নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৯ নভেম্বর, ২০১৮
বৃহস্পতিবার ৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তৃত্ব নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত হয়েছে। আজকেই নির্বাচন কমিশন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করেছে যে, প্রত্যেকটি জেলায় জেলা প্রশাসকরা রিটার্নিং অফিসার হিসেবে থাকবেন। ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরগুলোতে বিভাগীয় কমিশনাররা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবে। তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতা এবং নিরপেক্ষতা প্রমানের জন্য মাঠ প্রশাসন এবং শীর্ষ প্রশাসনের বেশ কিছু রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আগামী রোববার হলো নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর প্রথম কর্ম দিবস। এই প্রথম কর্ম দিবসেই নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়। নির্বাচন কমিশনের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানাচ্ছে,নির্বাচনের জন্য যেন মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকে। সে জন্য প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল ঘটাতে পারে নির্বাচন কমিশন। যে সমস্ত ডিসি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হয়েছিল। তাদের বদলি বাতিল করে সে সমস্ত এলাকায় নতুন ডিসি দিতে পারে। এছাড়াও উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনে যে সমস্ত সচিবদের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনের সংশ্লিষ্ঠতা রয়েছে। যেমন মন্ত্রী পরিষদের সচিব, জনপ্রশাসনের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দুটি বিভাগের সচিব- এই চারটি সচিব পদেই রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রশাসনের নির্বাচন কমিশন সূত্রগুলো বলছে। এছাড়াও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও প্রশাসনে নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে পারে বলে একটি সূত্র আভাস দিয়েছে।
যে সমস্ত এসপিদের গত ছয়মাসের মধ্যে বদলি করা হয়েছে। সে সমস্ত এসপিদেরকে ওই এলাকা থেকে পরিবর্তন করা হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র বলছে যে, গত তিনমাস ধরে মাঠ প্রশাসন এবং শীর্ষ পর্যায়ে ঢেলে সাজানোর একটি রুপ পরিকল্পনা তৈরী করেছিল। কারা কারা দলীয় আনুগত্তের ভিত্তিতে কাজ করে। তাদের তালিকাও নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত করেছিল বলে নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পরিবর্তনগুলো করবে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে একজন নির্বাচন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন,‘ প্রশাসনের রদবদলে তারা কোন আতঙ্ক ছড়াতে চান না। ঢালাওভাবে বড় কোন পরিবর্তনও করতে ইচ্ছুক নন। যেখানে যেটুকু প্রয়োজন, ধীরে ধীরে সে পরিবর্তনগুলো নিশ্চিত করবেন বলে ওই নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের সচিব জনাব এম হেলাল উদ্দীন বলেন যে, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই প্রশাসনের কর্তৃত্ব নির্বাচন সংশ্লিষ্ঠ নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যাস্ত হয়েছে। রোববারে প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে আমরা বসবো। এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার। প্রশাসনের রদবদল যদি কিছু করতে হয়। সেটা নির্বাচন কমিশন করবে’।
নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র বলছে যে, মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে কয়েকদিন আগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। এইজন্য মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে তার জায়গা থেকে বদলি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও যে সমস্ত কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচনা করা হয় বা দলীয় বলে পরিচিত রয়েছে। তাদের ব্যাপারেও নির্বাচন কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নিবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে, তারা আশা করছেন যে নির্বাচনে অংশগ্রহনমূলক হবে। সমস্ত দলের মধ্যে যেন একটি বিশ্বাস এবং আস্থা তৈরী হয়। সেজন্য তারা প্রশাসনে নিরপেক্ষ একটা ভাবমূর্তি তৈরী করার জন্য চেষ্টা করবেন। নির্বাচন কমিশন যে ক্ষমতাবান সেটা প্রমানের জন্যও তারা চেষ্টা করবেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।