নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১১ নভেম্বর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে নিশ্চিত হলো এবার আর ২০১৪ এর মতো নির্বাচন হবে না। সব দলের অংশগ্রহণের একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে এবার। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ই নির্বাচনে এসেছে। তবে দুই দলের কোনোটিই একক ভাবে নির্বাচন করছে না। জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করছে দুটি দলই। আর এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী কাদের নিয়ে নির্বাচনে যাচ্ছে তা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। আগে থেকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ছিল। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৪ দলের বাইরেও অন্যান্য দল নিয়ে জোটের অবয়ব আরও বড় করতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এই মধ্যে জামাত এবং ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের ছোট ছোট দলগুলো নিয়ে বড় একটি জোট করেছে বিএনপি। তাই আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের মতে, আওয়ামী লীগও ১৪ সহ অন্যান্য দলগুলো নিয়ে জোটের আকার যত বড় করতে পারবে ততই শক্তিশালী হবে অবস্থান। আর এ কারণেই নাজমুল হুদার তৃণমূল পার্টিসহ বাম অনেক দলকে সঙ্গে নিয়ে জোট বড় করার উদ্যোগ নিয়ে আগাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
জোট বড় হলে যেমন জোর বাড়ে তেমনি সমস্যারও আমদানি হয়। অনেক দল নিয়ে জোট করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপি উভয় দলই চাপে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছোট ছোট দলগুলো ভোটের বাজারে তাদের কদর বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। ছোট দলগুলোর উপলব্ধি হলো, আওয়ামী লীগ বিএনপি উভয়ই নির্বাচন করছে। আর উভয় দলেরই একার পক্ষে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা আছে। আর শঙ্কা কাটিয়ে নির্বাচনে জয়ের পাল্লা ভারি করতেই ছোট দলগুলোকে তাদের কাছে ভিড়াতেই হবে। সুযোগ বুঝে ছোট দলগুলোও তাদের রেট বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর এই রেট হলো নির্বাচনের আসন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু সর্বোচ্চ ৫ টি সিট দাবি করতেন। কিন্তু এখন রেট বাড়িয়ে ইনু সিট চাচ্ছেন অন্তত ১৫টি। এসব আসন নিয়ে তারা জিততে পারবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা আছে। আবার তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করবে নৌকা প্রতীক নিয়ে। এদিকে ১৪ দলের আরেক শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি কিছুদিন আগেও ৫ টি সিট দাবি করতো। এখন তা বাড়িয়ে ১৫ তে গেছে। জাসদের আরেক ভগ্নাংশ শরিফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন। তারা আওয়ামী লীগের কাছে কিছুদিন আগেও ৩ টি আসন দাবি করতো। এখন বলছে তাদের অন্তত ১০ টি আসন ছেড়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগের জোট করতে গিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে (জাপা) নিয়ে।
আওয়ামী লীগের মতে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি নির্বাচনে থাকে এবং নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক হয়, তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের জন্য তাদের জাতীয় পার্টিকে নেওয়ার বিকল্প নাই। জাপাও বিষয়টি ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। এতদিন ধরে জাতীয় পার্টির সঙ্গে ৪০-৫০ আসন নিয়েই দরকষাকষি হচ্ছিল। এখন জাতীয় পার্টি চাচ্ছে ৭০ আসন। এর কয়টিতে তারা জিততে পারবে তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। আবার, ৭০ আসন দিলেও যে জাপা বিশ্বাসঘাতকতা করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সব পেলেও জাপা যে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের জোটেই এর কোনো গ্যারান্টি নেই। কারণ জাতীয় পার্টির অতীত ইতিহাসই বলে তারা বাতাস বুঝে চলে। নির্বাচনের বাতাস যেদিকে যায়, সুযোগ বুঝে সেদিকেই যায় জাপা। তাই আসন ছাড়ের পরও জোটে জাপাকে নিয়ে বিপদ রয়েই যায়।
জোটের শরিক নিয়ে আওয়ামী লীগ যেমন বিপদে আছে, তেমনি বিএনপির বিপদ কম না। বিএনপির জোটের শরিকরা ভালোই বুঝতে পেরেছে, দলটিকে টিকে থাকতে হলে জোটের বিকল্প নাই। একা বিএনপি নির্বাচনে কিছুই করতে পারবে না। যে দল অন্য দলের নেতাকে ভাড়া করে নেতা বানানোর জন্য, সেই দল যতই জনপ্রিয় হোক একা নির্বাচন করার মতো সক্ষমতা নাই। বিএনপির বিপদ বুঝে তাদের জোটের শরিকরাও রেট বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি আলোচিত জোট ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক ও বড় দল বিএনপি। ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো মূলত এক ব্যক্তি নির্ভর দল। এক ব্যক্তি নির্ভর এসব দলের জাতীয় নির্বাচনে দু-তিনটির বেশি আসন পাওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কিন্তু এরপরও ঐক্যফ্রন্টের ‘ওয়ান ম্যানে’র দলগুলো একের পর এক দাবি করে চলেছে। আজই ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে একটি তালিকা ধরিয়ে দিয়েছেন। ১০ জনের তালিকার ব্যক্তিদের বিএনপির মার্কায় নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবি ড. কামালের। এছাড়াও গণফোরাম থেকে আরও ১০ জনের আসন দাবি করেছেন তিনি। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের আরেক দল নাগরিক ঐক্য। দলটির নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়া কোনো নেতাকর্মী বা সমর্থক কখনো দেখা যায়নি। মান্না ছাড়া নাগরিক ঐক্যের দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তিকে মানুষ চেনেও না জানেও না। অথচ মাহমুদুর রহমান মান্নাও আজ ১০ জনের আসন চেয়েছেন। জাসদের এক ভগ্নাংশ জেএসডি, যার নেতৃত্বে আ. স. ম. আবদুর রব। তিনি ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া রবকে ছাড়া দলটির কাউকেই কখনো দেখা যায় না। অথচ আবদুর রবও দিয়েছেন ১৫ জনের নামের তালিকা। বিএনপি আরেক ঘর ২০ দলীয় জোটের শরিকরাও কম যান না। মান ভাঙ্গিয়ে ঘরে ফেরানো এলডিপির কর্নেল অলি আহমেদ এখন ১৫ টি আসন দাবি করেছেন। অন্যান্য দলগুলো কোনোটিই পাঁচটি কম আসন চায়নি। আর প্রতীক ও দলহীন জামাতকে ১২ টি আসন ছেড়েই দিতে হবে বিএনপির।
জোটের আবদার পুরোপুরি পূরণ করতে গেলে দেখা যায় আওয়ামী লীগ বিএনপি নিজেদের আসন নিয়েই সংকটে পড়ে। জোটের সব শরিককে খুশি করলে আওয়ামী লীগের নিজের আসন থাকবে ৭০ টি। একই ভাবে বিএনপি সব শরিককে খুশি করলে আসন থাকবে মাত্র ৫০টি। এখন ভোটের রাজনীতির এই পরিবর্তিত বাজারে শরিকদের তুষ্ট রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ শরিকদের অসন্তুষ্ট করলে এর ফলাফল পড়বে সরাসরি ভোটের ওপর। তাই কেউ চায়না শরিকদের অসন্তুষ্ট করতে। আবার শরিকদের সন্তুষ্ট করতে গেলে নিজ দলেই থাকে না। এমন টানাটানির মধ্যে দলগুলো কীভাবে শরিকদের খুশি রাখবে সেটাই বড় বিষয়।
আবার আওয়ামী লীগ বিএনপি উভয় দলের মধ্যেও তো চাপ আছে। দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, যাঁরা এত বছর ধরে এলাকায় কাজ করছে, খরচ করছে তারাও তো মনোনয়ন চায়। তাদের বাদ দিয়ে জোটের শরিকদের আসন দিলেও তারাও নিশ্চয় ছেড়ে কথা বলবে না। দলগুলোর জোটের জটিল হিসেব নিকেশ কীভাবে মিটবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।