নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ নভেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবসময় জাতীয় নেতাদেরকে বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করা হয়। জাতীয় নেতাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং নানা কটূক্তিমূলক বক্তব্যও প্রদান করেন অনেকেই। এর ফলে দেশের জনগণ এবং তরুণ প্রজন্ম জাতীয় নেতাদের বিষয়ে ভুল বার্তা পায়। তবে বর্তমান সময়ে রাজনীতিতে ইতিবাচক কিছু বিষয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা বিএনপিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বীকৃতি, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন এবং ৩ রা নভেম্বরকে জেল হত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দিয়েছে।
জানা গেছে যে, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম এবং কাদের সিদ্দিকির নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট্রের অন্য নেতাদের কাছে বলেছেন যে, ‘নির্বাচনের আগে দেশের রাজনীতিটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। বাংলাদেশের রাজনীতি পরিষ্কার করতে গেলে, কতগুলো অমীমাংসিত বিষয় মীমাংসা করা প্রয়োজন।’ কাদের সিদ্দিকি বলেন, ‘বিএনপি যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে, এটাই বিএনপির জন্য অনেক পরিবর্তিত একটি অবস্থান। বিএনপি যদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে, ১৫ আগস্টকে শোক দিবসের স্বীকৃতি দেয়, ৩ নভেম্বরকে জেল হত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তাহলে বিএনপিই লাভবান হবে। বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান মানুষের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হবে এবং বিএনপি একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশের জনগণের কাছে সমাদৃত হবে।’ কাদের সিদ্দিকি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলেছেন যে, ‘বিএনপিকে প্রমাণ করতে হবে যে, ১৫ আগস্টের তাঁরা কোনো বেনিফিসিয়ারি নয়। ১৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে তাঁরা জড়িত না এবং ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা দিতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারের মুল বক্তব্য কি হবে এসব নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কাদের সিদ্দিকি বীরউত্তম এই বক্তব্য রাখেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন কাদের সিদ্দিকির এই বক্তব্যকে সমর্থন জানান। কাদের সিদ্দিকি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারণা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এবং জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের মধ্যেও শুরু হতে পারে। জাতীয় নেতাদের সম্মান করার মধ্য কোনো ক্ষতি নাই।’
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তাঁরা জানান, এই প্রস্তাবটা কাদের সিদ্দিকির কাছ থেকে এসেছে সত্য। কিন্তু এই বিষয়টা একটা নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত। বিএনপিতে এই ধরনের সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ক্ষমতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির নাই, জাতীয় নির্বাহী কমিটি ছাড়া এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কারও নাই। নির্বাচনের আগে এই সংক্ষিপ্ত সময়ে এই বিষয়ে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে মনে হয় না। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ দেওয়া হয়েছে যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বীকৃতি দেওয়া, ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন করা এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী থেকে শুরু করে জিয়াউর রহমান পর্যন্ত সকল জাতীয় নেতাকে সম্মান দেখানোর সংস্কৃতি চালু করা হয়। এই চাপ সামলে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তাঁদের রাজনীতিকে কীভাবে টিকিয়ে রাখবে সেটাই এখন একটা বড় প্রশ্ন।
বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। শুধু দেশের মানুষই নয় বিদেশিরাও তাকে বাঙালি জাতির পিতা হিসেবে জানে এবং মানে। কিন্তু বিএনপি কখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করে না। শুধু তাই নয় ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে নিহত হন। এই দিন সারাদেশে শোকের আবহ থাকলেও, এই দিনকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে না বিএনপি। বাঙালি জাতির শোকাবহ ১৫ আগস্টে তাঁরা কেক কেটে বিতর্কিত জন্মদিন পালন করেছে বছরের পর বছর। বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নিতেও তাঁদের অনীহা ও লজ্জাবোধ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের জাতীয় নেতাদের অসম্মান করার মধ্যে যেমন কোনো বীরত্ব নেই, তেমনি জাতীয় নেতাদেরকে সম্মান দিলেও কারও কোনো ক্ষতি বা অসম্মান হয় না। বরং তাঁদেরকে সম্মান করার মধ্যে দিয়ে দেশ ও জাতিকে সম্মানিত করা হয়। বাংলাদেশের সকল জাতীয় নেতাকে বিতর্কের উর্ধ্বে রেখে তাদেরকে সম্মান করার সংস্কৃতি যদি দেশের রাজনীতিতে চালু হয়, তাহলে সেটি হবে একটি দৃষ্টান্ত।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।