নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ১১ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপি চায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ড. কামাল অংশগ্রহণ করুক। ড. কামাল হোসেন প্রথমে বলেছিলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের তাঁর কোন ইচ্ছা নেই। তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কিন্তু আজ রোববার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি শেষ পর্যন্ত আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন। তবে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তিনি বিএনপিকে ৩টি শর্ত দিয়েছেন। এ শর্তগুলো বিএনপি তাৎক্ষণিক ভাবে মেনে নিয়েছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তিনি যে শর্তগুলো দিয়েছেন সেগুলো হলো:
১. নির্বাচনে ১০টি আসন সুশীল সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তিদের দিতে হবে। তাদেরকে জিতিয়ে আনার দায়িত্বও নিতে হবে বিএনপির।
২. নির্বাচনের ঘোষণাপত্র ও ইশতেহারে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও ক্ষমতার ভারসাম্য থাকতে হবে। রাষ্ট্রের স্তম্ভগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৩. জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলে প্রথম দুই বছর বিএনপি মন্ত্রিত্ব কিংবা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারবে না। তাঁরা শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সংসদে থাকবে। দেশ পরিচালনা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য দলগুলো।
ড. কামাল হোসেন যে ১০ জন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নির্বাচনে আনার সুপারিশ করেছেন, তাঁরা হলেন, বর্তমানে কারাবন্দী ঐক্যফ্রন্ট নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এই ১০ জনকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিতে চান ড. কামাল।
বিএনপি তাৎক্ষণিক ভাবে ড. কামালের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাৎক্ষণিক ভাবে সমর্থন করে বলেন, কারা কোন আসনে নির্বাচন করবে, সে বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্যই ছিল ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। এ বিষয়েও বিএনপি মহাসচিব ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
তবে প্রথম দুই বছর যে ঐক্যফ্রন্ট দেশ পরিচালনা করবে এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেছেন, প্রথম দুই বছর ঐক্যফ্রন্ট দেশ পরিচালনা করবে, এ নিয়ে দলের কোনো আপত্তি নেই। তবে সরকারের প্রথম কাজ যেন হয়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। এ ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।
জানা গেছে, দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নির্বাচনের স্বার্থে তারা নিজেদের মধ্যে এই সমঝোতা গোপন রাখবেন। নির্বাচনে মূল ইস্যু হিসেবে তারা সামনে আনবেন দুর্নীতি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং জবাবদিহিতা। এই তিন বিষয়কে সামনে রেখেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন করবেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডআই/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।