নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৩ পিএম, ০১ নভেম্বর, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে রেখে এবং বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনী সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন কূটনীতিকরা। আজ যখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসেছে, তার আগেই আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমঝোতার এই ফর্মুলা জানিয়ে দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে সকল দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে তিনটি প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য আজ থেকে শুরু হওয়া সংলাপের প্রেক্ষাপটে নিজেদের অবস্থান নিয়ে গত দুইদিনে আলোচনা করে। এই আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপের উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তাকে স্বাগত জানানো হয়। একই সঙ্গে এই সংলাপের মাধ্যমে যেন একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হয় সেই আশাবাদও ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা যেন ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে একটা সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছতে পারেন, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়। সূত্রমতে, তিন দেশের কূটনীতিকরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা, যুক্তফ্রন্টের ৫ দফা এবং সরকারের অবস্থান বিশ্লেষণ করে একটি আপোষ ফর্মুলা উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ দুপুরেই এই ফর্মুলার মূল বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ এবং ঐক্যফ্রন্টকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনটি দেশের যৌথ সমঝোতা ফর্মুলায় যা বলা হয়েছে তা হলো:
১. যেহেতু সংসদের অধিবেশন আর বসছে না তাই বর্তমান সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
২. বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সংসদের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী করা যেতে পারে।
৩. যেহেতু সংসদ এখন অকার্যকর। তাই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন করা যেতে পারে।
৪. নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন হলে, সকল দল ঐক্য মতের ভিত্তিতে ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৫. নির্বাচনকালীন সরকার কেবল রুটিন দায়িত্ব পালন করবে।
আজ দুপুরে ড. কামাল হোসেনকে তিন দেশের কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে এই বার্তা জানিয়ে দেওয়া হয়। একই বার্তা দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাকে। উভয়কেই এর ভিত্তিতে সংলাপকে অর্থবহ করে তোলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে, উভয় দলই বলেছে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতেই তাঁরা একটি সমাধানে পৌছতে পারবেন। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘বিএনপি ২০১৪’র নির্বাচনের আগে সংলাপে অংশ নেয়নি, এবার নিয়েছে। সংলাপে এসেছে, নির্বাচনেও আসবে।’ তবে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। আর বেগম খালেদা জিয়ার মু্ক্তির দাবি মেনে না নিলে বিএনপির নির্বাচনে যাবার প্রশ্নই ওঠে না।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।