নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ১১ নভেম্বর, ২০১৮
দুপুরবেলার সচিবালয়। হঠাৎ করে বেশ কয়েকজন আমলার মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো ঈদের আনন্দ। যে কেউ ধারণা করবে, নিশ্চয়ই চাকরিতে পদন্নোতি কিংবা বেতন বৃদ্ধির মতো কোনো ব্যাপার ঘটেছে। কিন্তু না। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, আমলাদের এই আনন্দের উৎস বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা।
আজ রোববার দুপুরে পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। যেহেতু এই দুটি জোটেরই মূল দল বিএনপি তাই এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনার পর বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলো। আর বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে জানাতেই বদলে গেল সচিবালয়ের পরিস্থিতিও। যারা এতদিন আওয়ামী লীগের ‘বিশ্বস্ত সৈনিক’ ছিল তাঁরা আনন্দের আতিশয্যে নিজেদের মুখোশ খুলে ফেললেন। নির্বাচনে অংশ নিলেই বিজয় লাভ নিশ্চিত নয়। কিন্তু অনেক আমলা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করা ও একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করানোর মাধ্যমে যেন সম্ভাব্য বিজয়ই উদযাপন করে ফেললেন। এমনকি সচিবালয়ে এমন কথাও শোনা গেছে, ‘এবার নির্বাচন হোক। সবগুলো আওয়ামী লীগারকে ধরবো।’
বিএনপির নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বহুদিনের পুরনো দাবি পূরণ করেনি সরকার। তবুও নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে বিএনপির ছোটখাটো একটি পরাজয় হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। অথচ সেসব নিয়ে এই আমলাদের কোনো মাথাব্যথা লক্ষ্য করা যায়নি। বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণাকেই বিজয় মনে করে বহু আমলা উল্লাসে ফেটে পড়েন। কারণ তাঁরা মনে করছেন, এই নির্বাচনে অন্যরকম ফলাফল হবে। কেউ কেউ সাহসে বুক ফুলিয়ে বলছেন, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে কারচুপি করতে দেওয়া হবে না। বরং বিএনপি নির্বাচনে জিতলে আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন আমলাদের কীভাবে শায়েস্তা করা হবে তারা এখন সে পরিকল্পনা করতে কাজে লেগে গেছেন। এই উদ্দেশ্যে সচিবালয়ে আওয়ামী পন্থীদের তালিকা প্রণয়নের কাজও শুরু হয়ে গেছে। জানা গেছে, এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পদন্নোতি বঞ্চিত কয়েকজন আমলা।
অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১০ বছরে পদন্নোতি পেয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আমলা। সরকারি চাকরিতে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তগুলোও এসেছে এই সরকারের আমলেই যার সুবিধা আওয়ামী বিরোধী আমলারাও পাচ্ছেন। কিন্তু প্রথম সুযোগেই নিজেদের আসল স্বরূপ দেখিয়ে ফেললেন তাঁরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনের দিনগুলোতে সচিবালয়ে কী পরিবর্তন হয় সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।