নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮
এতদিন ড. কামাল হোসেন বিএনপি নেতাদের সম্মান আর শ্রদ্ধা পেয়েছিলেন। কাল উল্টোপিঠ দেখলেন। ড. কামালকে তীব্র ভাষায় ভৎর্সনা এবং আক্রমণ করলেন বিএনপির নেতারা। তীব্র সমালোচনার মুখে ড. কামাল হোসেন বললেন, ‘সরি’। গতকাল বুধবার সিলেটে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশের পর বিএনপি নেতাদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন গণফোরাম সভাপতি।
গতকাল সিলেটে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশ ছিল। প্রকাশের পর এটিই ছিল ঐক্যফ্রন্টের প্রথম কর্মসূচি। কর্মসূচির প্রধান অতিথি ছিলেন ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন তাঁর বক্তব্যে একবারও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান নি। এমনকি তিনি তারেক জিয়া সম্পর্কেও কোন মন্তব্য করেন নি। সিলেটে তারেক জিয়ার প্রভাব অন্তত বেশি। এই আসন থেকে তারেক জিয়ার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের নির্বাচন করারও গুঞ্জন রয়েছে। বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তারেক জিয়ার একক ইচ্ছায় মেয়র পদে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাই অনুষ্ঠান শেষ করেই সিলেটের মেয়র ড. কামাল হোসেনকে মঞ্চ থেকে নামাতে নামাতে বলেন ‘এ রকম একটা জনসভা করে দিলাম, একবার ম্যাডামের নাম নিলেন না, তাঁর মুক্তি চাইলেন না।’ ড. কামাল হোসেন প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘ফখরুল সাহেব তো চাইলেন?’ এবার সিলেটের মেয়র একটু চড়া সুরেই বলেন, ‘ম্যাডামের মুক্তি না চাইলে, কিসের ঐক্য ফ্রন্ট?’ ঘটনার এখানেই শেষ নয়, এরপর নেতারা এক সঙ্গে বসে চা পান করছিলেন তখন আমান উল্ল্যাহ আমান বলেন,‘ এরপর আমাদের জনসভায় যদি কেউ ম্যাডামের মুক্তি দাবী না করে, ভাইয়ার (তারেক জিয়া) মামলা প্রত্যাহারের কথা না বলে, তাহলে তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেন। তিনি ছিলেন,‘এটা নিয়ে বাড়াবাড়ির দরকার নেই।’ কিন্তু বরকত উল্লাহ বুলু এবং জয়নাল আবেদীন এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন,‘ জনসভায় যে লোক এসেছে তার প্রায় পুরোটাই বিএনপির। জনসভায় খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার কথা না বললে কর্মীরা হতাশ হয়।’ জয়নুল আবেদীন ড. কামাল হোসেনকে ইঙ্গিত করে বলেন‘ উনি বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারন করতে পারলে কেন শহীদ জিয়ার নাম উচ্চারণ করবেন না। করলে সবার নাম নেবেন অথবা কারো নামই নেবেন না।’ একপর্যায়ে তরুন নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কেবল প্রথম কর্মসূচি। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। উনি শহীদ জিয়াও ডাকবেন, তারেক জিয়াকে নেতাও মানবেন।’ এরপর বিএনপি মহাসচিবের পরামর্শে ড. কামাল হোসেন বিএনপির বিক্ষুদ্ধ নেতাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ একজন গণফোরাম নেতা বলেছেন, সাত দফার মধ্যে যেহেতু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আছে, তাই ড. কামাল এটা বলতেই পারতেন। এটা তিনি আসলে ভুলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশের নির্দেশনা ছিল বিকেল পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে, তিনি বক্তৃতাই করতে ওঠেন পাঁচটার পর। এজন্য তাড়া ছিল। তাই হয়তো এই প্রসঙ্গটি আসেনি।’
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।