নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ১৩ নভেম্বর, ২০১৮
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। জাতীয় পার্টি বিশেষ করে এরশাদের আচরণে মহাজোটের প্রধান শরীক আওয়ামী লীগ এখন খুবই বিরক্ত। বর্তমানে দেশের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও এরশাদের ব্যাপারে ইতিবাচকভাবে ভাবছে না। এমন পরিস্থিতিতে মহাবিপদে পড়েছেন এরশাদ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে নির্বাচন করবেন এমন আগাম ঘোষণা দেওয়ার পরও এখন আওয়ামী লীগের কাছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১০০ আসন দাবি করছে দলটি। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনোই জাতীয় পার্টিকে ৩০-৩৫ আসনের বেশি দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। বরং জাতীয় পার্টির এমন আবদারে বিস্মিত ও অসন্তুষ্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অবাস্তব ১০০ আসনের দাবি পূরণ করে জাতীয় পার্টিকে মহাজোটে রাখার সম্ভাবনা তাই নেই বললেই চলে।
মহাজোট ব্যাতীত এরশাদের সামনে আরেকটি বিকল্প হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যাওয়া। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের অধিকাংশ নেতা এরশাদকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। যে কোনো সময় এরশাদ বিশ্বাস ভঙ্গ করতে পারেন এবং সবাইকে বিপদে ফেলতে পারেন বলে তাঁরা মনে করেন। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এরশাদের সঙ্গে মিত্রতা করা বিপদজনক ব্যাপার। কারণ তিনি আদর্শহীন রাজনীতি করেন এবং কিছু পাওয়ার আশায় রাজনীতি করেন।’
বিএনপির আরেক নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদও বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত এরশাদকে আমাদের জোটে আনার কোনো চিন্তাভাবনা আমরা করছি না।’
দেশের রাজনীতির সর্ববৃহৎ দুইটি জোটের বৈরী অবস্থানের ফলে বর্তমানে জাতীয় পার্টির এ কূল ও কূল দুকূল যাওয়ার মতো একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এরশাদের বিপদ আরও বাড়িয়ে দিতে আজ মঙ্গলবার বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী এবং মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান ধানমন্ডি-৩ এর আওয়ামী লীগ অফিসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে বিকল্পধারার নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের ঐক্যের বিষয়ে আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগ যদি শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ঐক্য করেই ফেলে তাহলে আওয়ামী লীগের কাছে জাতীয় পার্টির গুরুত্ব আরও কমে যাবে। এছাড়া ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে এরশাদের বহু দিনের পুরনো ব্যক্তিগত দ্বৈরথ রয়েছে। তাই ড. কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্টের নেতা থাকা অবস্থায় ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির সমঝোতার বিষয়টি সুদূর পরাহত। তাই কৌশলগত কারণে নিজেদের জোটে এরশাদের দলকে না নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে, এরশাদকে মহাজোট থেকে আলাদা করাও আসলে বিএনপির একটি রাজনৈতিক কৌশল। কারণ, জাতীয় পার্টি সরে গেলে আওয়ামী লীগ খানিকটা দুর্বল হয়ে যাবে বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দের ধারণা। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই জাতীয় পার্টিকে ঐক্যফ্রন্টেও না নেওয়া এবং মহাজোটেও থাকতে না দেওয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।