নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৮ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে বিকল্পধারায় যোগ দেবে বিএনপির দেড় শতাধিক নেতা। এরা সবাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। এরা প্রত্যেকেই অন্তত একবার জাতীয় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। বিএনপি এবং বিকল্পধারার দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে বিএনপিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সংলাপ ব্যর্থ হবার পর নির্বাচনে যেতে অনাগ্রহী বিএনপির শীর্ষ নেতারা। কিন্তু বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী অধিকাংশ নেতাই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। তাঁদের বক্তব্য হলো, নির্বাচনে না গেলে এলাকায় তাঁদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। নির্বাচনে আগ্রহী বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনে হরেছি। তখন থেকেই এলাকায় অবস্থান ভালো নয়। ২০১৪’র নির্বাচন বর্জন করে, অস্তিত্বের সংকটে পড়েছি। কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে, অনেকে মামলায় জেলে। এবার নির্বাচন না করলে এলাকায় অস্তিত্ব থাকবে না।’ ঐ নেতার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তিন বারের নির্বাচিত এক এমপি। তাঁর মতে, ‘নির্বাচন না করলে, এলাকায় কর্মীদের ধরে রাখা কঠিন হয়। লোকজন ভুলে যায়।’ গতকাল বুধবার বিএনপি নেতৃবৃন্দ যে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছে তাতেও এই প্রসঙ্গটি আলোচনা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ২০১৪’র নির্বাচন বর্জন করার পর বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলো এখনো চলেছে। এবার নির্বাচন না করলে আবার নতুন মামলা হবে। বিএনপির অনেক নেতাই মনোনয়ন পেতে লন্ডনে তারেক জিয়ার কাছে ধরনা দিয়েছিলেন। সেখানে ঐ নেতাদের উপঢৌকনও দিতে হয়েছিল। এখন যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে উপঢৌকনের টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। ঐ সময় তারেক জিয়া তাদের আশ্বস্ত করেছিলো যে, এবার বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে। এজন্য এলাকায় এরা প্রস্তুতিও শুরু করেছিলেন।
বিকল্পধারার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বিকল্পধারার সভাপতির যোগাযোগ বেড়েছে। সূত্রমতে, বিকল্পধারা ও যুক্তফ্রন্ট এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। যে দলের কদিন আগেও ১০০ প্রার্থী দেওয়ার মতো আস্থা ছিল না, তারা হঠাৎ প্রার্থী বাছাইয়েই হিমশিম খাচ্ছে কীভাবে? জানতে চাইলে বিকল্পধারার একজন নেতা বলেছেন,, ‘বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত একটি অংশের বিকল্পধারা থেকে নির্বাচন করার প্রক্রিয়া আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। এখন বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে বিকল্পধারা অনেক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী পাবে। শুধু বিকল্পধারা নয়, প্রার্থী যোগাড় করতে মাঠে নেমেছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে তৃণমূল বিএনপিও। সম্প্রতি নাজমুল হুদার দলকে নিবন্ধিত করতে নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে, নাজমুল হুদারও এখন প্রধান টার্গেট বিএনপি। শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি নির্বাচন না করে, তাহলে বিএনপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নির্বাচনে যাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।