নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮
বর্তমান সময়ে নানা রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে আগামীকাল গুরুত্বপুর্ণ একটি সংলাপ শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও অনেকগুলো সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। তবে কাল সন্ধ্যায় প্রথম যে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হবে, সেটার দিকেই এখন দৃষ্টি সমগ্র জাতির। এই সংলাপে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১৬ জন সদস্য অংশগ্রহণ করবে।
এখন দেশের জনগণের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে সংলাপ কিভাবে এগোবে? আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে সংলাপের কৌশল সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গতকাল ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে আগামীকালের সংলাপ নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সকল নেতারাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আলোচনা হয়েছে যে, সংলাপে ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দিবেন। বৈঠকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে ৭ দফা দাবির কথা বলা হয়েছে, সেই ৭ দফার সপ্তম দফা থেকে আলোচনা শুরু করা উচিৎ। কারণ এই সংলাপে অন্য দফাগুলো অতোটা গুরুত্বপূর্ণ না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রথম দাবি, যেখানে বলা হয়েছে, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।’ আওয়ামী লীগ, বিএনপি উভয় দলের নেতারাই মনে করছেন যে, অন্য দাবিগুলো তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ না,অন্য দাবিগুলো সহজেই মীমাংসা করা যায়। অন্য দাবিগুলো নিয়ে সমাধানে পৌঁছানো তেমন কোনো জটিল বিষয় না। এজন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কৌশলগত কারণে মনে করছেন যে, পিছনের দিক থেকে অর্থাৎ ৭ দফা দাবি থেকে সংলাপ শুরু করা উচিৎ। যেখানে বলা হয়েছে যে, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
দেখা যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার মধ্যে প্রথম দফাতেই যত জটিলতা। প্রথম দফার সমাধানের কৌশলটাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে এই সংলাপের ক্ষেত্রে। বিভিন্ন সূত্রের খবরে আমরা জানি যে, আওয়ামী লীগ সংলাপের শুরুতেই প্রথম দফা নিয়ে আলোচনা করতে চাইবে। আওয়ামী লীগের ২০১৪ সালের নির্বাচনে যে ফর্মুলা ছিল বিরোধী দল থেকে মন্ত্রী নেওয়া। সে সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছিল আপনি কোন কোন মন্ত্রণালয় নিতে চান? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের অফার দেওয়া হয়েছিল তাকে। অনেকের ধারণা যে আগামীকালের সংলাপেও একই চমক দেখাবেন শেখ হাসিনা। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড. কামাল হোসেনকেও মন্ত্রিত্বের অফার করবেন। এছাড়াও আরেকটি বিষয় হতে পারে নির্বাচনে যাবার শর্তে প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার শর্তও রাজী হতে পারেন।
আওয়ামী লীগের বোটম লাইন হলো এই সংলাপে, বর্তমান সরকারকে বহাল রেখে নির্বাচন করা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে নির্বাচন করা। অপরদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অন্যসব দাবিগুলো যদি অর্জিত নাও হয়, তাহলে তারা চায় অন্তত নির্বাচনের সময় যেন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না থাকে। এটাই হলো সংলাপে সংকটের জায়গা। প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে দুজন প্রার্থী এবং আটজন মন্ত্রী নিবেন এবং অন্যান্য যারা নির্বাচন করবেন তাঁদের থেকেও মন্ত্রী নিয়ে নির্বাচন করবেন, তখন শেখ হাসিনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আপার হ্যান্ডে চলে যাবেন। এবং এই প্রস্তাব যদি ড. কামাল হোসেন এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গ্রহণ না করে, তাহলে তাঁদেরকে এটা বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দেবে। সেখান থেকে তাঁরা নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনের দিকে যাওয়া, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাবে। কাজেই সংলাপের কৌশলগত খেলায় মূল জায়গাটা হচ্ছে সরকার পদত্যাগ করবে কি না, এবং এই জায়গায় এক পক্ষকে পরাজয় মেনে নিতে হবে। আমরা সবাই জানি যে, যদি শেখ হাসিনাকে সরকার প্রধান রেখে নির্বাচন হয় তাহলে আওয়ামী লীগ আপার হ্যান্ডে থাকবে। আর যদি শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নির্বাচন করতে হয় তাহলে সেই নির্বাচনে বিরোধী দলগুলো আপার হ্যান্ডে থাকবে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলের কাছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বারবার পরাজিত হয়। এবার তিনি কি কৌশল গ্রহণ করবেন, তা কালকের সংলাপে বোঝা যাবে।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।