নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৭ এএম, ০২ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। দেশজুড়ে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। কিন্তু গুরুত্বপুর্ণ এই সময়টাতে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অন্তর্কোন্দলে স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগ। শরীয়তপুর-২ আসনটিও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত এমনই একটি আসন।
২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৯ জন ভোটার সংবলিত শরীয়তপুর- ২ আসনটি নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২২২ নং আসন। এই আসনটিকে আওয়ামী লীগের বিশেষ করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ঘাঁটি হিসেবে অভিহিত করা যায়। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ৫ম, ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ৭ম, ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৮ম এবং ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা কর্নেল (অব.) শওকত আলী এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। কেবল ১৯৯৬ সালের বাতিল হয়ে যাওয়া ৬ষ্ঠ নির্বাচনেই এখানে বিএনপি প্রার্থী অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবদুল জলিল জয়লাভ করেন।
বর্তমান এমপি শওকত আলী ২০০৮ সালের ৯ম নির্বাচনে ১ লাখ ১৪ হাজার ৮০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. সফিকুর রহমান কিরন ৮০ হাজার ১৯৬টি ভোট পেয়ে প্রায় ৩০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি প্রবীণ রাজনীতিক শওকত আলী এবারও খুব সম্ভবত শরীয়তপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন। তবে বয়সের ভারে ন্যুব্জ হওয়ায় এ আসনে তাঁর বদলে তরুণ কাউকে মনোনয়ন দিতে পারে আওয়ামী লীগ। যদি নতুন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে কর্নেল শওকত আলী বিকল্প হিসেবে তাঁর ছেলে ডা: খালিদ শওকত আলীকে প্রস্তুত করতে চাইছেন। বাবা-ছেলে নির্বাচন সামনে রেখে গণসংযোগও করছেন নিয়মিত।
এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমও। উদীয়মান তরুণ নেতা হিসেবে ভোটারদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এছাড়া গণসংযোগেও এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
বর্তমান এমপি শওকত আলী দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার এমপি। কিন্তু রাস্তাঘাটের বাজে অবস্থাসহ অনেক ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এই নিয়ে শওকত আলীর ওপর নড়িয়া ও সখিপুরের লোকদের চাপা ক্ষোভ রয়েছে। এই বিবেচনায় শওকত আলী কিংবা তাঁর ছেলের বদলে এনামুল হক শামীমকেই শরীয়তপুর- ২ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অন্তর্কোন্দল। দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় আওয়ামী লীগের মধ্য অন্তর্কোন্দলের সমস্যা রয়েছে। এমনকি অন্তর্কোন্দলে এ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে যা এখনো কমেনি। স্থানীয়রা জানান, কর্নেল (অব.) শওকত আলী দীর্ঘদিন এমপি থাকায় এলাকায় তাঁর নিজস্ব একটি বলয় তৈরি হয়েছে। এই বলয়ের বাইরে এলাকায় অন্য কারো রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা দেখা গেলে এমপির কর্মীরা তা ভালোভাবে নেয় না। এসব কারণে গত উপজেলা, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন নিয়ে কোন্দল চরম আকার ধারণ করে। ওই সব নির্বাচনে শওকত আলীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিক থেকে ছাত্ররাজনীতির সুবাদে এলাকায় পরিচিত মুখ এ কে এম এনামুল হক শামীম সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। বর্তমানে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি জনপ্রিয়। একই সঙ্গে তিনি পুরোদমে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এছাড়া এই আসনে শামীম ছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো কেন্দ্রীয় নেতা না থাকায় নতুন ভোটারদের মধ্যে তাকে নিয়ে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে শরীয়তপুর- ২ আসনে শওকত আলী ও এনামুল হক শামীম – দুজনের গ্রুপই ভালোমতো সক্রিয় রয়েছে। ফলে এ আসনে দলটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। কর্নেল (অব.) শওকত আলী এবং এনামুল হক শামীম দুজনই হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় এই আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি ড. মঈন খান
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।
অবশেষে জিয়া পরিবার মুক্ত হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কবে, কখন, কীভাবে এ পরিবর্তন হবে সে সম্পর্কে কেউ কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। তবে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিতে পরিবর্তনের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।