নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩০ পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনে আসার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরদিনই আজ সোমবার থেকে মনোনয়ন পত্র বিক্রি করতে শুরু করেছে বিএনপি। দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য তিনটি আসনে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের মাধ্যমে বিএনপির মনোনয়ন পত্র বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া কারাবন্দী, দুটি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত। আর বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ (ঘ) ধারাতে বলা হয়েছে কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাই প্রশ্ন উঠেছে, কোন পথে নির্বাচন করতে পারবেন খালেদা জিয়া?
গত ৩০ অক্টোবর জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ৫ বছরের দণ্ড আরও ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে হাইকোর্ট। সেদিন সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আবার এই রায়ের আগের দিনই গত ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড দিয়েছে নিম্ন আদালত। দুটি মামলায় কারাদণ্ড প্রাপ্ত হওয়ায় খালেদা জিয়ার একমাত্র আশ্রয়স্থল হলো আপিল বিভাগ। একমাত্র আপিল বিভাগ যদি তাঁর দণ্ড স্থগিত করে দেয় তাহলেই তিনি নির্বাচন করতে পারবেন।
সংবিধানের ৬৬(ঘ) ধারায় আছে, কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য বিবেচিত হবে যদি ‘তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনূন্য দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’ এই ধারা অনুযায়ী দণ্ড স্থগিত না হলে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো সম্ভাবনা নেই। উল্লেখ্য, কেবল একটি মামলায় দণ্ড স্থগিত হলেই হবে না, জিয়া এতিমখানা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার দুটি দণ্ডই স্থগিত হতে হবে।
কোনো মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার নিয়ম হচ্ছে, যে আদালত রায় দিয়েছে সে আদালত থেকে রায়ের সত্যায়িত কপি পাওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করা যাবে। কিন্তু এতিমখানা মামলা কিংবা চ্যারিটেবল মামলার রায়ের সত্যায়িত কপি এখনো পাওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় আপিল বিভাগে কীভাবে বিএনপির আইনজীবীরা আবেদন করবেন তা নিয়ে আদালত পাড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির আইনজীবীরা বলছেন, যদিও সাধারণ নিয়মানুযায়ী রায়ের কপি ছাড়া আপিল করা যায় না তবে এর ব্যতিক্রম আছে। খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেছেন, ‘এর ব্যতিক্রম আছে। আপিল করার বিষয়টাতে আমরা পরে যাব। আমরা আপিল ডিভিশনে গিয়ে বলব, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে চান। নির্বাচনের জন্য তাঁকে যোগ্য ঘোষণা করা হোক। আমরা আগে সাধারণভাবে মনোনয়ন পত্র জমা দেব। প্রিসাইডিং অফিসার যদি মনোনয়ন পত্র বাতিল করেন তাহলে আমরা মনোনয়ন পত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যাব। তখন আমরা কোর্টে বলবো, যেহেতু তিনি জিয়া এতিমখানা মামলায় হাইকোর্টে দণ্ডিত হয়েছেন তাঁর এখনো আপিল করার সুযোগ আছে কিন্তু রায়ের সার্টিফায়েড কপি না পাওয়ায় সেটি শিগগিরই সম্ভব হচ্ছে না। তাই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর দণ্ড স্থগিত করা হোক। আর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার নিম্ন আদালতে দণ্ড হয়েছে। সেক্ষেত্রেও আমরা বলবো এই মামলা হাইকোর্টে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর দণ্ড স্থগিত করা হোক। তবে রিটার্নিং অফিসার কী বলে সেটা দেখে আমরা দণ্ড স্থগিতের আবেদন করবো।’
আবার আইনজীবীদের আরেকটি পক্ষ বলছে, নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার আগেই আপিল বিভাগে যাওয়া যায় এবং বলা যায়, যেহেতু খালেদা জিয়া দলের মূল নেতা সেজন্য তাঁর দণ্ড স্থগিত করা হোক।
এই দুই আইনি প্রক্রিয়ার কোন পথে অগ্রসর হবে বিএনপি সে বিষয়ে দলটি শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে। বিএনপির নেতারাও বলছেন, আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।