন কথা হয়নি। তবে, লন্ডনে তারেক জিয়ার বক্তব্য, তাকে আইনগত সুরক্ষার দায়িত্ব ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলের। তিনি লন্ডন থেকে তারেকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে যোগাযোগ করেন। এই ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের ব্যাপারে লর্ড কার্লাইলের সঙ্গে ড. কামাল হোসেন ৬ দফা গোপন চুক্তি করেছেন বলে জানা গেছে। সে চুক্তি অনুযায়ীই জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠিত হয়েছে। এটা ছিলো চুক্তির প্রথম দফা। চুক্তির দ্বিতীয় দফা অনুযায়ী ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক বি. চৌধুরীকে ফ্রন্ট থেকে বাদ দিয়েছেন। চুক্তির তৃতীয় দফা অনুযায়ী, জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট এবং ২০ দল যৌথভাবে নির্বাচনে যাবে। তাদের প্রতীক হবে ধানের শীষ। চুক্তির চতুর্থ দফা অনুযায়ী, নির্বাচনে জয়ী হলে, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্যে প্রধানমন্ত্রী হবেন ড. কামাল হোসেন। এই সময়ের মধ্যে বেগম জিয়াকে কারামুক্ত করা এবং তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও দন্ড প্রত্যাহারের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে পঞ্চম দফায়। এর ষষ্ঠ দফা অনুযায়ী বর্তমান সংবিধান বাতিল করে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। একাধিক সুত্র বলছে, এই চুক্তির বিষয় চুড়ান্ত করতেই সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডন উড়ে যান বিএনপি মহাসচিব। ড. কামাল হোসেনই প্রথমে বলেন, তারেক জিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটের সঙ্গে থাকলে, তা গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মহল এটাকে ভালোভাবে নেবে না। ড.কামাল হোসেন মনে করেন যে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘জামাত’ কে নিয়ে ঐক্য করতে ড. কামাল আপত্তি করলেও এই ঐক্যের মূল পরিকল্পনা জমাতেরই। লন্ডনে অবস্থানরত জামাতের ‘থিংকট্যাংক’ বলে পরিচিত যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরাই তারেককে ‘জাতীয় ঐক্যের’ ফর্মূলা দেন। জামাত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, গত এপ্রিলে লন্ডনে এক বক্তৃতায় জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকার হটানোর ঘোষণা দেন। জামাতের এই পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করলেন তারেক জিয়া। গত রোববার লন্ডনে জামাতের এক কর্মী সভায় বলা হয়েছে,‘ঐক্যফ্রন্ট জামাতের সৃষ্টি। ড. কামালই আমাদের নেতা।’
উল্লেখ্য তারেক জিয়ার ব্যক্তিগত আইনজীবী লর্ড কার্লাইল যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবীও ছিলেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।