নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৮ এএম, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে চিঠি দিয়েছেন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু। গতকাল রোববার ঐক্যফ্রন্টের পাঠানো চিঠিতে সংসদ ভেঙে দিয়ে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আহ্বান জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ যে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের কোনো উদ্যোগ নেবে না সেটি এক প্রকার নিশ্চিত। তবে ঐক্যফ্রন্টের চিঠির উত্তর কীভাবে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেবে।
কেন আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সাড়া দেবে না সে বিষয়ে গতকালই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করেছেন। তবে ওবায়দুল কাদের গত রাতে জানিয়েছিলেন, তিনি তখন পর্যন্ত চিঠিটি দেখেননি। কিন্তু একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চিঠির বিষয়বস্তু যেহেতু গণমাধ্যমে চলে এসেছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচটি কারণে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।
এই পাঁচটি কারণ হলো:
১। ঐক্যফ্রন্টের চিঠিতে যে ৭ দফা এবং ১১ দফা দেওয়া হয়েছে সেটি সংবিধান বিরোধী। এসব দফা নিয়ে আলোচনা করা হবে সংবিধানের লঙ্ঘনের সামিল। যেহেতু সংবিধানের বাইরে গিয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া গণতন্ত্রের রীতিনীতির মধ্যে পড়ে না তাই আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী নয়।
২। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চিঠির মধ্যে যে দাবিদাওয়াগুলো আছে সেগুলো অধিকাংশই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর গতকাল রোববার থেকে ইতিমধ্যেই নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। কাজেই এই মুহূর্তে এসব দাবিদাওয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা করা বা আলাপ-আলোচনা করা আর সরকারের এখতিয়ারের বিষয় নয়। তাই এই মুহূর্তে সরকার ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবিত দফা নিয়ে আলোচনায় যেতে আগ্রহী নয়।
৩। যে দলগুলো নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে সে দলগুলোর সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ যোগসূত্র রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি জামাতকে সঙ্গে নিয়েই ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে। আওয়ামী লীগ নীতিগতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে কোন রকম সংলাপে যেতে রাজি না হওয়ায় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে নেতিবাচক উত্তর দেবে দলটি।
৪। গত ১০ অক্টোবর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। ওই মামলার রায়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া এই গ্রেনেড হামলার রায়ে প্রমাণিত হয়েছে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিএনপি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের ওপর সহিংস হামলা চালিয়েছিল। কাজেই এরকম একটা সহিংস-সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল যারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপে যেতে আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই আগ্রহী নয়। উল্লেখ্য, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল সংগঠনই হলো বিএনপি।
৫। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল বিএনপিতে আদালত কর্তৃক স্বীকৃত দুর্নীতিবাজরা নেতৃত্বে রয়েছেন। এমনকি দুর্নীতিবাজদের নেতৃত্বে রাখার জন্য দলটির গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে যাতে দুর্নীতিবাজরাই নেতৃতে থাকতে পারে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও দুটি দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন। এছাড়া তারেক জিয়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সন্ত্রাসী হিসেবেও স্বীকৃত। এমন সব দুর্নীতিগ্রস্ত-সন্ত্রাসী নেতা যে জোটের মধ্যে রয়েছে সে জোটের সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী নয় আওয়ামী লীগ।
তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দেওয়াই আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত। দলটি আজকালের মধ্যেই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ দুইভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে - সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অথবা লিখিত চিঠির মাধ্যমে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।