নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ০৬ নভেম্বর, ২০১৮
৭ দফা নয়, এখন নির্বাচন পেছানোর জন্য সরকারকে চাপ দিতে চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলছেন, ‘নির্বাচন পিছিয়ে দিতে পারলেই সরকার দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রশাসনের উপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে যাবে। তখন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারবে না।’ গতকাল ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে নির্বাচন পিছানোই ছিল নেতাদের মূল আলোচ্য বিষয়। কাল সোমবার ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও বৈঠকে সংলাপের ফলাফলের আগে তফসিল ঘোষণা না করার অনুরোধ করা হয়। আজ ঐক্যফ্রন্টের জনসভাতেও বলা হয়েছে, ‘সমঝোতা ছাড়া তফসিল ঘোষণা করলে আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।’ আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেছেন, একটি মহল নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এটা কিছুতেই করতে দেওয়া হবে না।’ সূত্রমতে ঐ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তিনদফা সিদ্ধান্ত জানান।
১. ৭ নভেম্বর সংলাপ শেষ হবে। সংলাপে সংসদের বাইরের দলগুলো থেকে ৪ জন মন্ত্রী নেওয়ার প্রস্তাব দেবে সরকার।
২. ৮ নভেম্বর সংলাপের আনুষ্ঠানিক ফলাফল এবং নির্বাচন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুরে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
৩. নির্বাচন কমিশনে তফসিল ঘোষণা পেছানোর ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানাবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আন্দোলন বা নির্বাচন কোনটাতেই উৎসাহী নয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বরং তফসিল পিছিয়ে একটি ‘সংকট’ সৃষ্টি করতে চায় তারা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতার মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘সংলাপ হচ্ছে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা। আমরা ৭ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা সংলাপে বসছি। সমঝোতা হতে সময় লাগতে পারে। সমঝোতা হবার আগেই যদি তফসিল ঘোষণা করা হয়, তাহলে সমঝোতার সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে।’ অবশ্য মান্নার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারেননি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘৪ নভেম্বরই নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক সংলাপের স্বার্থেই এটা ৮ নভেম্বর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তফসিল পেছানোর সুযোগ নেই।’ আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ৭ নভেম্বরের বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকলে মিলে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ঐ প্রস্তাবে রাজি না হলে, আওয়ামী লীগ আর সংলাপ নিয়ে এগুবে না। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে যে ৭ দফা দাবি দাওয়া হয়েছে, তাঁর মধ্যে কয়েকটি ইতিমধ্যেই মেনে নেওয়া হয়েছে। কিছু দাবি দাওয়া নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট। আর কিছু দাবি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেমন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন, নির্দলীয় সরকার, সেনাবাহিনীকে ট্রাইকিং ফোর্সের বদলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান। আওয়ামী লীগের ঐ নেতা বলেছেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে যুক্তিসঙ্গত যে দাবিগুলো আছে সেগুলো সরকার বিবেচনা করবে। আলোচনা প্রলম্বিত করতে দেবে না আওয়ামী লীগ।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।