নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩০ এএম, ০৯ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ এই সময়টাতে দলীয় প্রচারণা বা সাংগঠিক কাজের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নজর দিতে হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার দলীয় কোন্দল নিরসনেও। পটুয়াখালী-৩ আসনের দুই আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যেও অন্তর্কোন্দল রয়েছে যা এলাকার রাজনীতির সংহতি নষ্ট করছে।
পটুয়াখালী-৩ আসনটি জাতীয় সংসদের ১১৩ নং আসন। পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলা, গলাচিপা উপজেলা নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনী এলাকার ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯৭ জন।
পটুয়াখালীর গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে নৌকার মাঝি হতে চাইছেন আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং গোলাম মাওলা রনি উভয়ই। আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।
এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সম্পর্কে অশোভন মন্তব্য করায় দল থেকে ছিটকে পড়েন এবং ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হন।
সেবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মোঃ গোলাম মাওলা রনিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রনী ১ লাখ ২০ হাজার ১০টি ভোট পেয়ে বিএনপির মোঃ শাহজাহান খানকে প্রায় ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। মোঃ শাহজাহান খান পান ৬১ হাজার ৪২৩ ভোট।
তবে ২০১৪ সালের ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ভাগ্যের শিঁকে ছেড়ে আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের এবং নির্বাচিত হন তিনি। হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, স্থানীয় প্রবীণ নেতাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, দলের এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে লাগামহীন অসংযত বক্তব্য দেওয়া এবং শীর্ষস্থানীয় একজন শিল্পপতির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণে হাই কমান্ডের বিরাগভাজন হন তৎকালীন এমপি গোলাম মাওলা রনি। তাই শেষবার আর মনোনয়ন পাওয়া হয়নি তাঁর।
বর্তমানে এই নির্বাচনী এলাকায় জাহাঙ্গীর ও রনী- দুজনের গ্রুপই সক্রিয় আছে। মনোনয়নকে কেন্দ্র করে এলাকায় শো ডাউন আর গ্রুপিংও এখন তুঙ্গে। এছাড়া আ খ ম জাহাঙ্গীর শেষ মেয়াদে এমপি হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি প্রভৃতির অভিযোগও ওঠে। এসব নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর অসন্তুষ্ট। এমনকি বিগত দিনগুলোতে জাহাঙ্গীর ও তাঁর বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এই এলাকা আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত হলেও এখানে ভালো নেই তাঁরা। সব মিলিয়ে পটুয়াখালীর রাজনীতিতে এক অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে এলাকার অন্তর্কোন্দল দূর করে পটুয়াখালী- ৩ এলাকায় নৌকার বিজয়ের ধারা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগকে দীর্ঘ পথ পারি দিতে হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।