ইনসাইড পলিটিক্স

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক দশক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০১ এএম, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

দশম জাতীয় সংসদের সর্বশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে গত রোববার। এই সংসদ অধিবেশন শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে দশম সংসদের পাঁচ বছর পূর্তি হবে এবং সমাপ্তি হবে আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরের শাসনকালের। আর এই সংসদ অধিবেশনের সমাপ্তির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা ১০ বছর পূর্ণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

এর আগেও শেখ হাসিনা ১৯৯৬–২০০১ সাল মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থ্যাৎ সব মিলিয়ে মোট ১৫ বছর রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক সময়ের জন্য শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার শাসনামলের ১০ বছর পূর্তিতে তাঁর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া ও রাষ্ট্র পরিচালনার সময়টা ফিরে দেখা যাক।

আজ থেকে ১০ বছর আগের কথা। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অপশাসন আর ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের অনির্বাচিত সরকারের শাসনের অধীনে জীবনযাপন করে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের জনগণ। এমন সময় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পক্ষে এক ঐতিহাসিক গণরায় প্রদাণ করে জনতা। জনগণের ভোট নিয়ে বিপুল ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে পরাজিত করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ আর দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই দেশের উন্নয়ন ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলসভাবে পরিশ্রম করতে শুরু করেন। ১০ বছরের শাসনকালে নিজের দূরদৃষ্টি, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দক্ষ রাষ্ট্র চালনায় ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন তিনি। । শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জনের সংখ্যা এতটাই বেশি যে তার সব কটি উল্লেখ করা গণমাধ্যমের সীমিত পরিসরে মোটামুটি অসম্ভব। গত ১০ বছরে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, দেশে বেকারত্বের হার কমেছে, নাম লিখিয়েছে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের মধ্য দিয়ে মহাকাশে পৌঁছে যাওয়া, নৌবাহিনীর সাবমেরিন যুগে প্রবেশ কিংবা সমুদ্রসীমা বিজয়ের মতো ঘটনাগুলো ঘটেছে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কিংবা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারও সম্পন্ন হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলে। দেশকে দক্ষ হাতে পরিচালনা করে দেশী-বিদেশী অজস্র স্বীকৃতিও পেয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সংসদনেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ২১ জানুয়ারি দীর্ঘ ১৯ বছর পর দেশে উপজেলা নির্বাচন হয়। এর মাত্র এক সপ্তাহ পরই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ২৯ জানুয়ারি কণ্ঠভোটে প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সংসদে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবটির পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় সাফল্যের একটি এই একাত্তরের মানবতাবিরোধী কার্যক্রম ও গণহত্যা সংগঠনকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং প্রধান অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করা। ইতিমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামাতের শীর্ষনেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধ ছাড়াও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় প্রদান ও দণ্ড কার্যকর হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সে বছরের ১৯ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ঘোষণা করে আদালত। এরপর ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাজা কার্যকর করা হয়।

২০০৪ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহতম ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ও হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন, মৃত্যুদণ্ড হয় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রভাবশালী ব্যক্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির দায়ে বিচারের সম্মুখীন করাকেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।

বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক খাতে অভূতপুর্ব উন্নতি ঘটে বাংলাদেশের। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশকে দারিদ্রমুক্ত করার কৃতিত্ব শেখ হাসিনারই। শেখ হাসিনার শাসনামলেই `স্বল্পোন্নত` দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয় বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনার ১০ বছর মেয়াদে দেশের অর্থনীতির উল্লম্ফনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক। ২০০৭-০৮ অর্থবছরের জিডিপির (অর্থনীতির আকার) পরিমাণ ছিল চলতি মূল্যে ৬,২৮,৬৪২ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২,৩৮,৪৯৮ কোটি টাকা। ২০০৭-০৮ অর্থবছর শেষে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৪৩,৭১৯ টাকা। গত ১০ বছরে বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। ২০০৭ সালে জাতীয় দারিদ্র্যের হার যেখানে ছিল ৪০ শতাংশ, সেখানে ২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪.৩ শতাংশে।  ২০০৭-০৮ অর্থবছরের তুলনায় এই সময়টাতে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে রেমিটেন্স। ওই সময়ে ৫৪২ বিলিয়ন টাকা থেকে বেড়ে ১০১১ বিলিয়ন টাকায় উন্নীত হয়েছে। গত ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ছিল ১,৩৩,৬৫০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ৩৩ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩,৪৯,১০০ কোটি টাকা। আর রপ্তানি ওই সময়ের মধ্যে বেড়েছে পঁয়ত্রিশ গুণ।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃষ্টান্ত স্বরূপ ১০টি মেগা প্রকল্প যথা- পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, পদ্মা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, চট্টগ্রাম দোহাজারী থেকে রামু কক্সবাজার এবং রামু ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ, ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার প্রকল্প এবং মহেশখালীতে ভাসমান এলএমজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প এখন নির্মানাধীন রয়েছে। এর মধ্যে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের পরও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প নির্মানাধীন আছে কেবল শেখ হাসিনার সাহসিকতার ফলেই।

শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, শেখ হাসিনার দক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় কৃষি খাতেও অভূতপুর্ব উন্নয়ন হয়েছে গত ১০ বছরে। সরকারের কৃষি-বান্ধব কার্যক্রমের ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে গত দশ বছরে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। হেক্টরপ্রতি ধানের উৎপাদন তিন গুণের বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সময়টাতেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ধান রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। বিশ্বে ফল উৎপাদন বৃদ্ধির হারও এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। সব মিলিয়ে, বাংলাদেশকে বিশ্বের দশম বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

নারী অধিকার সুরক্ষায়ও শেখ হাসিনা স্থাপন করেছেন অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত। ক্ষমতায় আসার পরপরই ২০১০ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৭ সালের নারী উন্নয়ন নীতি অনুমোদন করে। এছাড়া জেন্ডার ইক্যুটি ইনডেক্স অনুযায়ী নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ঈর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছে।

শেখ হাসিনার দক্ষ দেশ চালনায় বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিও হ্রাস পেয়েছে । ২০০১ থেকে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ যেখানে ছিল দুর্নীতিতে প্রথম, ২০১০ সালে দুনীতি ধারণাসূচকে বাংলাদেশ দুর্নীতির ক্ষেত্রে পিছিয়ে যায় দ্বাদশ স্থানে।

দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের ভাগ্যোন্নয়নেও কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনা। এই উদ্দেশ্যে ২০১২ সালে ৫০ হাজার ভূমিহীণ, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবারকে পুনর্বাসন এবং সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার উন্নয়ন, উপজাতীয়দের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ গৃহ নির্মাণের লক্ষ্যে ১ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ন-২ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন তিনি। ৪৮ হাজার দরিদ্র-অসহায় মানুষকে আইনী সহায়তাও প্রদান করা হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে। এছাড়া “গুচ্ছগ্রাম” প্রকল্পের আওতায় ১৬৩টি গুচ্ছগ্রামে ৭ হাজার ১৭২টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন ও রাজধানী ঢাকার বস্তিবাসী ও নিম্নবিত্তদের পুনর্বাসনে সরকারি জমিতে ১ হাজার ৬৩২টি ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগও গ্রহণ করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

স্বাস্থ্য খাতেও শেখ হাসিনা সরকারের অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শিশু মৃত্যুর হারের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সফলতা দেখিয়েছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে দেশে যেখানে শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৬৫ জন সেখানে এই হার ২০১৩ সালে ৩৬ জনে হ্রাস পায়। এছাড়া বাংলাদেশে সার্ক দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯১ শতাংশ স্যানিটেশন কভারেজ অর্জিত হয়েছে। দেশের প্রান্তিক-দরিদ্র রোগীদের সেবাদানের জন্য গৃহীত কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পও গত ১০ বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।

গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সহনশীলতা প্রদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর শাসনামলে ত্রিশের অধিক টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া অবাধ তথ্য প্রবাহ এবং  জনগণের তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন এবং দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালুর মতো উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলেই।

এছাড়া মানবাধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড `প্যারিস পিন্সিপল` এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং জাতিসংঘে বিশ্বশান্তির মডেল উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন মানবাধিকারে বিশ্বাসী অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় একজন রাজনীতিবিদ তিনি।

শিক্ষা ও গবেষণা খাতকেও অসম্ভব গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী জাতীয়করণ করেছিলেন। ৪০ বছর পর বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকুরী জাতীয়করণ করেন। বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল গবেষকের পাটের জীবন-রহস্য উন্মোচন করেন ২০১০ সালেও। এছাড়া দেশীয় ব্র্যান্ডের দোয়েল ল্যাপটপ বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্য নিন্দুকও স্বীকার করবে। এরই মধ্যে স্থাপিত সব কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশই এখন বসবাস করে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমের ফলে বিদ্যুৎ খাতে এ সাফল্য এসেছে।

ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসীত সমস্যা ছিটমহল বিনিময় ও ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমুদ্র সীমার বিরোধের নিষ্পত্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক দক্ষতার আরেকটি উদাহরণ।

এছাড়া ২০১৮ সালের ১১ মে মহাকাশে উৎক্ষেপণ বহুল প্রতিক্ষীত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইন- ১ উৎক্ষেপনের মাধ্যমে বিশ্বের স্যাটেলাইটের মালিক দেশের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।  যুক্তরাষ্ট্রের  ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেস এক্সের ফ্যালকন রকেটে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়।

কৃষি থেকে মহাকাশ, শিক্ষা থেকে সমুদ্রতল সবকিছুতেই এখন বাংলাদেশের জয়জয়কার। বাংলাদেশের এই ইতিবাচক রূপান্তরের পেছনে মূল কৃতিত্বটা বর্তায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ওপরই। কিন্তু উন্নয়নের পথে এই অগ্রযাত্রা সহজ ছিল না। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে তুলে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জঙ্গিবাদ, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র, শরনার্থী সমস্যার মতো বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেল আকরতে হয়েছে।

এর মধ্যে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া ছিল শেখ হাসিনার অন্যতম সাহসী সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। তারপরও ২০১৭ সালেকয়েক মাসের ব্যবধানে ১০ লাখের বেশি  রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গ জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়ের পাশাপাশি ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে মানবতার পরিচয় দিয় শেখ হাসিনা ‘মাদার অব ইউম্যানিটি’ হিসেবেও স্বীকৃতি পান বিশ্বব্যাপী।

এছাড়া শেখ হাসিনার শাসনামলেই হলি আর্টিজানে ও শোলাকিয়া ঈদগাহে জঙ্গি হামলা সংঘটিত হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সকল জঙ্গি তৎপরতা কঠোর হস্তে দমন করেন। চলতি বছরেই আবার সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ক্যামোফ্লেজে রাষ্ট্রবিরোধী ও সরকার বিরোধী চক্র মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বের কারণে সফল হতে পারেনি দুর্বৃত্তরা।

আর ক্ষমতায় আসার পরপরই সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহ তিনি যেভাবে ঠান্ডা মাথায় দমন করেছিলেন তার প্রশংসা না করে পারা যায় না। দ্রুততম সময়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিলেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে এই মামলার রায়ও হয়ে গেছে।

এই অবদানগুলোর কারণে গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশী ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, শিশু মৃত্যু হ্রাসসংক্রান্ত MDG-4  অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অ্যাওয়ার্ড, বিশ্বখ্যাত ‘ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পদক ২০০৯’, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নারী ও শিশু মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড ২০১১: ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট হেলথ, বাংলা অ্যাকাডেমির সম্মাননা সূচক ফেলোশিপ প্রভৃতি।

প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারের তালিকা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ইউনেস্কোর কালচারাল ডাইভারসিটি পদক ও শান্তিবৃক্ষ পদক (Peace Tree Award), জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকি মোকাবিলায় সাফল্য প্রদর্শনের জন্য জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ, প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’, গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কারের মতো পুরস্কারও আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঝুলিতে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন কিন্তু অকালে ঘাতকের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত হওয়ায় সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। বর্তমানে পিতার সেই অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণেই কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনা। গত ১০ বছরে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব সেক্টরে যে অভূতপুর্ব উন্নতি হয়েছে তাতে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বজায় রাখতে শেখ হাসিনাকে আবার তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ করে দিতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এবার কি ব্যারিস্টার খোকনও বিদায় নেবেন বিএনপি থেকে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির জনপ্রিয় নেতা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন। শুধু তিনি নন, তার সঙ্গে আরও কয়েকজন এবারের নির্বাচনে চমক দেখিয়ে আওয়ামীপন্থী প্যানেলকে ধরাশায়ী করে সুপ্রিম কোর্টে জায়গা করে নিয়েছেন।

এ ধরনের পেশাজীবীদের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলকে হারিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করা একটা বিরাট অর্জন এবং ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সেই অর্জনটি করেছেন। কিন্তু তার এই অর্জনের পরপরই বিএনপির মধ্যে তাকে নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। মাহবুব উদ্দিন খোকন কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেন তা নিয়েও বিএনপির কোনো কোনো উগ্রবাদী নেতা প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে বিএনপি সব ধরনের পেশাজীবীদের নির্বাচন বর্জন করছে সেখানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন খোকন অংশগ্রহণ করল—এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপির কেউ কেউ। 

অবশ্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট কৌশলগত কারণে বিএনপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কারণেই তিনি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে একজন জনপ্রিয় মুখ। তিনি একাধিকবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছিলেন। বিএনপির বাইরেও তার একটা প্রভাব বলয় রয়েছে এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে তিনি স্রোতের বিপরীতে থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা বিএনপির নেতারাই মেনে নিতে পারছেন না। খোকন যদি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সভাপতি হন, তাহলে অনেক বিএনপি নেতাই তার পিছনে চলে যাবে—এ রকম চিন্তা থেকেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচনকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এক চিঠির মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদেরকে পদ গ্রহণ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু মাহবুব উদ্দিন খোকন যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে বেড়ে ওঠা একজন আইনজীবী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তার এক ধরনের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে, তাই তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। কারণ সুপ্রিম কোর্ট কোন জাতীয় নির্বাচন নয়। এখানে যে সমস্ত আইনজীবীরা তাকে ভোট দিয়েছেন, তারা সকলেই বিএনপির কর্মীও নন, বরং এখানে বেশ কিছু সাধারণ ভোটার রয়েছেন যারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি কোন দলই সমর্থন করেন না। তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ভোট দিয়েছেন। এখন যদি মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির দায়িত্ব গ্রহণ না করেন সেটা হবে তাদের সঙ্গে প্রতারণা। আর এটি মাহবুব উদ্দিন খোকন করতে চাননি। আর এটি করতে না চাওয়ার কারণে তিনি আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। এর ফলে বিএনপির মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হয় সেটাই দেখার বিষয়। 

বিএনপি যেমন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। অনেকেই মনে করেন যে, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং মির্জা ফখরুল বা অন্য নেতারা যদি সংসদে যান তাহলে তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব খর্ব হয়ে যাবে। সে কারণেই তারেক জিয়া নির্বাচন থেকে তাদেরকে দূরে রাখছেন। একইভাবে যদি মাহবুব উদ্দিন খোকনও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হন সেক্ষেত্রে বিএনপির অনেক অপাঙ্ক্তেয় গুরুত্বহীন অজনপ্রিয় নেতাদের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যাবে এবং তারা খোকনের কাছে ম্লান হয়ে যাবেন—এরকম বিবেচনা থেকে তাকে নির্বাচন দায়িত্ব গ্রহণ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাহবুব উদ্দিন খোকন এটি মানছেন না। এরকম পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপির টার্গেট হন কিনা সেটা দেখার বিষয়। অতীতে দেখা গেছে যে, বিএনপিতে যারাই জনপ্রিয় হয়েছেন তাদেরকেই দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বা দলে কোণঠাসা করা হয়েছে। এবার কি মাহবুব উদ্দিন খোকনের পালা?

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন   সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি   সভাপতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফ্যাসিবাদী শক্তি পুরো জাতির ওপর চেপে বসে আছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৯:২৩ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা একটা কঠিন সময়, একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি সমস্ত জাতির ওপর চেপে বসে আছে। আমাদের সকল আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো ব্যর্থ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে বিএনপির উদ্যোগে ওই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক দফার আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সম্মিলিত করে। আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি। সে আন্দোলনে বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে মানুষ আজ মজলুম। পুরো দেশের মানুষ আজ জুলুমের শিকার।

তিনি বলেন, লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুনুর রশিদ, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ এতে বক্তব্য রাখেন।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত ওই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আব্দুল হাই শিকদার, সাহেদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. রফিকুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, মুনির হোসেন, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের আব্দুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ওলামা দলের মাওলানা শাহ নেছারুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ। 

এছাড়াও অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরোয়ার, মাওলানা আব্দুল হালিম, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ১২ দলীয় জোটের জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার (একাংশ) রাশেদ প্রধান, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির লায়ন ফারুক রহমান, জমিয়তের মহিউদ্দিন ইকরাম, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ এলডিপির মো. ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির কারী আবু তাহের, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার (একাংশ) এস এম শাহাদাত, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আবুল কালাম আজাদ, ডা. শামসুল আলম, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান, অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ফাতিমা তাসনিম, হাসান আল মামুন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

এছাড়াও ইফতার মাহফিলে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলম, ড্যাবের ডা. আব্দুস সালাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মো. জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইফতার পার্টি   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়াকে বিদেশ নিতে নতুন তৎপরতা

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।

সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, শামীম ইস্কান্দার সম্প্রতি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং এই সাক্ষাতে তিনি তার বোন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সরকার যে সব শর্ত দেবে, যে কোন শর্তে বেগম জিয়া বিদেশ দিতে রাজি এমন বক্তব্য দেওয়া হয়েছে শামীম ইস্কান্দারের পক্ষ থেকে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শামীম ইস্কান্দার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির কাছে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির সব পদ থেকে ইস্তফা দিবেন। তিনি আর কখনও রাজনীতি করবেন না এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবেন এবং চিকিৎসা শেষ করে দেশে চলে আসবেন। এই তিনটি বিষয়ে বেগম জিয়ার সম্মতি রয়েছে। এর বাইরেও যদি সরকার কোন শর্ত দেয় সেই শর্তটি পূরণ করতেও রাজি আছেন বেগম জিয়া- এমন বক্তব্য দিয়েছেন তার ছোট ভাই। 

উল্লেখ্য যে, এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়া যখন মুমূর্ষু অবস্থায় পড়েছিল, সেই সময় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসক দল এসেছিল এবং সেই চিকিৎসক দল তার একটা ছোট অপারেশন করে তাকে কিছুটা সুস্থ করেছিল। সেই কারণেই বেগম খালেদা জিয়া সে সময় শঙ্কামুক্ত হয়েছিল। শামীম ইস্কান্দার এবং তার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, সেটি ছিল একটি সাময়িক ব্যবস্থা এবং সেই সময় তারা বলেছিল যে, তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আবার তাকে এই ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে এবং এজন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার প্রয়োজন। আর এ কারণেই শামীম ইস্কান্দার এখন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার ব্যাপারে নতুন করে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। 

তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, শামীম ইস্কান্দার এখনকার উদ্যোগ নেওয়ার কারণ ভিন্ন। যেহেতু দেশে নির্বাচন হয়ে গেছে, নির্বাচনের আগে সরকারের একটি পৃথক অবস্থান ছিল। সরকার মনে করত যে, নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে একটি পরিস্থিতি তৈরি করবেন এবং বিদেশে গিয়ে প্রবাসী সরকার গঠন বা সরকারের বিরোধিতা করা বা আন্তর্জাতিক মহলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এক ধরনের জনমত তৈরি করার ক্ষেত্রে কাজ করবেন। এজন্য সরকার বেগম জিয়াকে সে সময় বিদেশ যেতে দেয়নি। এখন যেহেতু নির্বাচন হয়ে গেছে এবং স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে সেজন্য এখন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক তেমন কোন ঝুঁকি নেই। আর এ কারণেই শামীম ইস্কান্দার এখন নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, শামীম ইস্কান্দারের এই তৎপরতা সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। তারা এ ব্যাপারে কোন কিছু জানেনও না। তবে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা আবার খারাপ হতে শুরু করেছে বিএনপির নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বেগম খালেদা জিয়া   শামীম ইস্কান্দার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কেনেন না: রিজভী

প্রকাশ: ০৬:৩৫ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কেনেন না বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই দাবি করেন।

নিজের পুরনো স্মৃতি তুলে রিজভী বলেন, “আমার নানার বাড়ি হচ্ছে ইন্ডিয়া। বিয়ের পরে একবার গিয়েছিলাম। আমার ছোট মামা একটা শাড়ি দিয়েছিলেন। আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম যে ওই শাড়িটা কই? আমার মিসেস বললো, ‘কাঁথা সেলাই করতে কবে দিয়েছি সেটাও ছিঁড়ে গেছে।’ আমাদের দেশের মেয়েরা শাড়ি পুরনো হলে সেটা দিয়ে কাঁথা সেলাই করতে দেয়।

রিজভী বলেন, ‘এ দেশকে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আমরা সেই প্রত্যয় সেই আদর্শ নিয়ে কাজ করছি। আমাদের নিজের বুনন করা যে ফসল সেটা আরো বেশি করে উৎপাদন করবো, আমাদের মিল-কারখানায় যে শাড়ি তৈরি হয় সেই শাড়ি আমাদের মেয়েরা পড়বে, আমাদের কল-কারখানায় যে লুঙ্গি তৈরি হয় সেই লুঙ্গি আমাদের দেশের ছেলেরা পরবে। কিন্তু আমরা অন্যের কাছে নতজানু হবো না, অন্যের কাছে দ্বারস্থ হব না। এই জাতীয়তাবাদী চিন্তা থেকে আমাদের কাজ করতে হবে।’

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবার সেল’-এর উদ্যোগে বিরোধী আন্দোলনে গুম-খুন-পঙ্গুত্বের শিকার পরিবারের সদস্যদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঈদ উপহার প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। সেলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্য নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় এই আলোচনাসভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, মীর হেলাল, যুবদলের আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসিন আলী, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাছির উদ্দীন নাছির, গুম-খুন হওয়া পরিবারের মধ্যে চৌধুরী আলমের ভাই খুরশীদ আলম মিন্টু, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজীদা ইসলাম তুলি, নুরে আলমের স্ত্রী রিনা আলম, মাহবুবুর রহমান বাপ্পীর বোন ঝুমুর আক্তার, পারভেজ রেজার ছোট মেয়ে হৃদি প্রমুখ বক্তব্য দেন।

পরে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের হাতে তারেক রহমানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রুহুল কবির রিজভী   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তৃণমূলে তছনছ আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। 

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সঙ্কট শুরু হয়েছিল বহু আগে থেকেই। বিশেষ করে যখন আওয়ামী লীগের ভিতর হাইব্রিড এবং অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে পড়ছিল এবং দলের তৃণমূল এবং পরীক্ষিত নেতাদেরকে বাদ দিয়ে তারা নিজেরাই বিভিন্ন পদ পদবী দখল করছিল, সেসময় আওয়ামী লীগে তৃণমূলে বিভক্তি শুরু হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলে অনুপ্রবেশকারীদেরকে চিহ্নিত করা এবং বিএনপি-জামায়াত থেকে যারা এসেছেন তাদের বাদ দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। এভাবে আওয়ামী লীগ একসময় দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একটি হলো পুরনো আওয়ামী লীগ, যারা ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং দুঃসময়ের সাথী। অন্যটি হলো সুবিধাবাদী, চাটুকার আওয়ামী লীগ, যারা ২০০৯ এর পরে বিভিন্ন দল থেকে নানা রকম সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশায় আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। 

গত নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের এই বিভক্তি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। নির্বাচনের আগে আগে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দেয়। নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি তাদেরকে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। আর এটি আওয়ামী লীগের ভিতর একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতারাই তাদের পরিচয় ব্যবহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। এবং ৫৮ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ধরাশায়ী করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এর ফলে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ভিতর বিভেদ এবং অনৈক্য ছড়িয়ে পড়ে। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনের পরপরই এই বিভক্তি দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি একাধিক বক্তৃতায় দলের নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচনের বিভক্তি পাশ কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকেও এ ব্যাপারে আহ্বান জানানো হয়। এর পর ডাকা হয় বর্ধিত সভা। বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু তারপরও বিভক্তি কমে না। 

আওয়ামী লীগের বিভক্তি যেন আর ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছিল। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে তারা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ধারণা ছিল, এর ফলে উন্মুক্ত নির্বাচনে বিভক্তি কমবে। কিন্তু উন্মুক্ত নির্বাচনে বিভক্তি কমেনি, বিভক্তি আরও প্রবল আকার ধারণ করেছে। এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় বিভক্তি শুধু প্রকাশ্য রূপই ধারণ করেনি, একটি সহিংস উত্তপ্ত অবস্থা সৃষ্টি করেছে। যেকোন সময় যেকোন উপজেলায় যদি আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের সহিংসতা ঘটে তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। 

আওয়ামী লীগের এই বিভক্তি মেটানোর জন্য, তৃণমূূলকে সংগঠিত করার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারাও এখন দায়িত্ব গুটিয়ে নিয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, এখন রোজার সময় এজন্য তারা সাংগঠনিক বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারছেন না। কিন্তু ১৫২ টি উপজেলায় ইতোমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই উপজেলাগুলোতে সঙ্কট-সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করছে। সামনের দিনগুলোতে এই সহিংসতা কাটাতে না পারলে তৃণমূল আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় সর্বনাশের কারণ হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।   


তৃণমূল আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন