নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৪ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮
আজ ১৫ নভেম্বর ড. কামাল হোসেন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, ৩৭ বছর আগে আজকের এই দিনে তৃতীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি ধানের শীষ প্রতীকের কাছেই পরাজিত হয়েছিলেন। প্রহসনের সেই নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিতের পর ড. কামাল বলেছিলেন, ধানের শীষ প্রতীক হলো প্রতারণা, প্রবঞ্চণার প্রতীক। ধানের শীষ প্রতীক হলো জনগণের ভোটাধিকার হরণের প্রতীক।
বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম একটি কলঙ্কিত নির্বাচন হলো ১৯৮১ এর ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর শুধুমাত্র বিএনপির প্রার্থী বিচারপতি আব্দুর সাত্তারকে প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্য সংবিধান সংশোধন করে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে যোগ্য করা হয়। সংবিধান সংশোধনের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন ড. কামাল। ওই নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুর সাত্তারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ড. কামাল হোসেন। ভোট জালিয়াতি, ভোট ডাকাতি, প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফলে আব্দুর সাত্তার পান ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। তিনি ভোট পান ১ কোটি ৪২ লাখ, ৩ হাজার ৯৫৮ টি। আর ড. কামাল হোসেনকে দেখানো হয় ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। মাত্র ৫৬ লাখ ৩৬ হাজার ১১৩ ভোট দেখানো হয় ড. কামালের ব্যালটে। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ ও এম. এ. জি ওসমানী। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন এ. এ. জলিল এবং ন্যাপ (এম.) ও সিপিবির প্রার্থী ছিলেন মোজাফ্ফর আহমেদ। এছাড়া আরও ৩৩ জন প্রার্থী হয়েছিলেন ওই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। তবে কারও ভোট ২ থেকে ৩ লাখের বেশি হয়নি। নির্বাচনের ভোট গণনার কিছুক্ষণের মধ্যে এটি যে এক প্রহসনের নির্বাচন তা স্পষ্ট হয়ে যায়।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই হোটেল পূর্বাণীতে ড. কামাল হোসেন একটি সংবাদ সম্মেলন করেন । সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ধানের শীষ প্রতীক বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছে। ধানের শীষ প্রতীক হলো প্রতারণা, প্রবঞ্চনার প্রতীক। ধানের শীষ প্রতীক হলো জনগণের ভোটাধিকার হরণের প্রতীক। এই প্রতীকের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন ইতিহাসে কলঙ্ক রচনা করা হয়েছে।
ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস ৩৭ বছর পর আজ সেই একই দিনে সেই ড. কামাল হোসেন সেই প্রতীককেই আঁকড়ে ধরলেন, তাঁর ডুবন্ত রাজনীতির তরী বাঁচানোর জন্য।
১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিস্তারিত তথ্য দেখুন এই ঠিকানায়: https://bit.ly/2PuMgzV
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।