ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় চমক আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৯ নভেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আজ সকাল ১০টা থেকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শুরু করেছে। গতকাল নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই আওয়ামী লীগের কাছে স্পষ্ট বার্তা এসেছে, বিএনপি এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সেই বিবেচনা থেকে আওয়ামী লীগ এবার মহাজোটগত হয়েই নির্বাচনে অংশ নেয়ার মহাপরিকল্পনা করছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য আওয়ামী লীগ তিনটি পৃথক তালিকা তৈরি করেছিলো। প্রথম তালিকা সাজানো হয়েছিলো বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন না করলে তাঁর ওপর ভিত্তি করে, দ্বিতীয়টি সাজানো হয়েছিলো, যদি বিএনপি খন্ডিতভাবে অংশগ্রহন করে সেক্ষেত্রে আর তৃতীয় তালিকাটি সাজানো হয়েছিলো, যদি বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে সেক্ষেত্রে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, তৃতীয় তালিকার ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শুরু হয়েছে। মনোনয়ন বোর্ডের সভার তারিখ আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই নির্ধারণ করা হবে। মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা সর্বশেষ জরিপগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছি। আমরা জানি যে, বিএনপি এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আশা করছি যে, একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য যা যা করা দরকার সেটিই আমরা করবো।’

আওয়ামী লীগের বিশেষ সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ যে তৃতীয় তালিকা তৈরি করেছে, সে অনুযায়ীই মনোনয়ন গৃহীত হবে। বর্তমানে যেসব এমপি রয়েছেন, তাদের মধ্যে ১০৭ জন এমপি মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। বিরোধী দলের জন্য ৭০টি আসন ছেড়ে দিয়ে ২৩০টি আসনে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী দেবে। ৭০টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টিকে ৪০টি এবং ১৪ দলসহ অন্যান্য শরিক দল গুলোকে বাকি ৩০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার বিবেচনা করা হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শরীক দলগুলোকে যে আসন ছেড়ে দেওয়া হবে, সে আসনে তাদের জেতার সম্ভাবনা বেশি। আমরা শুধুমাত্র দল বিবেচনা করে আসন ভাগাভাগি নীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি, যেখানে যে যোগ্য, যার জেতার সম্ভাবনা যেখানে বেশি, সেখানে সেই প্রার্থীকেই আমরা মনোনয়ন দেব।’

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ৪টি কৌশল অবলম্বন করবে।

১. আওয়ামী লীগ প্রথমেই প্রার্থী মনোনয়ন করে ফেলবে। সেখানে যদি বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রতিযোগিতা করার জন্য মনোনয়ন ফর্ম জমা দেয় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে বহিস্কারের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে আওয়ামী লীগ।

২. আওয়ামী লীগ শরীকদের জন্য যে আসনগুলো ছেড়ে দেবে, সে আসনে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থীই মনোনয়ন ফর্ম নেওয়া বা জমা দিতে পারবে না। ঐ সব আসনে মনোনয়ন ফর্ম নেওয়া বা জমা দেওয়া হলে দলের কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৩. মনোনয়ন পত্রের ক্ষেত্রে দলের চূড়ান্ত নীতি নির্ধারনের ক্ষমতা থাকবে দলনেত্রী শেখ হাসিনার ওপর।

৪. সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের ওপর ১২টি জরিপ পরিচালনা করেছেন। ১২টি জরিপের ভিত্তিতে যে সব ব্যক্তিরা অধিক জনপ্রিয়, তাদেরকে মনোনয়নের কথাই বিবেচনা করেছেন।

তবে একাধিক সূত্র বলছে, এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চমক থাকবে। খেলোয়ার, অভিনয় শিল্পীসহ সমাজের গুণীজন, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বকে মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এবারের নির্বাচনে নড়াইলের একটি আসন থেকে ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজার মনোনয়ন মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে। এক সময়ের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাবানা নির্বাচন করবেন বলে একটি সূত্র আভাস দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, শাকিব খানের নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেটি এখনো চূড়ান্ত নয়। এছাড়াও তারকা জগতের অনেকেই নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে পারেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক পুলিশের আইজিপি নুর মোহাম্মদের মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত মনোনয়ন পেতে পারেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ঢাকার একাধিক আসনে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মনোনয়নের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে সব কিছু চূড়ান্ত হবে মনোনয়ন বোর্ডের সভায়। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যেই মনোনয়ন বোর্ডের সভা শুরু হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বাংলা ইনসাইডার/জেডআই

 

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: কাদের

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা করলে করতে পারবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা নেবে’।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।

ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হওয়া  উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।


মন্ত্রী-এমপি   প্রার্থিতা প্রত্যাহার   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা জিয়ার গ্যাটকো মামলার গঠন শুনানি ২৫ জুন

প্রকাশ: ০১:৪৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৫ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে খালেদা জিয়ার অব্যাহতির বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার দেশের বাইরে থাকায় অভিযোগ শুনানি পেছাতে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন করে এ তারিখ ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, মামলাটিতে ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জনের অব্যাহতির বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি শুরু হয়।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর মামলায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ১৫ জন।

অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন।


খালেদা জিয়া   গ্যাটকো মামলা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতিটি ধাপেই ভোটের দিন পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে-এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। ইসির উচ্চপর্যায়ের সভায় গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য জানিয়েছেন।

একটি গোয়েন্দা সংস্থা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ৭৮টি, দ্বিতীয় ধাপে ৭০টি ও তৃতীয় ধাপে ৪০টি উপজেলায় নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। আরেকটি সংস্থা জানিয়েছে, শুধু প্রথম ধাপে ৪৯টি উপজেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করেছে। ভোটের দিন পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে-নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আভাস দিয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে ইসিকে পরামর্শ দিয়েছেন এ দুটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

তবে তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন প্রতিহতের বড় ধরনের কর্মসূচি নেই। 

গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বৈঠকে এমন আভাস দেওয়া হয়। ওই সভায় পরিস্থিতি অবনতির বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ২৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 
অনেক উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী প্রার্থী রয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও রয়েছে। ওই রেশে ভোটের দিন খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

বৈঠকে আরও বলা হয়, বিএনপি ও জামায়াত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছে। তবুও বিচ্ছিন্নভাবে বিএনপির ১১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জামায়াতেরও পাঁচজন মাঠে রয়েছেন। এসব উপজেলায় সহিংসতার শঙ্কা বেশি। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরও জানা যায়, সভায় সাম্প্রতিক ঘটনায় অতি নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি উপজেলাগুলোয় ২০১৯ সালের তুলনায় এবার আইনশৃঙ্খলা নিরাপত্তা বলয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এবার সাধারণ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় তিনজন অস্ত্রধারী পুলিশসহ ১৬ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশসহ ১৭-১৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। পার্বত্য ও দুর্গম এলাকার সাধারণ কেন্দ্রে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশসহ ১৭ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পাঁচজন অস্ত্রধারী পুলিশসহ ১৮-১৯ জন নিয়োজিত হবেন। 

ওই সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, সভায় উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে-এবার উপজেলা নির্বাচনে অন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চেয়ে বেশিসংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হবে। চার ধাপে ভোট হওয়ায় জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে উপজেলাভিত্তিক বিজিবি মোতায়েন করা হবে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, প্রতি উপজেলায় সর্বনিম্ন দুই প্লাটুন এবং সর্বোচ্চ চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।

নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, একই দলের একাধিক প্রার্থী ভোটে অংশ নিচ্ছেন। এমনকি যেসব দল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, তাদেরও প্রার্থী রয়েছেন বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে। ফলে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তবে নির্বাচনে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা নেই। 

তিন উপজেলা নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বিশেষ করে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। আপাতত এ তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে এ নির্বাচন করা হবে’। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে রুদ্ধদ্বার এ সভা। সভায় চারজন নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড ও আনসারের মহাপরিচালক অংশ নেন। এছাড়া পুলিশের আইজি, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও এনএসআই-এর মহাপরিচালকের পক্ষে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত চার ধাপে ৪৭৭টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে। প্রথম ধাপে ১৪৮টি উপজেলায় ৮মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৫৯টিতে ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২টিতে ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫টিতে ৫ জুন ভোট হবে।

প্রথম ধাপের নির্বাচনে ২৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। বাগেরহাট সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মাদারীপুরের শিবচরে ও ফেনীর পরশুরামে চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাই এ চার উপজেলায় ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হবে না।

বৈঠক সূত্র জানায়, পুলিশ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বৈঠকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কার কথা জানান। একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বৈঠকে বলেন, অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ২৬ প্রার্থী নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। বিএনপি-জামায়াতেরও প্রার্থী আছেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনে পর্যাপ্ত কোনো ঝুঁকি না থাকলেও ভোটের দিন খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। প্রথম ধাপের ৪৯টি উপজেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ নির্বাচনে ৬৯টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। এ মেশিনে ভোটগ্রহণ বিলম্ব হলেও পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। 

আরেক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তফশিল ঘোষিত তিন ধাপের মধ্যে প্রথম ধাপের ৭৮টি, দ্বিতীয় ধাপের ৭০টি ও তৃতীয় ধাপের ৪০টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে সভায় উল্লেখ করেন। তিনি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বিচ্ছিন্নভাবে বিএনপির ১১৬ জন প্রার্থী মাঠে থাকার কথা জানিয়ে বলেন, এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। যেহেতু সব এলাকা সমান ঝুঁকিপূর্ণ নয়, তাই ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারি দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। র‌্যাবের মহাপরিচালক জানান, র‌্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে। তবে পরিস্থিতি অবনতি হলে রিটার্নিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার নির্দেশে র‌্যাব ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবে।


উপজেলা নির্বাচন   গোয়েন্দা সংস্থা   ইসি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ব্যারিস্টার খোকনের অব্যাহতি নিয়ে বিএনপিতে বিভক্তি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত বিরোধ ও তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মত বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের অনেকের। সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে তুমুল জনপ্রিয় এই নেতাকে বাদ দেওয়ায় ফোরামের নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির সিনিয়র নেতারাও। এ নিয়ে বিএনপিতে এখন বিভক্ত স্পষ্ট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, তাদের কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। ব্যারিস্টার খোকন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাতবারের সম্পাদক। তিনি দলেরও একজন সিনিয়র নেতা। তার মতো নেতাকে এভাবে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়ে অসম্মানিত করাটা মোটেই ঠিক হয়নি। 

বিএনপি নেতারা বলছেন, ফোরামের ভেতরকার অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে মাহবুবউদ্দিন খোকনকে কোণঠাসা করার অপচেষ্টা করছে একটি পক্ষ। ওই পক্ষটি ফোরামের একক নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে। যেটি খোকনের জনপ্রিয়তার কাছে আদৌ সম্ভবপর হয়ে উঠছে না, সেটিও তারা জানে।  

অন্যদিকে ব্যারিস্টার খোকনের সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য দেওয়াটাও সমীচীন হয়নি বলে মনে করেন কেউ কেউ। 

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন তার অব্যাহতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি। তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামালের বিরুদ্ধে। যা নিন্দনীয় ও অরুচিকর। তার মতো সিনিয়র নেতার কাছে এমনটা আশা করিনি। 

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার কায়সার কামালকে অর্বাচীন বালক ও কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন বলেন, সময় এসেছে তাকে দল থেকে বহিস্কারের। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই তিনি বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এবং দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলেও দাবি করেন খোকন। কায়সার কামালের নৈতিক স্খলনের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিকে অনুসন্ধানের আহবানও জানান বিএনপি থেকে নবনির্বাচিত বার সভাপতি খোকন। 

এর আগে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করায় বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব খোকনকে ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয় গত শনিবার। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে অব্যাহতির কথা জানানো হয়। এ নিয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন খোকন। তিনি কায়সার কামালকে ‘অর্বাচীন বালক’ বলে আখ্যায়িত করেন। নৈতিক স্খলনের কারণে দল থেকে কায়সার কামালের বহিষ্কারও দাবি করেন।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড নেওয়া হচ্ছে বিএনপি নেতা মিন্টুকে

প্রকাশ: ০৫:৫৪ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তিনি থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে থাইল্যান্ড রওনা হয়েছেন।

বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তার চিকিৎসা সেবা নেওয়ার কথা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ এপ্রিল বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মিন্টু ।

১৯ এপ্রিল রাত ২টার দিকে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

থাইল্যান্ড   আবদুল আউয়াল মিন্টু  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন