নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৩ এএম, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে লড়াই জমে উঠেছে। জাতীয় রাজনীতিতে ‘ভিআইপি’ আসন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-১ আসন থেকে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতা সালমান এফ রহমান ও আব্দুল মান্নান খান। দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ ও ধন্যাঢ্য ব্যক্তিদের বিচরনের কেন্দ্র এই আসনটির মনোনয়ন ঘিরে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা-১ আসনটি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ১৭৪ তম আসন। এই আসনের বিজয়ীর নাম নির্ধারিত হয় ১ লাখ ২১ হাজার ৪৪০ জনের ভোটারের রায়ের ওপর।
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা- ১ আসনে বিএনপির আধিপত্য ছিল। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ৫ম, ১৯৯৬ সালের ৭ম এবং ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তিনবার জেতেন বিএনপির নাজমুল হুদা। অবশেষে ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান খান বিএনপির আবদুল মান্নানকে প্রায় ৩৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে ঢাকা- ১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেন। তবে ২০১৪ সালে আবারও আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হয়ে যায়। ওই নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান খানকে মাত্র ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। সালমা ইসলাম পান ৫৩ হাজার ৩৪১টি ভোট আর আব্দুল মান্নান খান পান ৪৮ হাজার ৬৯০টি ভোট।
ঢাকা- ১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক এমপি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান।
আব্দুল মান্নান খান গত নির্বাচনে নৌকার টিকেট পেয়েছিলেন। আগামী নির্বাচনেও তিনি দলের শক্তিশালী প্রার্থী। নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগসহ বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন আব্দুল মান্নান খান। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে দলের মধ্যে শক্ত অবস্থান রয়েছে তাঁর।
অন্যদিকে ২০০১ সালে নৌকার টিকেট নিয়ে নির্বাচন করতে নেমে বিএনপির নাজমুল হুদার কাছে পরাজিত হলেও এবার সালমান এফ রহমানকে হেভিওয়েট ক্যান্ডিডেট মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে দোহারে এক জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী নির্বাচনে সালমান এফ রহমানের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিতও দিয়েছেন। একই সভায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাও ঘোষণা দেন দোহার-নবাবগঞ্জ আসনে আগামী নির্বাচনে তিনি তাঁর চাচা সালমান এফ রহমানকে সমর্থন দেবেন। সব মিলিয়ে সালমান এফ রহমান বেশ সুবিধাজনক অবস্থানেই রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী না হলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক এই আসনের বর্তমান এমপি সালমা ইসলাম জাপার হয়ে টিকেট পাবেন এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয় কঠিন করে তুলবেন তা মোটামুটি নিশ্চিত। এই উদ্দেশ্যে এখন থেকেই তিনি ঢাকা- ১ আসনের প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড চষে বেড়াচ্ছেন এবং নেতাকর্মী, সমর্থকদের চাঙ্গা করতে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। এছাড়া নিজে নির্বাচন না করলেও সালমা ইসলামের স্বামী শিল্পপতি যমুনা গ্রুপের কর্ণধার নুরুল ইসলাম বাবুল ঢাকা-১ আসনের নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় প্রভাবিত করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুধু নুরুল ইসলাম বাবুলই নয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, শিল্পপতি ইউনিক গ্রুপের কর্ণধার মো. নূর আলীর মতো ডাকসাইটে লোকেরা ঢাকা- ১ নির্বাচনী এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। মনোনয়ন থেকে শুরু করে অনেক কিছুতেই তাঁরা ভূমিকা রাখেন।
সব মিলিয়ে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ঢাকা-১ আসনের রাজনীতি জটিল আকার ধারণ করেছে। এর ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ভুগতে হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।